সিলেটের এয়ারপোর্ট থানার সিদাইরগুল, মাখরখলা, কুশাল, কালাগুল, ভারারহাট ও ফাইকপাড়া এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে সন্ত্রাসী ও মাদকচক্রের দৌরাত্ম্য বেড়েই চলেছে। এসব ঘটনায় এলাকাবাসীর মধ্যে চরম উৎকণ্ঠা তৈরি হয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে দ্রুত প্রশাসনিক হস্তক্ষেপের দাবি জানিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন স্থানীয়রা।
রোববার (০৭ ডিসেম্বর) জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার বরাবর এ স্মারকলিপি দেন ওই ছয় গ্রামের কয়েকজন বাসিন্দা। স্মারকলিপি গ্রহণ করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) পদ্মাসন সিংহ।
স্মারকলিপিতে অভিযোগ করা হয়, এলাকায় একটি সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসী ও মাদক ব্যবসায়ী চক্র দীর্ঘদিন ধরে সক্রিয়। স্থানীয় কিছু প্রভাবশালীর ছত্রচ্ছায়ায় তারা এলাকায় ভয় ও আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি করেছে। এতে সাধারণ মানুষ নানাভাবে হয়রানির শিকার হচ্ছেন।
অভিযোগে বলা হয়, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ফেদারগাঁও এলাকার কুখ্যাত কয়েকজন মাদক ব্যবসায়ী তিন বছর আগে জনরোষের মুখে এলাকা ছাড়তে বাধ্য হন। পরে স্থানীয় এক ব্যক্তি ছাদির মিয়ার সহায়তায় তারা সিদাইরগুল এলাকায় আশ্রয় নেন এবং এখানে নতুন করে মাদক ব্যবসা ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড শুরু করেন।
এই চক্রের সক্রিয় সদস্য হিসেবে কাউছার, কয়েছ, ইলিয়াছ ও আল আমিন নামের চারজনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট ও এয়ারপোর্ট থানায় মাদক, চাঁদাবাজি ও অপহরণসহ একাধিক মামলা রয়েছে। তবু তারা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন এবং ভয়ভীতি দেখিয়ে স্থানীয়দের নাজেহাল করছেন বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, সর্বশেষ ৩ অক্টোবর রাতে স্থানীয়রা ভারতীয় মদ ও ৪০ পিস ইয়াবাসহ আল আমিন ও মনছুর নামের দুজনকে আটক করে এয়ারপোর্ট থানায় সোপর্দ করেন। কিন্তু স্থানীয় অসৎ পুলিশের সহযোগিতায় তারা সেদিন রাতেই ছাড়া পান। এতে এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ ও হতাশা আরও বাড়ে।
স্মারকলিপি দিতে উপস্থিত ছিলেন মোহাম্মদ দুদূ মিয়া, মোহাম্মদ শামসুল ইসলাম ও মোহাম্মদ নিজাম মিয়া। তারা বলেন, চক্রটির অপতৎপরতার কারণে ছয় এলাকার মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নিয়ে এলাকায় শান্তি শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার দাবি জানান তারা। একই সঙ্গে মাদকচক্রের পৃষ্ঠপোষকদের শনাক্ত করে কঠোর ব্যবস্থার আহ্বান জানান।
এলাকাবাসীর আশা, প্রশাসনের কার্যকর পদক্ষেপে সিদাইরগুলসহ আশপাশের এলাকায় আবারও স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরে আসবে এবং সন্ত্রাস–মাদকচক্রের দৌরাত্ম্য বন্ধ হবে।

নিজস্ব প্রতিবেদক 



















