আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ইসলামি দলগুলোর মধ্যে সম্ভাব্য আসন সমঝোতা নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে বাড়ছে আলোচনা। তবে এ বিষয়ে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণা দেয়নি জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ। দলীয় সূত্র বলছে, বৃহত্তর ইসলামি ঐক্য গড়ে তুলতে ৩০০ আসনের একটি বড় অংশ শরিক ও সমমনা দলগুলোর জন্য ছাড় দেওয়ার নীতিগত প্রস্তুতি নিচ্ছে দলটি।
এ প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে সিলেট বিভাগের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ আসন নিয়ে চলছে অভ্যন্তরীণ জরিপ, কৌশলগত বিশ্লেষণ ও শরিক দলের সঙ্গে ধারাবাহিক আলোচনা। বিভাগের মোট ১৯টি আসনের মধ্যে কমপক্ষে ছয়টি আসন ছাড়ার বিষয়ে জোর গুঞ্জন রয়েছে।
যেসব ছয়টি আসন নিয়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু:
সিলেট-২ (বিশ্বনাথ-বালাগঞ্জ-ওসমানীনগর)
সিলেট-৫ (জকিগঞ্জ-কানাইঘাট)
সুনামগঞ্জ-৩ (শান্তিগঞ্জ-জগন্নাথপুর)
মৌলভীবাজার-৪ (শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ)
হবিগঞ্জ-২ (বানিয়াচং-আজমিরিগঞ্জ)
হবিগঞ্জ-৩ (সদর-লাখাই-শায়েস্তাগঞ্জ)
এ ছাড়া গুঞ্জনের মধ্যেই হবিগঞ্জ-৪ (চুনারুঘাট-মাধবপুর) আসনে দলীয় প্রার্থী পরিবর্তনও করেছে জামায়াত।
সমঝোতা চূড়ান্তের পথে সাত ইসলামি দল
দলীয় সূত্র জানায়, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, নেজামে ইসলাম পার্টি, জাগপা ও বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টিকে নিয়ে সমঝোতার আলোচনা শেষ পর্যায়ে রয়েছে। আলোচনায় নতুন দল যুক্ত হওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে বলে সূত্র জানিয়েছে।
জামায়াত জানিয়েছে, ৭ বা ৮ ডিসেম্বরের মধ্যেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ঘোষণা করতে চায় তারা। কোনো কারণে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত না হলে ১০ ডিসেম্বরের মধ্যে জানিয়ে দেবে কোন আসন কার কাছে যাবে এবং কে মনোনয়ন পাবে।
আসনভিত্তিক মাঠ পরিস্থিতি
সিলেট বিভাগের প্রতিটি আলোচিত আসনে ইতোমধ্যে জামায়াত ও সমমনা দলের প্রার্থীরা সক্রিয়ভাবে প্রচার চালাচ্ছেন। সিলেট-২, সিলেট-৫, সুনামগঞ্জ-৩, মৌলভীবাজার-৪, হবিগঞ্জ-২ ও হবিগঞ্জ-৩ প্রতিটি আসনেই একাধিক ইসলামি দলের প্রার্থীর অবস্থান চোখে পড়ার মতো। কোথায় কার জনপ্রিয়তা বা জয়ের সম্ভাবনা বেশি সেটিই হবে আসন সমঝোতার মূল নির্ধারক।
এদিকে হবিগঞ্জ-৪ আসনে সমঝোতার গুঞ্জনের মধ্যেই জামায়াতের প্রার্থী কাজী মাওলানা মুখলিছুর রহমান প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে সাংবাদিক অলিউল্লাহ নোমানকে সমর্থন জানিয়েছেন।
জামায়াতের অবস্থান
জামায়াতের কেন্দ্রীয় ও মহানগর নেতারা জানিয়েছেন, সমমনা দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে প্রার্থী ও আসন সমন্বয় হবে। মাঠপর্যায়ে যাদের গ্রহণযোগ্যতা ও জয়ের সম্ভাবনা বেশি, সেই প্রার্থীর পক্ষেই দল সিদ্ধান্ত নেবে।
জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের বলেন, সাতটি ইসলামি দলের সঙ্গে সমঝোতা শেষ পর্যায়ে। আরও দল যুক্ত হতে পারে। ৭ বা ৮ ডিসেম্বরের মধ্যেই সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হবে; প্রয়োজনে ১০ ডিসেম্বরের মধ্যে চূড়ান্ত ঘোষণা আসবে।

নিজস্ব প্রতিবেদক 


















