নিউ ইয়র্কে প্রবাসী সিলেটবাসীর এক র্যালি থেকে সিলেটের ‘উন্নয়নে বৈষম্যের’ অভিযোগ এনে আন্দোলনের হুমকি দেওয়া হয়েছে।
বুধবার বিকেলে জ্যাকসন হাইটসের ডাইভার্সিটি প্লাজায় ‘বিরক্ত সিলেটবাসী’ ও ‘জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশন’-এর ব্যানারে এ র্যালি অনুষ্ঠিত হয়।
র্যালিতে বক্তারা অভিযোগ করেন, “স্বাধীনতার পাঁচ দশক পরও সিলেট অঞ্চলের উন্নয়ন কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে পৌঁছেনি। দেশের বৈদেশিক মুদ্রার বড় অংশ প্রবাসী সিলেটিদের পাঠানো হলেও সিলেটের রাস্তাঘাট, বিমান, রেলপথ, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যখাতে অবহেলা রয়ে গেছে।”
সাংবাদিক ইব্রাহিম চৌধুরী খোকন বলেন, “এটা প্রতীকী সমাবেশ। আমরা সিলেটের উন্নয়ন নিয়ে রাজনীতি বা প্রশাসনিক টানাপোড়েন দেখতে চাই না। আজ সিলেটবাসী বিরক্ত। এই বিরক্তি অব্যাহত থাকলে তা বিক্ষোভে, আর বিক্ষোভ বিচ্ছিন্নতার দাবিতে রূপ নিতে পারে।”
জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বদরুল খান বলেন, “সিলেটের উন্নয়নে বৈষম্য বন্ধে সরকারের কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। আমরা চাই না সিলেট অন্য জেলার তুলনায় বঞ্চিত থাকুক।”
র্যালি পরিচালনা করেন শাহ মুজিবুর রহমান জকন। উপস্থিত ছিলেন সিলেট পৌরসভার প্রথম নির্বাচিত মেয়র ও মুক্তিযোদ্ধা বাবরুল হোসেন বাবুল। তার উপস্থিতি স্মরণ করে বক্তারা জানান, সিলেটের উন্নয়নের দাবিতে তিনি স্বাধীনতার পর থেকেই আন্দোলন করে আসছেন।
র্যালিতে বক্তারা এমএজি ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরকে ‘পূর্ণাঙ্গ আন্তর্জাতিক মানে’ উন্নীত করা, ঢাকা-সিলেট মহাসড়ককে ছয় লেনে উন্নয়ন, রেলপথ সংস্কার, সিলেট-কক্সবাজার সরাসরি ট্রেন চালু, এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আধুনিকায়ন এবং সিলেটের নদী-খাল ও পর্যটন এলাকাগুলো রক্ষার দাবি জানান।
অন্যান্য দাবির মধ্যে ছিল সরকারি অফিসে ঘুষ ও প্রবাসীদের হয়রানি বন্ধ, স্থানীয়ভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদনে অগ্রাধিকার, প্রবাসীদের সম্পত্তি রক্ষায় আইনগত নিশ্চয়তা এবং প্রতিটি জেলায় প্রবাসী বিষয়ক মনিটরিং সেল গঠন।
র্যালি শেষে ‘বিরক্ত সিলেটবাসী নিউ ইয়র্ক’ বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বরাবর লেখা একটি স্মারকলিপি পড়ে শোনানো হয়।
এতে বলা হয়, “দীর্ঘদিন ধরে সিলেট অবহেলিত। উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন পেলেও তহবিল ছাড় হয় না, অগ্রগতি থাকে কাগজে-কলমে।” সিলেট উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে কার্যকর করে প্রকল্প বাস্তবায়নের দাবি জানানো হয় স্মারকলিপিতে।
র্যালিতে আরও বক্তব্য দেন শেকিল চৌধুরী, ফকু চৌধুরী, আব্দুস শহীদ, মিসবাহ আহমেদ, শেখ আতিক, শেলি জামান খান, শাহানা বেগম, ভায়লা সেলিনা, নূরে আলম জিকু, যোসেফ চৌধুরী, শেখ মো. ফজলুল হক, শাহাদৎ মজুমদার, বেদারুল ইসলাম বাবলা, খালিকুর রহমান, গরহর কিম চৌধুরী, মো. জাবেদউদ্দিন, মাহবুবুর রহমান, মোজাহেদুল ইসলাম, হুমায়ূন কবীর সোহেল, লোকমান হোসেন, শামীম আহমেদ, রোকন হাকিম, আজিমুর রহমান বোরহান, রানা ফেরদৌস চৌধুরী, মুক্তিযোদ্ধা এম চৌধুরী রানা এবং মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মুকিত চৌধুরী।

প্রতিদিনের সিলেট ডেস্ক 



















