, শনিবার, ১১ অক্টোবর ২০২৫, ২৬ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে জমি হস্তান্তর সিলেটে শিশু ধর্ষণের অভিযোগে যুবক কারাগারে গুমের ডকুমেন্টারির শ্যুটিংয়ের জন্যে সিলেটে বিএনপির সালাউদ্দিন বিশ্বনাথ উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হলেন ডাক্তার জহির সিলেট জেলা যুবদল নেতাকে দেখতে হাসপাতালে এম এ মালিক জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি ছাড়া ফ্যাসিবাদ নির্মূল হবে না: সিলেটে খেলাফত মজলিসের গণমিছিল বিশ্বনাথে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় নেতাকর্মীদের ধৈর্য্য ধরার আহ্বান লুনার রক্তের ঋণ পরিশোধের জন্য জাতি পরবর্তী সরকারের জন্য অপেক্ষা করবেনা : এডভোকেট জুবায়ের সিলেটে কিশোর গ্যাং লিডার বুলেট মামুন ২ সহযোগীসহ গ্রেফতার যুদ্ধবিরতি কার্যকর : থেমেছে ইসরাইলি হামলা, দলে দলে ঘরে ফিরছেন গাজার মানুষ
অর্থায়ন করতে পারে নেদারল্যান্ডস

প্ল্যানিং চলছে : সিলেটের পর্যটন শিল্পে উন্মোচিত হবে নতুন সম্ভাবনার দ্বার

সিলেটের পর্যটন শিল্পকে গতানুগতিক ধারা থেকে বের করে আরও উন্নত ও পর্যটনমুখী করতে মাস্টারপ্ল্যান হাতে নিয়েছে সরকার। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষার পাশাপাশি, স্থানীয়দের কর্মসংস্থান ও পর্যটন স্পটগুলোকে পর্যটকবান্ধব করাই এ মাস্টারপ্ল্যানের মূল লক্ষ্য। যার অর্থায়ন করতে পারে নেদারল্যান্ডস। এমনটি হলে সিলেটের পর্যটন শিল্পে উন্মোচিত হবে নতুন সম্ভাবনার দ্বার।

প্রকৃতির অপার সৌন্দর্যে ঘেরা সিলেটের আনাচেকানাচে ছড়িয়ে আছে অসংখ্য পর্যটন স্পট। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রতিদিনই হাজারও ভ্রমণপিপাসু ছুটে আসেন এসব অনিন্দ্য সুন্দর স্থানগুলো ঘুরে দেখতে। তবে সাদাপাথর কাণ্ডের পর পর্যটন খাতের নিরাপত্তা ও টেকসই উন্নয়ন নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন ওঠে।

দীর্ঘদিন ধরেই সিলেটের পর্যটন স্পটগুলোকে ইকো ফ্রেন্ডলি করার দাবি জানিয়ে আসছিলেন সিলেটবাসী। অবশেষে সে দাবি পূরণের পথে বড় পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। জেলা প্রশাসন জানায়- বিছানাকান্দি, সাদাপাথর, জাফলং, উৎমাছড়া, লালাখাল, রাতাগুলসহ জেলার ছয়টি পর্যটন স্পট ও এর পরিবেশ রক্ষায় মাস্টারপ্ল্যান করা হয়েছে।

সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার আলম বলেন, ‘বিছানাকান্দি, রাতারগুলসহ এখানে সিলেটে আমাদের যে পর্যটন স্পটগুলো আছে, এ স্পটগুলোকে কেমনে আরও সাসটেইনএবল ওয়েতে আরও বড় ধরনের ইকো ট্যুরিজম স্পট করা যায় সেজন্য প্ল্যানিং চলছে। আমরা আশা করছি নেদারল্যান্ডস সরকার ফান্ডিং করবে।’

সরকারের এ উদ্যোগে আশাবাদী সিলেটের পর্যটন ব্যবসায়ী ও সংশ্লিষ্টরা। তবে প্রকল্প বাস্তবায়নে দীর্ঘসূত্রিতা যেন না হয়, সে দিকেও নজর দেয়ার পরামর্শ তাদের।

সিলেট হোটেল অ্যান্ড গেস্ট হাউস ওনার্স গ্রুপের সাবেক সভাপতি সুমাত নূরী চৌধুরী জুয়েল বলেন, ‘সাদাপাথর নিয়ে একটা মাস্টারপ্ল্যান ছিল। টার কিছু কাজের উদ্বোধনও হয়েছিল। কিন্তু এটার কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি আমরা এখনও দেখিনি। এখন আমরা শুনলাম আরও একটা মাস্টারপ্ল্যান আসছে ছয়টি স্পট নিয়ে। যেটাই করা হোক, প্রোপার প্ল্যান করে দ্রুতসময়ের মধ্যে এগুলো করা প্রয়োজন।’

এরমধ্যেই এ মাস্টারপ্ল্যানের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের অংশ হিসেবে সাদাপাথর এলাকা পরিদর্শন করেছে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা এবং পরিবেশ ও স্থাপত্য বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে গঠিত ১৩ সদস্যের কমিটি। এসময় পর্যটন খাতকে আরও আধুনিক ও পরিবেশবান্ধব করার নানা পরিকল্পনার কথা জানান কমিটির সদস্যরা।

পরিবেশ বিশেষজ্ঞ মো. আলী রেজা খান বলেন, ‘ছুটির দিনে কতজন টুরিস্ট আসবেন তার জন্য বড় একটা গেট থাকতে হবে। একটামাত্র গেট দিয়ে লোকজন আসবে, বড় গেট। গেটে লোকজন থাকবে। যদি টিকিটের ব্যবস্থা সরকার করতে চায়, দুই পয়সা আর্ন করতে চায়, কোনো সমস্যা নাই। কিন্তু সেটা বলে দিতে হবে। যেখানে এ ব্যারিয়ারটা থাকবে সেখান থেকে প্লাস্টিক নিয়ে কেউ ভেতরে ঢুকতে পারবে না।’

স্থপতি ইন্সটিটিউটের সভাপতি অধ্যাপক ড. আবু সাঈদ এম আহমেদ বলেন, ‘সিলেটের জন্য বহুদিনের একটা স্বপ্ন ছিল, শুধু একটা না, পুরো এলাকা নিয়ে একটা মাস্টারপ্ল্যান করা, প্রতিটা খালে যেন টুরিস্টরা যেতে পারে।’

তবে পরিবেশকে অগ্রাধিকার দিয়েই পর্যটন খাতের উন্নয়ন করা হবে বলে আশ্বাস সংশ্লিষ্টদের। একইসঙ্গে প্রকল্প বাস্তবায়নে নেদারল্যান্ডস সরকারের সম্ভাব্য অর্থায়নের কথাও উল্লেখ করেন মাস্টারপ্ল্যান সমন্বয় কমিটির সভাপতি।

মাস্টারপ্ল্যান সমন্বয় কমিটির সভাপতি ড. বজলুর রশিদ বলেন, ‘সিলেট মাদের পর্যটন হাব। সেটা কীভাবে সবার জন্য সহজগম্য করতে পারি এবং পর্যটনের যেসব সুবিধাগুলো প্রয়োজন সেগুলো আমারা খানে স্থাপন করতে পারি।’

পর্যটন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সিলেটের ছয়টি পর্যটন স্পটকে কেন্দ্র করে সরকারের যে মাস্টারপ্ল্যান- তা বাস্তবায়িত হলে বদলে যাবে পুরো সিলেট অঞ্চলের অর্থনীতি ও পর্যটনের বর্তমান চিত্র।

জনপ্রিয়

সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে জমি হস্তান্তর

অর্থায়ন করতে পারে নেদারল্যান্ডস

প্ল্যানিং চলছে : সিলেটের পর্যটন শিল্পে উন্মোচিত হবে নতুন সম্ভাবনার দ্বার

প্রকাশের সময় : ১১:৪০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৮ অক্টোবর ২০২৫

সিলেটের পর্যটন শিল্পকে গতানুগতিক ধারা থেকে বের করে আরও উন্নত ও পর্যটনমুখী করতে মাস্টারপ্ল্যান হাতে নিয়েছে সরকার। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষার পাশাপাশি, স্থানীয়দের কর্মসংস্থান ও পর্যটন স্পটগুলোকে পর্যটকবান্ধব করাই এ মাস্টারপ্ল্যানের মূল লক্ষ্য। যার অর্থায়ন করতে পারে নেদারল্যান্ডস। এমনটি হলে সিলেটের পর্যটন শিল্পে উন্মোচিত হবে নতুন সম্ভাবনার দ্বার।

প্রকৃতির অপার সৌন্দর্যে ঘেরা সিলেটের আনাচেকানাচে ছড়িয়ে আছে অসংখ্য পর্যটন স্পট। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রতিদিনই হাজারও ভ্রমণপিপাসু ছুটে আসেন এসব অনিন্দ্য সুন্দর স্থানগুলো ঘুরে দেখতে। তবে সাদাপাথর কাণ্ডের পর পর্যটন খাতের নিরাপত্তা ও টেকসই উন্নয়ন নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন ওঠে।

দীর্ঘদিন ধরেই সিলেটের পর্যটন স্পটগুলোকে ইকো ফ্রেন্ডলি করার দাবি জানিয়ে আসছিলেন সিলেটবাসী। অবশেষে সে দাবি পূরণের পথে বড় পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। জেলা প্রশাসন জানায়- বিছানাকান্দি, সাদাপাথর, জাফলং, উৎমাছড়া, লালাখাল, রাতাগুলসহ জেলার ছয়টি পর্যটন স্পট ও এর পরিবেশ রক্ষায় মাস্টারপ্ল্যান করা হয়েছে।

সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার আলম বলেন, ‘বিছানাকান্দি, রাতারগুলসহ এখানে সিলেটে আমাদের যে পর্যটন স্পটগুলো আছে, এ স্পটগুলোকে কেমনে আরও সাসটেইনএবল ওয়েতে আরও বড় ধরনের ইকো ট্যুরিজম স্পট করা যায় সেজন্য প্ল্যানিং চলছে। আমরা আশা করছি নেদারল্যান্ডস সরকার ফান্ডিং করবে।’

সরকারের এ উদ্যোগে আশাবাদী সিলেটের পর্যটন ব্যবসায়ী ও সংশ্লিষ্টরা। তবে প্রকল্প বাস্তবায়নে দীর্ঘসূত্রিতা যেন না হয়, সে দিকেও নজর দেয়ার পরামর্শ তাদের।

সিলেট হোটেল অ্যান্ড গেস্ট হাউস ওনার্স গ্রুপের সাবেক সভাপতি সুমাত নূরী চৌধুরী জুয়েল বলেন, ‘সাদাপাথর নিয়ে একটা মাস্টারপ্ল্যান ছিল। টার কিছু কাজের উদ্বোধনও হয়েছিল। কিন্তু এটার কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি আমরা এখনও দেখিনি। এখন আমরা শুনলাম আরও একটা মাস্টারপ্ল্যান আসছে ছয়টি স্পট নিয়ে। যেটাই করা হোক, প্রোপার প্ল্যান করে দ্রুতসময়ের মধ্যে এগুলো করা প্রয়োজন।’

এরমধ্যেই এ মাস্টারপ্ল্যানের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের অংশ হিসেবে সাদাপাথর এলাকা পরিদর্শন করেছে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা এবং পরিবেশ ও স্থাপত্য বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে গঠিত ১৩ সদস্যের কমিটি। এসময় পর্যটন খাতকে আরও আধুনিক ও পরিবেশবান্ধব করার নানা পরিকল্পনার কথা জানান কমিটির সদস্যরা।

পরিবেশ বিশেষজ্ঞ মো. আলী রেজা খান বলেন, ‘ছুটির দিনে কতজন টুরিস্ট আসবেন তার জন্য বড় একটা গেট থাকতে হবে। একটামাত্র গেট দিয়ে লোকজন আসবে, বড় গেট। গেটে লোকজন থাকবে। যদি টিকিটের ব্যবস্থা সরকার করতে চায়, দুই পয়সা আর্ন করতে চায়, কোনো সমস্যা নাই। কিন্তু সেটা বলে দিতে হবে। যেখানে এ ব্যারিয়ারটা থাকবে সেখান থেকে প্লাস্টিক নিয়ে কেউ ভেতরে ঢুকতে পারবে না।’

স্থপতি ইন্সটিটিউটের সভাপতি অধ্যাপক ড. আবু সাঈদ এম আহমেদ বলেন, ‘সিলেটের জন্য বহুদিনের একটা স্বপ্ন ছিল, শুধু একটা না, পুরো এলাকা নিয়ে একটা মাস্টারপ্ল্যান করা, প্রতিটা খালে যেন টুরিস্টরা যেতে পারে।’

তবে পরিবেশকে অগ্রাধিকার দিয়েই পর্যটন খাতের উন্নয়ন করা হবে বলে আশ্বাস সংশ্লিষ্টদের। একইসঙ্গে প্রকল্প বাস্তবায়নে নেদারল্যান্ডস সরকারের সম্ভাব্য অর্থায়নের কথাও উল্লেখ করেন মাস্টারপ্ল্যান সমন্বয় কমিটির সভাপতি।

মাস্টারপ্ল্যান সমন্বয় কমিটির সভাপতি ড. বজলুর রশিদ বলেন, ‘সিলেট মাদের পর্যটন হাব। সেটা কীভাবে সবার জন্য সহজগম্য করতে পারি এবং পর্যটনের যেসব সুবিধাগুলো প্রয়োজন সেগুলো আমারা খানে স্থাপন করতে পারি।’

পর্যটন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সিলেটের ছয়টি পর্যটন স্পটকে কেন্দ্র করে সরকারের যে মাস্টারপ্ল্যান- তা বাস্তবায়িত হলে বদলে যাবে পুরো সিলেট অঞ্চলের অর্থনীতি ও পর্যটনের বর্তমান চিত্র।