, রবিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৫, ২৬ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
আজ রোববার সিলেটে একঘন্টার জন্য বন্ধ থাকবে দোকানপাট, চলবে না যানবাহন উইমেন ফর উইমেন রাইটস’র মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত বিএনপি ক্ষমতায় গেলে কর্মহীন মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে : এডভোকেট জেবুন নাহার সেলিম সিলেটে সরকার নির্ধারিত মূল্যে ঔষধ বিক্রির দাবিতে সভা অনুষ্ঠিত আট দফা দাবিতে ১ নভেম্বর থেকে সিলেটে অনির্দিষ্টকালের জন্য রেল অবরোধ সিলেটে অধ্যাপক ফজলুর রহমানের ‘ধর্মনিরপেক্ষ মুসলমান’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন সিলেটে পুলিশের দক্ষতা ও সক্ষমতা বৃদ্ধি সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ কোর্সের উদ্বোধন বিশেষ কল্যাণ সভায় হাইওয়ে পুলিশের সেবার মানোন্নয়ন প্রত্যয়ে অঙ্গীকার সিলেটে গণমাধ্যম প্রতিনিধিদের নিয়ে টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন বিষয়ক পরামর্শ কর্মশালা ১৭ বছর বয়সে বিমানের পাইলট সিলেটের আহনাফ

ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক প্রকল্প : পাঁচ বছরে অগ্রগতি মাত্র ১৫ শতাংশ

১৬ হাজার ৯১৯ কোটি টাকা খরচ ধরা হয়েছে ঢাকা-সিলেট করিডর প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে ২০২১ সালের জানুয়ারি। শেষ হওয়ার কথা আগামী বছরের ডিসেম্বরে। কিন্তু পাঁচ বছরে খরচ হয়েছে মাত্র ৩ হাজার ৩৮০ কোটি টাকা। অর্থাৎ আর্থিক অগ্রগতি হয়েছে প্রায় ২০ শতাংশ। বাস্তব কাজের অগ্রগতি আরও কম হয়েছে, মাত্র ১৫ শতাংশ।

এত গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পটির অগ্রগতি খুবই কম হওয়ায় এর কারণ জানতে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগে (আইএমইডি) সম্প্রতি প্রকল্প পরিচালককে ডাকা হয়। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন সড়ক এবং জনপথ অধিদপ্তর। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় এবং পরিকল্পনা কমিশন সূত্র জানায়, টেকসই সড়ক নেটওয়ার্ক গড়ে তুলতে দেশব্যাপী জাতীয় মহাসড়কের উভয় পাশে পৃথক সার্ভিস লেনসহ বিদ্যমান সড়কগুলো চার লেনে উন্নীত করার মহাপরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। এর অংশ হিসেবে এডিবির আর্থিক ও কারিগরি সহায়তায় দেশব্যাপী ১ হাজার ৭৫২ কিলোমিটার মহাসড়কের সম্ভাব্যতা যাচাই করা হয়। এর আওতায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কটিও অন্তর্ভুক্ত করা হয়। কারণ ঢাকা (কাঁচপুর)-সিলেট মহাসড়ক এশিয়ান হাইওয়ে, বিমসটেক করিডর এবং সার্ক হাইওয়ে করিডরের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। উপআঞ্চলিক যোগাযোগ, বিশেষ করে ভারত, মায়ানমার, নেপাল, ভুটান ও চীনের সঙ্গে যোগাযোগে ভৌগোলিকভাবে বাংলাদেশ কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে।

উপআঞ্চলিক বাণিজ্য সম্প্রসারণ এবং বৃহত্তর সিলেট অঞ্চলের সঙ্গে রাজধানীসহ অন্যসব অঞ্চলের যোগাযোগের প্রধান করিডর হচ্ছে সড়কটি। তাই এটিকে চার লেনে উন্নীত করা জরুরি হয়ে পড়েছে। প্রকল্পের আওতায় ২০৯ দশমিক ৩২ কিলোমিটার চার লেনে উন্নীত করা হচ্ছে। এ ছাড়া মূল সড়কের উভয় পাশে ধীরগতির যানবাহন চলাচলের জন্য পৃথক সার্ভিস লেনও নির্মাণ করা হচ্ছে।

২০২১ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এর অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ১৬ হাজার ৯১৯ কোটি খরচ ধরা হয়েছে। এর মধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ৩ হাজার ৬৭৪ কোটি টাকা এবং এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) ঋণ থেকে ১৩ হাজার ২৪৫ কোটি টাকা খরচ করা হবে। প্রকল্পের বাস্তবায়নকাল ধরা হয়েছে ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত।

প্রকল্পটি কার্যকর করতে অর্থাৎ এডিবির টাকা খরচ করতে ২০২১ সালের ৪ অক্টোবর সরকার এবং এডিবির মধ্যে ঋণচুক্তি হয়। সাসেক ঢাকা-সিলেট করিডর সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পটি সার্ভিস লেনসহ ৬ লেনের সড়ক সম্প্রসারণ ধরা হয়; যার লক্ষ্য ঢাকা ও সিলেট বিভাগের মধ্যে যোগাযোগ উন্নত করা। প্রকল্পের মোট দৈর্ঘ্য হচ্ছে ২০৯.৩২৮ কিলোমিটার।

প্রকল্পের আওতায় ৬৬টি সেতু , ৩০৫টি কালভার্ট ও ওভারপাস, ৬টি রেলওভার ব্রিজ, ৩৭টি ইউটার্ন ও ২৬টি ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ করা হবে। প্রকল্প এলাকা হচ্ছে- ঢাকা বিভাগের নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁ, রূপগঞ্জ ও আড়াইহাজার উপজেলা, নরসিংদী জেলার সদর উপজেলা, শিবপুর, রায়পুর ও বেলাব উপজেলা, কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরব উপজেলা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর ও সরাইল উপজেলা রয়েছে। এ ছাড়া হবিগঞ্জ জেলা সদর, মাধবপুর, চুনারুঘাট, বাহুবল ও নবীগঞ্জ উপজেলা, মৌলভীবাজার সদর এবং সিলেট সদর ও বালাগঞ্জ উপজেলায় এ প্রকল্পের কাজ হচ্ছে। নির্মাণকাজ সময়মতো শেষ করতে পুরো সড়ক ১২ ভাগ করে ১২টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে যৌথভাবে দায়িত্ব দেওয়া হয়।

বিভিন্ন প্যাকেজে এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। বিভিন্ন কোম্পানির সঙ্গে চুক্তিও হয়েছে। তারা চুক্তি মোতাবেক কাজও করছে। কাঁচপুর ইন্টারসেকশন থেকে সোনপাড়া বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত ১৮ কিলোমিটার জয়েন্ট ভেঞ্চারে কাজ করছে এলআরবিসি-এমআইএল। এর চুক্তিমূল্য ৮৮৬ কোটি টাকা। এর অগ্রগতি হয়েছে ২০ দশমিক ৭৫ শতাংশ। সোনপাড়া বাসস্ট্যান্ড থেকে নরসিংদী বিসিক পর্যন্ত ১৭ কিলোমিটারে কাজ করছে জেডজেডএইচই-এমআইএল। এর চুক্তিমূল্য হচ্ছে ১ হাজার ৩৫০ কোটি টাকা। এ প্যাকেজের অগ্রগতি হয়েছে ১৫ দশমিক ৭০ শতাংশ। নরসিংদী বিসিক থেকে মারকো এলপিজি ফিলিং স্টেশন পর্যন্ত সাড়ে ১৮ কিলোমিটারের কাজ করছে এইচইজিও-মীর আক্তার লিমিটেড। এর চুক্তিমূল্য হচ্ছে ৯৫৫ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। এ প্যাকেজের অগ্রগতি হয়েছে প্রায় ১৭ শতাংশ।

সওজ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, প্রকল্পটিতে জমি অধিগ্রহণ সম্পর্কিত ৬৬টি মামলা হয়েছিল। এর মধ্যে মাত্র ১০টি নিষ্পত্তি করে ঠিকাদারদের জমি বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। ৫৬টি মামলা এখনো চলমান। যেসব জায়গা ঠিকাদাররা বুঝে পেয়েছেন সেগুলোয় মাটি উন্নয়ন, সেতু-কালভার্ট নির্মাণের মতো কাজ শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন অধিদপ্তরের প্রকৌশলীরা।

ধীরগতির নির্মাণকাজের কারণে মহাসড়কজুড়ে তৈরি হয়েছে খানাখন্দ। উন্নয়নকাজ চলমান থাকায় নিয়মিত সংস্কার কার্যক্রমও বন্ধ রয়েছে। ফলে বেহাল অবস্থায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক। ৪-৫ ঘণ্টার পথ পাড়ি দিতে সময় লেগে যাচ্ছে ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা পর্যন্ত। বেহাল দশার কারণে যাতায়াতের ভাড়াও বেড়েছে।

আইএমইডির সভায় প্রকল্প পরিচালক ও অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী এ কে এম ফজলুল করিম জানিয়েছেন, জমি অধিগ্রহণ কার্যক্রমে ধীরগতি, বিদ্যুৎ-গ্যাস-টেলিফোন লাইন স্থানান্তরে ধীরগতি, নকশার পুনঃসমন্বয় এবং অনুমোদন প্রক্রিয়ায় জটিলতার কারণে কাজ এগোচ্ছে না। আমাদের ঠিকাদাররা এখন মূলত স্ট্রাকচারের কাজ করছেন। যেখানে আমরা জমি পেয়েছি বা আগে থেকেই সওজ অধিদপ্তরের জমি আছে সেখানে কাজ করছেন।

এ ব্যাপারে আইএমইডি সচিব মো. কামাল উদ্দীন বলেন, ‘২০২৫-২৬ অর্থবছরের এডিপিভুক্ত ১৩টি গুরুত্বপূর্ণ চলমান প্রকল্পের অগ্রগতি পর্যালোচনা সভা সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হয়। এসব প্রকল্পে কম অগ্রগতির কারণ জানতে চাওয়া হয়। সভায় বলা হয়েছে, ভূমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া খুব দ্রুত শেষ করতে হবে। প্যাকেজভিত্তিক টেন্ডার গ্রহণ ও অনুমোদন করতে হবে। উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) অনুযায়ী প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি (পিআইসি) ও প্রকল্প স্য়াটি রিং কমিটির (পিএসসি) সভা অনুষ্ঠিত হতে হবে। সভার সুপারিশের আলোকে গৃহীত ব্যবস্থা আইএমইডিতে পাঠাতে হবে।’

জনপ্রিয়

আজ রোববার সিলেটে একঘন্টার জন্য বন্ধ থাকবে দোকানপাট, চলবে না যানবাহন

ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক প্রকল্প : পাঁচ বছরে অগ্রগতি মাত্র ১৫ শতাংশ

প্রকাশের সময় : ০১:১৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫

১৬ হাজার ৯১৯ কোটি টাকা খরচ ধরা হয়েছে ঢাকা-সিলেট করিডর প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে ২০২১ সালের জানুয়ারি। শেষ হওয়ার কথা আগামী বছরের ডিসেম্বরে। কিন্তু পাঁচ বছরে খরচ হয়েছে মাত্র ৩ হাজার ৩৮০ কোটি টাকা। অর্থাৎ আর্থিক অগ্রগতি হয়েছে প্রায় ২০ শতাংশ। বাস্তব কাজের অগ্রগতি আরও কম হয়েছে, মাত্র ১৫ শতাংশ।

এত গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পটির অগ্রগতি খুবই কম হওয়ায় এর কারণ জানতে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগে (আইএমইডি) সম্প্রতি প্রকল্প পরিচালককে ডাকা হয়। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন সড়ক এবং জনপথ অধিদপ্তর। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় এবং পরিকল্পনা কমিশন সূত্র জানায়, টেকসই সড়ক নেটওয়ার্ক গড়ে তুলতে দেশব্যাপী জাতীয় মহাসড়কের উভয় পাশে পৃথক সার্ভিস লেনসহ বিদ্যমান সড়কগুলো চার লেনে উন্নীত করার মহাপরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। এর অংশ হিসেবে এডিবির আর্থিক ও কারিগরি সহায়তায় দেশব্যাপী ১ হাজার ৭৫২ কিলোমিটার মহাসড়কের সম্ভাব্যতা যাচাই করা হয়। এর আওতায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কটিও অন্তর্ভুক্ত করা হয়। কারণ ঢাকা (কাঁচপুর)-সিলেট মহাসড়ক এশিয়ান হাইওয়ে, বিমসটেক করিডর এবং সার্ক হাইওয়ে করিডরের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। উপআঞ্চলিক যোগাযোগ, বিশেষ করে ভারত, মায়ানমার, নেপাল, ভুটান ও চীনের সঙ্গে যোগাযোগে ভৌগোলিকভাবে বাংলাদেশ কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে।

উপআঞ্চলিক বাণিজ্য সম্প্রসারণ এবং বৃহত্তর সিলেট অঞ্চলের সঙ্গে রাজধানীসহ অন্যসব অঞ্চলের যোগাযোগের প্রধান করিডর হচ্ছে সড়কটি। তাই এটিকে চার লেনে উন্নীত করা জরুরি হয়ে পড়েছে। প্রকল্পের আওতায় ২০৯ দশমিক ৩২ কিলোমিটার চার লেনে উন্নীত করা হচ্ছে। এ ছাড়া মূল সড়কের উভয় পাশে ধীরগতির যানবাহন চলাচলের জন্য পৃথক সার্ভিস লেনও নির্মাণ করা হচ্ছে।

২০২১ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এর অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ১৬ হাজার ৯১৯ কোটি খরচ ধরা হয়েছে। এর মধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ৩ হাজার ৬৭৪ কোটি টাকা এবং এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) ঋণ থেকে ১৩ হাজার ২৪৫ কোটি টাকা খরচ করা হবে। প্রকল্পের বাস্তবায়নকাল ধরা হয়েছে ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত।

প্রকল্পটি কার্যকর করতে অর্থাৎ এডিবির টাকা খরচ করতে ২০২১ সালের ৪ অক্টোবর সরকার এবং এডিবির মধ্যে ঋণচুক্তি হয়। সাসেক ঢাকা-সিলেট করিডর সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পটি সার্ভিস লেনসহ ৬ লেনের সড়ক সম্প্রসারণ ধরা হয়; যার লক্ষ্য ঢাকা ও সিলেট বিভাগের মধ্যে যোগাযোগ উন্নত করা। প্রকল্পের মোট দৈর্ঘ্য হচ্ছে ২০৯.৩২৮ কিলোমিটার।

প্রকল্পের আওতায় ৬৬টি সেতু , ৩০৫টি কালভার্ট ও ওভারপাস, ৬টি রেলওভার ব্রিজ, ৩৭টি ইউটার্ন ও ২৬টি ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ করা হবে। প্রকল্প এলাকা হচ্ছে- ঢাকা বিভাগের নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁ, রূপগঞ্জ ও আড়াইহাজার উপজেলা, নরসিংদী জেলার সদর উপজেলা, শিবপুর, রায়পুর ও বেলাব উপজেলা, কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরব উপজেলা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর ও সরাইল উপজেলা রয়েছে। এ ছাড়া হবিগঞ্জ জেলা সদর, মাধবপুর, চুনারুঘাট, বাহুবল ও নবীগঞ্জ উপজেলা, মৌলভীবাজার সদর এবং সিলেট সদর ও বালাগঞ্জ উপজেলায় এ প্রকল্পের কাজ হচ্ছে। নির্মাণকাজ সময়মতো শেষ করতে পুরো সড়ক ১২ ভাগ করে ১২টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে যৌথভাবে দায়িত্ব দেওয়া হয়।

বিভিন্ন প্যাকেজে এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। বিভিন্ন কোম্পানির সঙ্গে চুক্তিও হয়েছে। তারা চুক্তি মোতাবেক কাজও করছে। কাঁচপুর ইন্টারসেকশন থেকে সোনপাড়া বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত ১৮ কিলোমিটার জয়েন্ট ভেঞ্চারে কাজ করছে এলআরবিসি-এমআইএল। এর চুক্তিমূল্য ৮৮৬ কোটি টাকা। এর অগ্রগতি হয়েছে ২০ দশমিক ৭৫ শতাংশ। সোনপাড়া বাসস্ট্যান্ড থেকে নরসিংদী বিসিক পর্যন্ত ১৭ কিলোমিটারে কাজ করছে জেডজেডএইচই-এমআইএল। এর চুক্তিমূল্য হচ্ছে ১ হাজার ৩৫০ কোটি টাকা। এ প্যাকেজের অগ্রগতি হয়েছে ১৫ দশমিক ৭০ শতাংশ। নরসিংদী বিসিক থেকে মারকো এলপিজি ফিলিং স্টেশন পর্যন্ত সাড়ে ১৮ কিলোমিটারের কাজ করছে এইচইজিও-মীর আক্তার লিমিটেড। এর চুক্তিমূল্য হচ্ছে ৯৫৫ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। এ প্যাকেজের অগ্রগতি হয়েছে প্রায় ১৭ শতাংশ।

সওজ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, প্রকল্পটিতে জমি অধিগ্রহণ সম্পর্কিত ৬৬টি মামলা হয়েছিল। এর মধ্যে মাত্র ১০টি নিষ্পত্তি করে ঠিকাদারদের জমি বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। ৫৬টি মামলা এখনো চলমান। যেসব জায়গা ঠিকাদাররা বুঝে পেয়েছেন সেগুলোয় মাটি উন্নয়ন, সেতু-কালভার্ট নির্মাণের মতো কাজ শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন অধিদপ্তরের প্রকৌশলীরা।

ধীরগতির নির্মাণকাজের কারণে মহাসড়কজুড়ে তৈরি হয়েছে খানাখন্দ। উন্নয়নকাজ চলমান থাকায় নিয়মিত সংস্কার কার্যক্রমও বন্ধ রয়েছে। ফলে বেহাল অবস্থায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক। ৪-৫ ঘণ্টার পথ পাড়ি দিতে সময় লেগে যাচ্ছে ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা পর্যন্ত। বেহাল দশার কারণে যাতায়াতের ভাড়াও বেড়েছে।

আইএমইডির সভায় প্রকল্প পরিচালক ও অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী এ কে এম ফজলুল করিম জানিয়েছেন, জমি অধিগ্রহণ কার্যক্রমে ধীরগতি, বিদ্যুৎ-গ্যাস-টেলিফোন লাইন স্থানান্তরে ধীরগতি, নকশার পুনঃসমন্বয় এবং অনুমোদন প্রক্রিয়ায় জটিলতার কারণে কাজ এগোচ্ছে না। আমাদের ঠিকাদাররা এখন মূলত স্ট্রাকচারের কাজ করছেন। যেখানে আমরা জমি পেয়েছি বা আগে থেকেই সওজ অধিদপ্তরের জমি আছে সেখানে কাজ করছেন।

এ ব্যাপারে আইএমইডি সচিব মো. কামাল উদ্দীন বলেন, ‘২০২৫-২৬ অর্থবছরের এডিপিভুক্ত ১৩টি গুরুত্বপূর্ণ চলমান প্রকল্পের অগ্রগতি পর্যালোচনা সভা সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হয়। এসব প্রকল্পে কম অগ্রগতির কারণ জানতে চাওয়া হয়। সভায় বলা হয়েছে, ভূমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া খুব দ্রুত শেষ করতে হবে। প্যাকেজভিত্তিক টেন্ডার গ্রহণ ও অনুমোদন করতে হবে। উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) অনুযায়ী প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি (পিআইসি) ও প্রকল্প স্য়াটি রিং কমিটির (পিএসসি) সভা অনুষ্ঠিত হতে হবে। সভার সুপারিশের আলোকে গৃহীত ব্যবস্থা আইএমইডিতে পাঠাতে হবে।’