, রবিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
বিয়ে করে ফ্রান্সে নিয়ে জানতে পারেন স্ত্রী অন্যের সিলেটে র‌্যাবের অভিযানে অস্ত্রসহ বিস্ফোরক উদ্ধার সিলেটের গোলাপগঞ্জে পদায়নের আগেই হুমকির মুখে নতুন ইউএনও শাখী ছেপ বিশ্বনাথে জেন্ডার সচেতনা ও সহিংসতা প্রতিরোধ বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত দিরাইয়ে প্রশাসনের অভিযানে হকারমুক্ত ফুটপাত হাদীকে গুলি করা সন্ত্রাসীদের পালানো আটকাতে মৌলভীবাজার সীমান্তে বিজিবির কঠোর অবস্থান সিলেটে হাওরের ভূগর্ভস্থে পানির ভয়াবহ সংকট আইন অমান্য করে সিলেটে নির্বাচনী প্রচারে ব্যস্ত বিএনপির প্রার্থীরা প্রবাসীর স্ত্রীকে ধর্ষণচেষ্টা: গোয়াইনঘাটে কিশোর গ্যাং লিডারের বিরুদ্ধে মামলা শাবিপ্রবি সাস্ট এআইসিএইচই স্টুডেন্ট চ্যাপ্টারের নতুন কমিটি গঠন
আর.ডব্লিউ.ডি.ও এর প্রকল্পের সমাপনী সভা অনুষ্ঠিত

‘অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে শিখেছে চা শ্রমিক নারীরা’

চা শ্রমিক নারীদের অধিকার নিশ্চিতকরণ, বাগানের সুযোগ সুবিধা ও চা শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যে প্রকল্পের সমাপনী সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রবিবার (৩১ আগস্ট) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সিলেট সদর উপজেলা মিলনায়তনে এই সভার আয়োজন করে রিলায়েন্ট উইমেন ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (আর.ডব্লিউ.ডি.ও)। ইউরোপীয় ইউনিয়নের অর্থায়ন এবং অক্সফাম ইন বাংলাদেশের সহযোগিতায় এই প্রকল্প পরিচালিত হয়।

সভায় নিজেদের দুঃখ দুর্দশার কথা উল্লেখ করে লাক্কাতুরা চাবাগানের চা শ্রমিক সবিতা লোহার বলেন, আমরা এখন অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে শিখেছি। বাগানে আমাদের উপর কোনো অন্যায় হলে আমরা প্রতিবাদ করি। চা বাগানে অনেক বাল্য বিবাহ হত। কিন্তু আমরা এখন বাল্য বিবাহের ক্ষতি সম্পর্কে জানি। তাই এখন বাগানে কোনো বাল্য বিবাহ হলে আমরা বাধা দেই। তারা আরো বলেন আমরা আগে চা শ্রমকি এর কি সুযোগ সুবিধা ছিল তা জানতাম না এখন এই প্রকল্প এর মাধ্যমে জানতে পেরেছি এখন আমরা চা বাগানে নারী শ্রমিকদের অধিকার আদায়ে কথা বলতে পারি পঞ্চায়েত বা ম্যানেজার যে কারো সাথে সরাসরি চা শ্রমিক এর অধিকার নিয়ে কথা বলি, এবং আমাদের কর্মঘন্টা এবং কি মজুরী সহ সকল প্রকার সুযোগ উপভোপ করতে সক্ষম । ইতোমধ্যে আমরা সমাজসেবা থেকে প্রায় ১০/১২ নারী পুরুষ বয়স্ক ও বিধবা ভাতা পেয়েছি এই প্রকল্প এর এডভোকেসি করার ফলে।

সভায় লাক্কাতুরা চা বাগানের আরডাব্লিউডি এর কমিউনিটি ফ্যাসিলেটর এলি দাশ বলেন, চা বাগানের নারীরা জানতেন না বিধবা হলে সরকারি ভাতা পাওয়া যায়। এই প্রকল্পের মাধ্যমে আমরা বিধবা ভাতাসহ বিভিন্ন ভাতা সম্পর্কে জানতে পারি। এটা জেনে চা বাগানের অনেক নারী বিধবা ভাতার জন্য আবেদন করে ভাতাও পেয়েছেন। এনআইডি কার্ডের নাম সংশোধন কিভাবে হয় জানাতাম না। এখন আমাদের অনেক শ্রমিক কার্ডের নাম সংশোধন সম্পর্কেও অবগত হয়েছেন। তারা জানার কারণে বাগানের অন্যরা তাদের কাছ থেকে সাহায্য নেয়।

আরডব্লিউডি এর ভাইস চেয়ারম্যান সমিক শহীদ জাহানের সভাপতিত্বে ও প্রজেক্ট কোঅর্ডিনেটর মো. জাহিদুল ইসলাম রশিদের সঞ্চালনায় প্রকল্পের সমাপনী সভা বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা সমাজসেবা অফিসের উপপরিচালক মো আব্দুর রফিক, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার অভিজিৎ কুমার পাল, উপজেলা সমাজসেবা অফিসার নুসরাত এ ইলাহী, উপজেলা তথ্য অফিসার সুবর্ণা দেব, কল কারখানা অধিদপ্তরের লেবার ইন্সপেক্টর মো. শাহ আলম, জেসিছ এর নির্বাহী পরিচালক এটিএম বদরুল ইসলাম, বুরজান চা বাগান ম্যানেজার মো. কামরুজ্জামান।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ৩নং খাদিম নগর ইউনিয়ন এর ইউপি সদস্য আতাউর রহমান শামীম,পাসকোপ এর নিবাহী পরিচালক গৌরাঙ্গ পাত্র, ব্লাস্টের কো-অর্ডিনেটর সত্যজিৎ দাস, এনজিও ফোরামের রিজিওনাল অফিসার মো মোকছেদুর রহমান, আশার আলো সংস্থার নির্বাহী পরিচালক মো. মাহফুজ আলম, এফআইভিডি প্রোগ্রাম কোডিনেটর নজরুল ইসলাম মনজুর, ব্র্যাকের ডিভিশনাল ম্যানেজার রিপন চন্দ্র মন্ডল, খাদিম চা বাগানের পঞ্চায়েত সভাপতি সবুজ তাতি, তারাপুর চা-বাগানের পঞ্চায়েত সভাপতি চৈতন্য মুদি, বুরজান চা বাগানের পঞ্চায়েত সভাপতি বিলাস ব্যানিজি, আলীবাহার চা বাগানের পঞ্চায়েত সভাপতি শ্যামা চরণ গোয়ালা, লাক্কাতুরা চা-বাগানের পঞ্চায়েত কোষাধ্যক্ষ সোহেল বিশ্বাস।

আরও উপস্থিত ছিলেন আর.ডব্লিউ.ডি.ও এর ফাইনেন্স ও এডমিন অফিসার মো. মহসিন রেজা, প্রোগ্রাম, প্রজেক্ট অফিসার বাবুল কুমার সিংহ একাউন্টস অফিসার নাহরিন সুলতানা, সোসাল ওয়ার্কার তামান্না আক্তার তানিয়া, ফিল্ড অফিসার সোনিয়া দারিংসহ মাঠ পর্যায়ের কর্মী ও বিভিন্ন এনজিও প্রতিনিধি বৃন্দ।

প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালে জুলাই মাসে ইউরোপীয় ইউনিয়নের অর্থায়ন এবং অক্সফাম ইন বাংলাদেশের সহযোগিতায় রিলায়েন্ট উইমেন ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (আর.ডব্লিউ.ডি.ও) লাক্কাতুরা চা বাগান, মালিনীছড়া চা বাগান, তারাপুর চা বাগান, আলীবাহার চা বাগান, খাদিম চা বাগান ও বুরজান চা বাগানে এই প্রকল্পের কাজ করে। এই ৬ বাগানের ২৩৫০ জন চা শ্রমিক অংশগ্রহণ করেন। এরমধ্যে নারী চা শ্রমিক লিডার ছিলেন ৬০০ জন এবং নারী চা শ্রমিক গৃহিনী ছিলেন ৫২৫ জন।

জনপ্রিয়

বিয়ে করে ফ্রান্সে নিয়ে জানতে পারেন স্ত্রী অন্যের

আর.ডব্লিউ.ডি.ও এর প্রকল্পের সমাপনী সভা অনুষ্ঠিত

‘অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে শিখেছে চা শ্রমিক নারীরা’

প্রকাশের সময় : ০১:৫০ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩১ আগস্ট ২০২৫

চা শ্রমিক নারীদের অধিকার নিশ্চিতকরণ, বাগানের সুযোগ সুবিধা ও চা শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যে প্রকল্পের সমাপনী সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রবিবার (৩১ আগস্ট) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সিলেট সদর উপজেলা মিলনায়তনে এই সভার আয়োজন করে রিলায়েন্ট উইমেন ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (আর.ডব্লিউ.ডি.ও)। ইউরোপীয় ইউনিয়নের অর্থায়ন এবং অক্সফাম ইন বাংলাদেশের সহযোগিতায় এই প্রকল্প পরিচালিত হয়।

সভায় নিজেদের দুঃখ দুর্দশার কথা উল্লেখ করে লাক্কাতুরা চাবাগানের চা শ্রমিক সবিতা লোহার বলেন, আমরা এখন অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে শিখেছি। বাগানে আমাদের উপর কোনো অন্যায় হলে আমরা প্রতিবাদ করি। চা বাগানে অনেক বাল্য বিবাহ হত। কিন্তু আমরা এখন বাল্য বিবাহের ক্ষতি সম্পর্কে জানি। তাই এখন বাগানে কোনো বাল্য বিবাহ হলে আমরা বাধা দেই। তারা আরো বলেন আমরা আগে চা শ্রমকি এর কি সুযোগ সুবিধা ছিল তা জানতাম না এখন এই প্রকল্প এর মাধ্যমে জানতে পেরেছি এখন আমরা চা বাগানে নারী শ্রমিকদের অধিকার আদায়ে কথা বলতে পারি পঞ্চায়েত বা ম্যানেজার যে কারো সাথে সরাসরি চা শ্রমিক এর অধিকার নিয়ে কথা বলি, এবং আমাদের কর্মঘন্টা এবং কি মজুরী সহ সকল প্রকার সুযোগ উপভোপ করতে সক্ষম । ইতোমধ্যে আমরা সমাজসেবা থেকে প্রায় ১০/১২ নারী পুরুষ বয়স্ক ও বিধবা ভাতা পেয়েছি এই প্রকল্প এর এডভোকেসি করার ফলে।

সভায় লাক্কাতুরা চা বাগানের আরডাব্লিউডি এর কমিউনিটি ফ্যাসিলেটর এলি দাশ বলেন, চা বাগানের নারীরা জানতেন না বিধবা হলে সরকারি ভাতা পাওয়া যায়। এই প্রকল্পের মাধ্যমে আমরা বিধবা ভাতাসহ বিভিন্ন ভাতা সম্পর্কে জানতে পারি। এটা জেনে চা বাগানের অনেক নারী বিধবা ভাতার জন্য আবেদন করে ভাতাও পেয়েছেন। এনআইডি কার্ডের নাম সংশোধন কিভাবে হয় জানাতাম না। এখন আমাদের অনেক শ্রমিক কার্ডের নাম সংশোধন সম্পর্কেও অবগত হয়েছেন। তারা জানার কারণে বাগানের অন্যরা তাদের কাছ থেকে সাহায্য নেয়।

আরডব্লিউডি এর ভাইস চেয়ারম্যান সমিক শহীদ জাহানের সভাপতিত্বে ও প্রজেক্ট কোঅর্ডিনেটর মো. জাহিদুল ইসলাম রশিদের সঞ্চালনায় প্রকল্পের সমাপনী সভা বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা সমাজসেবা অফিসের উপপরিচালক মো আব্দুর রফিক, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার অভিজিৎ কুমার পাল, উপজেলা সমাজসেবা অফিসার নুসরাত এ ইলাহী, উপজেলা তথ্য অফিসার সুবর্ণা দেব, কল কারখানা অধিদপ্তরের লেবার ইন্সপেক্টর মো. শাহ আলম, জেসিছ এর নির্বাহী পরিচালক এটিএম বদরুল ইসলাম, বুরজান চা বাগান ম্যানেজার মো. কামরুজ্জামান।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ৩নং খাদিম নগর ইউনিয়ন এর ইউপি সদস্য আতাউর রহমান শামীম,পাসকোপ এর নিবাহী পরিচালক গৌরাঙ্গ পাত্র, ব্লাস্টের কো-অর্ডিনেটর সত্যজিৎ দাস, এনজিও ফোরামের রিজিওনাল অফিসার মো মোকছেদুর রহমান, আশার আলো সংস্থার নির্বাহী পরিচালক মো. মাহফুজ আলম, এফআইভিডি প্রোগ্রাম কোডিনেটর নজরুল ইসলাম মনজুর, ব্র্যাকের ডিভিশনাল ম্যানেজার রিপন চন্দ্র মন্ডল, খাদিম চা বাগানের পঞ্চায়েত সভাপতি সবুজ তাতি, তারাপুর চা-বাগানের পঞ্চায়েত সভাপতি চৈতন্য মুদি, বুরজান চা বাগানের পঞ্চায়েত সভাপতি বিলাস ব্যানিজি, আলীবাহার চা বাগানের পঞ্চায়েত সভাপতি শ্যামা চরণ গোয়ালা, লাক্কাতুরা চা-বাগানের পঞ্চায়েত কোষাধ্যক্ষ সোহেল বিশ্বাস।

আরও উপস্থিত ছিলেন আর.ডব্লিউ.ডি.ও এর ফাইনেন্স ও এডমিন অফিসার মো. মহসিন রেজা, প্রোগ্রাম, প্রজেক্ট অফিসার বাবুল কুমার সিংহ একাউন্টস অফিসার নাহরিন সুলতানা, সোসাল ওয়ার্কার তামান্না আক্তার তানিয়া, ফিল্ড অফিসার সোনিয়া দারিংসহ মাঠ পর্যায়ের কর্মী ও বিভিন্ন এনজিও প্রতিনিধি বৃন্দ।

প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালে জুলাই মাসে ইউরোপীয় ইউনিয়নের অর্থায়ন এবং অক্সফাম ইন বাংলাদেশের সহযোগিতায় রিলায়েন্ট উইমেন ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (আর.ডব্লিউ.ডি.ও) লাক্কাতুরা চা বাগান, মালিনীছড়া চা বাগান, তারাপুর চা বাগান, আলীবাহার চা বাগান, খাদিম চা বাগান ও বুরজান চা বাগানে এই প্রকল্পের কাজ করে। এই ৬ বাগানের ২৩৫০ জন চা শ্রমিক অংশগ্রহণ করেন। এরমধ্যে নারী চা শ্রমিক লিডার ছিলেন ৬০০ জন এবং নারী চা শ্রমিক গৃহিনী ছিলেন ৫২৫ জন।