বাংলাদেশে টাইফয়েড জ্বরের ভয়াবহ প্রাদুর্ভাব রোধে আগামী ১২ অক্টোবর থেকে মাসব্যাপী টিকাদান ক্যাম্পেইন শুরু হচ্ছে।ইপিআই কর্মসূচির আওতায় পরিচালিত এ উদ্যোগে সিলেট জেলায় ৮ লাখ ৫৩ হাজার ৯৮০ জন শিশুকে বিনামূল্যে টাইফয়েডের টিকা দেওয়া হবে।সিলেট সিটি কর্পোরেশন এলাকায় টিকা দেওয়া হবে ১ লাখ ৬২ হাজার ৫২২ জন শিশুকে। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা ও ইউনিসেফ এ কার্যক্রমে সহযোগিতা করছে।
টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন উপলক্ষে বৃহস্পতিবার নগরভবন সভাকক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এসব তথ্য জানানো হয়। সিলেট সিটি কর্পোরেশন ও জেলা সিভিল সার্জনের কার্যালয় আয়োজিত সভায় বক্তব্য দেন, সিলেট সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রেজাই রাফিন সরকার, স্বাস্থ্য বিভাগ সিলেটের পরিচালক ডা. মো. আনিসুর রহমান, সহকারী পরিচালক ডা. মো. নূরে আলম শামীম, সিলেটের সিভিল সার্জন ডা. মো. নাসির উদ্দিন, ডা. জন্মেজয় দত্ত, সিটি কর্পোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. জাহিদুল ইসলাম, ইউনিসেফ বাংলাদেশের ডা. মির্জা ফজলি এলাহী, ন্যাশনাল ইপিআই স্পেশালিস্ট ডা. নভোজ্যোতি দাশ, ডা. স্বপ্নীল সৌরভ রায়, বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার সিলেট বিভাগীয় সমন্বয়কারী ডা. খালিদ বিন লুৎফর প্রমুখ।
সভায় সিলেট সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রেজাই রাফিন সরকার বলেছেন, প্রতিরোধযোগ্য সংক্রামক রোগ টাইফয়েড জ্বর থেকে শিশুদের সুরক্ষায় সরকার বিনামূল্যে টাইফয়েড টিকা দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে।আগামী ১২ অক্টোবর থেকে সিলেটসহ সারা দেশে এ কর্মসূচি বাস্তবায়িত হবে।এ সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এ উদ্যোগ বাস্তবায়ন করতে হবে।
মতবিনিময় সভায় জানানো হয়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অনুমোদিত এই টিকা নিরাপদ ও কার্যকর।সরকারের এই ক্যাম্পেইন শুধু শিশুদের জীবন রক্ষা নয়, দীর্ঘমেয়াদে টাইফয়েডজনিত অসুস্থতা ও মৃত্যুহার কমাতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। এ সময় ৯ মাস থকেে ১৫ বছররে কম বয়সী সকল শিশু এবং প্রাক-প্রাথমকি থকেে নবম শ্রণেি বা সমমান র্পযন্ত সকল শিক্ষার্থীকে বিনামূল্যে ১ ডোজ টাইফয়ডের টিকা প্রদান করা হব।কোনো শিশুকে টিকার আওতার বাইরে রাখা যাবে না।
সভায় জানানো হয়, টাইফয়েড জীবাণু স্যালমোনেলা টাইফি দ্বারা সৃষ্ট। এটি মূলত দূষিত পানি ও খাবারের মাধ্যমে ছড়ায়। ঝুঁকি বেশি ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা, বস্তি, নিম্ন আয়ের জনগোষ্ঠী এবং যেখানে নিরাপদ পানি ও স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটেশনের অভাব রয়েছে। আক্রান্ত হলে শুধু শারীরিক জটিলতাই নয়, অর্থনৈতিক ক্ষতিও হয় এবং অনেক ক্ষেত্রে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। এই রোগ প্রতিরোধে টিকা গ্রহণই সবচেয়ে নিরাপদ। টিকাদান কর্মসূচি সফলভাবে বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশে টাইফয়েডজনিত মৃত্যু অনেকাংশে কমে আসবে।
মতবিনিময় সভায় জানানো হয়, এই টিকা প্রদানের জন্য রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম চলমান রয়েছে। ইপিআই ভ্যাক্সিনেশন অ্যাপের মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। শিক্ষার্থীদের স্ব স্ব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানভিত্তিক কেন্দ্রে টিকা দেওয়া হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ব্যতীতদের স্থায়ী ও অস্থায়ী ইপিআই কেন্দ্রে টিকা দেওয়া হবে।যারা রেজিস্রেনাশন করতে পারবে না তারাও টিকা পাবে। ভরাপেটে টিকা দেওয়া হবে। তবে শিশুর জ্বর থাকলে টিকা দেওয়া যাবে না।