, বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ৩ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
সিলেটে বিজয় দিবসের দিনে ডেভিল হান্ট অভিযানে আওয়ামী লীগের ৫ জন গ্রেপ্তার সিলেট বিভাগের সীমান্তজুড়ে বিজিবির অভিযান, সাড়ে পাঁচ কোটির বেশি টাকার চোরাচালানি জব্দ সিলেটে জুয়া ও অনলাইন জুয়ার বিরুদ্ধে পুলিশি অভিযান: ১১ জন আটক সিলেটে দুই সড়ক দুর্ঘটনায় আনসার সদস্যসহ নিহত ২, আহত ২২ সিলেটে অনৈতিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগে অতিথি হোটেল সিলগালা, নারীসহ আটক ৬ মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে স্কলার্সহোম মেজরটিলা কলেজে বীর মুক্তিযোদ্ধা সংবর্ধনা ও আলোচনা সভা কেন্দ্রীয় স্মৃতিস্তম্ভে বিশ্বনাথ প্রেসক্লাব নেতৃবৃন্দের শ্রদ্ধা নিবেদন দ্বিতীয় স্ত্রীর সঙ্গে বিরোধের জেরে সিলেটে এক ব্যক্তির মৃত্যু সিলেটে বিএনপি-ছাত্রদলের নাম ব্যবহার করে চাঁদা দাবি ও হামলা, ক্ষুব্ধ শ্রমিকদের সড়ক অবরোধ ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টার প্রতিবাদে সিলেটে প্রতিবাদী অবস্থান

সিলেটে সাদাপাথর লুটের তালিকা থেকে রেহাই : গণস্বাক্ষর না দেওয়ায় মামলা

সিলেটে আলোচিত সাদাপাথর হরিলুটের ঘটনায় দুদকের তালিকাভুক্ত উপজেলা বিএনপি নেতা ও স্থানীয় ইউপি সদস্যের নামে গণস্বাক্ষর না দেওয়ার বিষয়টি কেন্দ্র করে স্থানীয় ব্যবসায়ীকে হত্যা চেষ্টা ও হামলার অভিযোগে মামলা দায়ের হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার কাঠালবাড়ি গ্রামের ইকবাল হোসেন আরিফ ও তার ভাই দেলোয়ার হোসেন জীবন দুদকের তালিকাভুক্ত। সম্প্রতি তারা স্থানীয় ব্যবসায়ী আল মামুনকে চাপ প্রয়োগ করে গণস্বাক্ষর দিতে বাধ্য করতে গেলে বিষয়টি হাতাহাতিতে রূপ নেয়। ঘটনার সময় ব্যবসায়ীর দোকানে উপস্থিত পথচারী ও অন্যান্য ব্যবসায়ীরা বড় সংঘাত রোধের চেষ্টা করেন।

প্রত্যক্ষদর্শী ও ব্যবসায়ীরা জানান, আরিফ ও জীবন মেম্বারের আচরণে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসনের নজরে আসে এবং পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আহত ব্যবসায়ী বর্তমানে উপজেলা সদর ও ওসমানী হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণ করছেন।

দুদকের অনুসন্ধানে দেখা গেছে, স্থানীয় প্রশাসনের অবহেলা, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ও ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট মিলে সাদা পাথর হরিলুটের সঙ্গে জড়িত। প্রাথমিক তদন্তে ৪২ জনের নাম উঠে এসেছে, যার মধ্যে ইকবাল হোসেন আরিফ ও তার ভাই দেলোয়ার হোসেন জীবনও রয়েছেন।

স্থানীয় ব্যবসায়ী গাজী মিয়া অভিযোগ করেন, গণস্বাক্ষর শীটে স্বাক্ষর না দেওয়ায় উভয় নেতা হামলার চেষ্টা করেছেন। আমরা ব্যবসায়ীরা আপোষের চেষ্টা করেছি, তবে তারা থামেনি। অপর একজন প্রত্যক্ষদর্শী বিলাল আহমদ বলেন, আরিফ একটি কাগজ আল মামুনের কাছে ধরিয়ে দেন, স্বাক্ষর না দেওয়ায় উভয় পক্ষের মধ্যে তর্ক-বিতর্ক ও হাতাহাতি ঘটে।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ২৫ আগস্ট দুপুরে কোর্ট ফি/স্ট্যাম্প বাবদ ২০ টাকার কোর্ট ফি নিয়ে ব্যাবসায়ী আল মামুনের দোকানে গিয়ে হাতাহাতি হয়। এরপর ২ সেপ্টেম্বর কোম্পানীগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলার সংখ্যা – সি আর, ১৫৫/২৫। স্থানীয় থানার তদন্ত কর্মকর্তা এস.আই নাজমুল জানান, এ ঘটনায় আহত ব্যক্তি চিকিৎসা নিয়েছেন। এমসির রিপোর্ট আসলেই আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।

স্থানীয়দের মতে, পাথর ও বালু লুটের প্রকৃত মূল কাণ্ডের সঙ্গে এ দুই ভাই ও অন্যান্য সিন্ডিকেট সদস্য জড়িত। তবে গণস্বাক্ষর না দেওয়ায় অভিযোগের মুখে পড়া স্থানীয় ব্যবসায়ীকে এ মামলা কেন্দ্র করে হয়রানি করা হচ্ছে।

আহত ব্যক্তি জানিয়েছেন, হামলার পাশাপাশি প্রাণনাশের হুমকি পাচ্ছেন, যার ফলে দীর্ঘদিন তারা নিজ বাড়ি ও ব্যবসায় যেতে পারছেন না। তিনি নিরাপত্তা নিশ্চিত ও সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানিয়েছেন।

সাদা পাথর হরিলুটের ঘটনা দেশব্যাপী সমালোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। সরকারের উচ্চ আদালত ও সংশ্লিষ্ট দফতর মাঠে নেমে অভিযান চালাচ্ছে। এই প্রক্রিয়ায় স্থানীয় প্রশাসন, রাজনৈতিক প্রতিনিধি ও ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের সংশ্লিষ্টতা ধাপে ধাপে উদ্ঘাটিত হচ্ছে।

জনপ্রিয়

সিলেটে বিজয় দিবসের দিনে ডেভিল হান্ট অভিযানে আওয়ামী লীগের ৫ জন গ্রেপ্তার

সিলেটে সাদাপাথর লুটের তালিকা থেকে রেহাই : গণস্বাক্ষর না দেওয়ায় মামলা

প্রকাশের সময় : ০২:৪৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সিলেটে আলোচিত সাদাপাথর হরিলুটের ঘটনায় দুদকের তালিকাভুক্ত উপজেলা বিএনপি নেতা ও স্থানীয় ইউপি সদস্যের নামে গণস্বাক্ষর না দেওয়ার বিষয়টি কেন্দ্র করে স্থানীয় ব্যবসায়ীকে হত্যা চেষ্টা ও হামলার অভিযোগে মামলা দায়ের হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার কাঠালবাড়ি গ্রামের ইকবাল হোসেন আরিফ ও তার ভাই দেলোয়ার হোসেন জীবন দুদকের তালিকাভুক্ত। সম্প্রতি তারা স্থানীয় ব্যবসায়ী আল মামুনকে চাপ প্রয়োগ করে গণস্বাক্ষর দিতে বাধ্য করতে গেলে বিষয়টি হাতাহাতিতে রূপ নেয়। ঘটনার সময় ব্যবসায়ীর দোকানে উপস্থিত পথচারী ও অন্যান্য ব্যবসায়ীরা বড় সংঘাত রোধের চেষ্টা করেন।

প্রত্যক্ষদর্শী ও ব্যবসায়ীরা জানান, আরিফ ও জীবন মেম্বারের আচরণে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসনের নজরে আসে এবং পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আহত ব্যবসায়ী বর্তমানে উপজেলা সদর ও ওসমানী হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণ করছেন।

দুদকের অনুসন্ধানে দেখা গেছে, স্থানীয় প্রশাসনের অবহেলা, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ও ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট মিলে সাদা পাথর হরিলুটের সঙ্গে জড়িত। প্রাথমিক তদন্তে ৪২ জনের নাম উঠে এসেছে, যার মধ্যে ইকবাল হোসেন আরিফ ও তার ভাই দেলোয়ার হোসেন জীবনও রয়েছেন।

স্থানীয় ব্যবসায়ী গাজী মিয়া অভিযোগ করেন, গণস্বাক্ষর শীটে স্বাক্ষর না দেওয়ায় উভয় নেতা হামলার চেষ্টা করেছেন। আমরা ব্যবসায়ীরা আপোষের চেষ্টা করেছি, তবে তারা থামেনি। অপর একজন প্রত্যক্ষদর্শী বিলাল আহমদ বলেন, আরিফ একটি কাগজ আল মামুনের কাছে ধরিয়ে দেন, স্বাক্ষর না দেওয়ায় উভয় পক্ষের মধ্যে তর্ক-বিতর্ক ও হাতাহাতি ঘটে।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ২৫ আগস্ট দুপুরে কোর্ট ফি/স্ট্যাম্প বাবদ ২০ টাকার কোর্ট ফি নিয়ে ব্যাবসায়ী আল মামুনের দোকানে গিয়ে হাতাহাতি হয়। এরপর ২ সেপ্টেম্বর কোম্পানীগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলার সংখ্যা – সি আর, ১৫৫/২৫। স্থানীয় থানার তদন্ত কর্মকর্তা এস.আই নাজমুল জানান, এ ঘটনায় আহত ব্যক্তি চিকিৎসা নিয়েছেন। এমসির রিপোর্ট আসলেই আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।

স্থানীয়দের মতে, পাথর ও বালু লুটের প্রকৃত মূল কাণ্ডের সঙ্গে এ দুই ভাই ও অন্যান্য সিন্ডিকেট সদস্য জড়িত। তবে গণস্বাক্ষর না দেওয়ায় অভিযোগের মুখে পড়া স্থানীয় ব্যবসায়ীকে এ মামলা কেন্দ্র করে হয়রানি করা হচ্ছে।

আহত ব্যক্তি জানিয়েছেন, হামলার পাশাপাশি প্রাণনাশের হুমকি পাচ্ছেন, যার ফলে দীর্ঘদিন তারা নিজ বাড়ি ও ব্যবসায় যেতে পারছেন না। তিনি নিরাপত্তা নিশ্চিত ও সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানিয়েছেন।

সাদা পাথর হরিলুটের ঘটনা দেশব্যাপী সমালোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। সরকারের উচ্চ আদালত ও সংশ্লিষ্ট দফতর মাঠে নেমে অভিযান চালাচ্ছে। এই প্রক্রিয়ায় স্থানীয় প্রশাসন, রাজনৈতিক প্রতিনিধি ও ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের সংশ্লিষ্টতা ধাপে ধাপে উদ্ঘাটিত হচ্ছে।