চট্টগ্রামে সন্তানকে ‘খুন করে পালিয়ে যাওয়া’ ব্যক্তিকে তার দ্বিতীয় স্ত্রীসহ সিলেট থেকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
সিলেট নগরীর দক্ষিণ সুরমা এলাকা থেকে সোমবার রাতে র্যাব-৯ এর সহযোগিতায় র্যাব-৭ এর একটি দল তাদের গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তার দুজন হলেন- নুরুজ্জামান (৫৫) ও আনোয়ারা বেগম (৪০)। আনোয়ারা সিলেটের জৈন্তাপুর এলাকার বাসিন্দা।
দ্বিতীয় বিয়ের প্রতিবাদ করায় গত ১০ সেপ্টেম্বর মীরসরাই উপজেলার পশ্চিম মায়ানি গ্রামে নিজ বাড়িতে ছেলেকে ছুরিকাঘাত করে দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে সৌদি প্রবাসী নুরুজ্জামান পালিয়ে যায় বলে এর আগে পুলিশ জানিয়েছিল।
পরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার পর চিকিৎসক তার ছেলে সাহেদকে মৃত ঘোষণা করে।
নিহত সাহেদ (২৪) চট্টগ্রামের বেসরকারি ইন্টারন্যাশনাল ইসলামী ইউনিভার্সিটির (আইআইইউসি) শিক্ষার্থী।
হত্যাকাণ্ডের পর মীরসরাই থানার ওসি আতিকুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছিলেন, “নুরুজ্জামান দুই মেয়ে ও এক ছেলের জনক। দীর্ঘদিন সৌদিআরবে প্রবাস জীবন কাটিয়ে গত মে মাসে দেশে ফিরেন।
“ঘটনার আগের দিন সিলেটের বাসিন্দা এক নারীকে নিয়ে নুরুজ্জামান মায়ানি ইউনিয়নে নিজের বাড়িতে গিয়ে থাকা শুরু করলে তার সন্তান ও স্ত্রী গিয়ে প্রতিবাদ করে। ”
এসময় তাদের মধ্যে কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে নুরুজ্জামান তার ছেলে সাহেদকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়।
মঙ্গলবার র্যাব-৭ এর সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, নুরুজ্জামান ৩০/৩৫ বছর ধরে সৌদি আরবে ছিলেন। সেখানে থাকার সময় গত ছয়/সাত বছর ধরে এক নারীর সাথে থাকার সংবাদ পায় দেশে থাকা পরিবার। এ নিয়ে নুরুজ্জামানের স্ত্রী জানতে চাইলে তিনি তাদের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে ভরনপোষণ দেওয়া বন্ধ করে দেন।
গত ১৮ মে নুরুজ্জামান দেশে এসে নগরীতে তার স্ত্রী সন্তানদের ভাড়া বাসায় ছিলেন উঠেন এবং গত ১১ অগাস্ট নিজের ছোট মেয়ের বিয়েতে ওই নারীকে বন্ধুর স্ত্রী পরিচয় দিয়ে নিয়ে আসেন।
র্যাব জানায়, গত ৯ সেপ্টেম্বর নুরুজ্জামান তার দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে মীরসরাইর বাড়িতে ওঠেন। খবর পেয়ে তার স্ত্রী-সন্তানরা পরদিন বাড়িতে যান। তাদের দেখে নুরুজ্জামান ও তার দ্বিতীয় স্ত্রী পরিচয় দেওয়া নারী প্রথম স্ত্রী কামরুল জাহানকে মারতে ছুরি নিয়ে উদ্যত হয়। এসময় সাহেদ এগিয়ে গেলে তাকে ছুরিকাঘাত করে নুরুজ্জামান।
এ ঘটনায় নুরুজ্জামানের স্ত্রী কামরুল জাহান তাকে এবং দ্বিতীয় স্ত্রী পরিচয় দেওয়া নারীকে আসামি করে মীরসরাই থানায় মামলা করেছিলেন।
র্যাব জানায়, সোমবার রাতে সিলেট নগীর দক্ষিণ সুরমা থানার হুমায়ুন রশিদ চত্ত্বর এলাকায় একটি বাস কাউন্টার থেকে নুরুজ্জামানকে এবং তার দেওয়া তথ্যে ওই এলাকার একটি আবাসিক হোটেল থেকে আনোয়ারাকে গ্রেপ্তার করা হয়।