সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার ডোনা সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে নিহত বাংলাদেশী যুবক আব্দুর রহমানের (৩৭) লাশ তিন দফা পতাকা বৈঠকের পর ৪২ ঘণ্টা পার হলেও ফেরত দেয়নি বিএসএফ।
শনিবার (৩০ আগস্ট) রাত ১০টার দিকে সর্বশেষ পতাকা বৈঠকে বিএসএফ জানায়, নিহত আব্দুর রহমানের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য তারা নিজেদের হেফাজতে নেবে এবং কূটনৈতিক চ্যানেলের মাধ্যমে লাশ ফেরত দেয়ার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার (২৯ আগস্ট) দুপুর ১২টার দিকে কানাইঘাট বড়চাতল পূর্ব গ্রামের মরহুম খলিলুর রহমানের ছেলে আব্দুর রহমান ভারতীয় ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চোরাচালানের মহিষ কিনে কয়েকজন সহযোগীকে সাথে নিয়ে বাংলাদেশে ফিরছিলেন। এ সময় আন্তর্জাতিক পিলার নং ১৩৩৮-৩৯ এর মধ্যবর্তী স্থানে ভারতের প্রায় ৩০০ গজ ভেতরে হঠাৎ করে বিএসএফ সদস্যরা তার ওপর গুলি চালায়। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যান আব্দুর রহমান। এ সময় বিএসএফের গুলিতে আহত হয়ে নিহতের ভাতিজা জামিল আহমদ (২৫) ও ডোনা ৯ নম্বর গ্রামের ছলু মিয়ার ছেলে সাইফুল ইসলাম (২৭) দেশে ফিরে আসতে সক্ষম হন।
আরো জানা গেছে, এছাড়া তাদের সাথে থাকা ডোনা বাঙালি পাড়া গ্রামের কামাল আহমদের ছেলে সালমান আহমদ (২৪), ডোনা বালিছড়া গ্রামের মরহুম খলিলুর রহমানের ছেলে আইনুল হক (৩৫),পূর্ব বড়চাতল গ্রামের মাহতাব উদ্দিনের ছেলে কবির আহমদ (২৮) বড়চাতল গ্রামের আব্দুল হারিছের ছেলে সানু আহমদ (৪০) অক্ষত অবস্থায় ফিরে আসেন।
ঘটনার পরপরই আটগ্রাম ক্যাম্পের বিজিবি গোয়েন্দা তথ্যে বিষয়টি জানতে পারেন। শুক্রবার রাত বেশি হয় যাওয়ায়, পরদিন শনিবার বিএসএফের সাথে যোগাযোগ করে নিহতের লাশ ফেরতের দাবি জানায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। প্রথমে বিএসএফ আশ্বাস দিলেও পরে আইনি জটিলতা দেখিয়ে লাশ হস্তান্তর করতে রাজি হয়নি বিএসএফ।
স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা যায়, চোরাচালানের এই মহিষগুলোর মালিক পূর্বকাড়াবাল্লা গ্রামের আব্দুর রহমান, কুটু মিয়ার ছেলে শাব্বির আহমদ, ডোনা ৯ নম্বরের আজির উদ্দিনের ছেলে কয়ছর আহমদ, সুরমা বাজারের ব্যবসায়ী আহমদ আজির ও বাঙালি পাড়া গ্রামের কামাল আহমদের ছেলে সালমান আহমদ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন জানিয়েছেন, এসব চোরাকারবারিরা থানা পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে মাসোহারা দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে সীমান্ত এলাকায় চোরাচালান ব্যবসা চালিয়ে আসছে। কানাইঘাট উপজেলা এখন চোরাচালানের স্বর্গ রাজ্য হয়ে উঠেছে বলে অনেকে এমন মন্তব্য করেছেন।