জুলাই-অগাস্টের আন্দোলনের ঘটনায় করা মামলা থেকে নিরীহ-নিরপরাধ ২৮ জনকে অব্যাহতির সুপারিশ করেছে মহানগর পুলিশ।
মঙ্গলবার বিকালে নিজ কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় এ কথা বলেন সিলেট মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. রেজাউল করিম।
তিনি বলেন, মামলা থেকে নিরীহ ২৮ জনের নাম বাদ দেওয়ার সুপারিশ করে তালিকা আদালতে প্রদান করা হয়েছে।
রেজাউল করিম বলেন, গত বছরের জুলাই-অগাস্টের ঘটনায় মামলায় অনেক নিরীহ মানুষকেও আসামি করা হয়েছে। এলাকায় নেই এমনকি বিদেশে আছেন এরকম অনেকের বিরুদ্ধেও মামলা দেওয়া হয়েছে। এসব করা হয়েছে অসৎ উদ্দেশে।
অনেক ক্ষেত্রে বাদীর সরলতার সুযোগ নিয়ে একটি চক্র ফায়দা হাসিলের জন্য এমনটি করছে বলে মনে করেন মহানগর পুলিশের এই কর্মকর্তা।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের পরিবর্তিত আইনে অন্তর্বর্তীকালীন তদন্ত প্রতিবেদন থেকে নির্দোষ আসামিদের বাদ দেওয়ার অংশ হিসেবে কোতোয়ালি থানার একটি মামলা থেকে ২৮ জনকে বাদ দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।
কোতোয়ালি থানার ওই মামলায় ১৩৫ জনের নাম ও অজ্ঞতা পরিচয় আরও দেড়শজনকে আসামি করা হয়েছিল। পরে পুলিশ মামলার বাদীর ও সাক্ষীদের জিজ্ঞাসবাদ করে। এতে দেখা যায়, যারা জড়িত নয় এমন অনেকের নামও এজাহারে রয়েছে।
নাম বাদ দেওয়ার সুপারিশ করা ২৮ জনের মধ্যে পুলিশ, সরকারি কর্মকর্তা, সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা ও সাংবাদিকসহ বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যক্তি রয়েছেন বলে জানান রেজাউল করিম।
বিদায়ী কমিশনার রেজাউল করিম বলেন, ৫ অগাস্ট পরবর্তী মামলাগুলো থেকে প্রকৃত দোষী নয় এমন আসামিদের অব্যাহতি দিতে আদালতে আবেদন দিতে শুরু করেছে পুলিশ। আরও সাত থেকে আটটি মামলার নিরীহ আসামিদের অব্যাহতি প্রদানের আবেদন আদালতে দাখিলের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, শহীদ তুরাব হত্যার ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে পুলিশের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের ত্রুটি মেনে নেওয়া হবে না। আমি সিলেট ছেড়ে পরবর্তী কর্মস্থলে গিয়েও তুরাব হত্যা মামলার খোঁজ খবর রাখব।
নগরীকে ফুটপাত মুক্ত করতে পুলিশের পাশাপাশি নাগরিক সমাজকেও এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে বিদায়ী পুলিশ কমিশনার বলেন, দীর্ঘদিনের জঞ্জাল মাত্র কদিনে সরানো পুলিশের পক্ষে সম্ভব নয়। পুলিশের নিয়মিত অভিযান চলছে এবং অব্যাহত থাকবে। তবে স্থায়ী সমাধানের জন্য সিটি করপোরেশনসহ সমন্বিত উদ্যোগের বিকল্প নেই।
অস্ত্র উদ্ধার নিয়ে সাংবাদিকদের করা প্রশ্নের জবাবে রেজাউল করিম বলেন, নগরীর বিভিন্ন থানা থেকে লুট হওয়া ১৪টি অস্ত্র উদ্ধারে পুলিশ তৎপর ছিল। কিন্তু উদ্ধার করা যায়নি। এ ছাড়া অবৈধ অস্ত্রধারীদের গ্রেপ্তারেও পুলিশের চেষ্টা ছিল। তবে অধিকাংশরা দেশের বাইরে চলে যাওয়ায় এটা সম্ভব হয়নি।