জুলাই আন্দোলনের পর থেকে পালিয়ে থাকা ও অনুমতি ছাড়াই বিদেশ গমনসহ কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকার অভিযোগে মৌলভীবাজার জেলার বিভিন্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মোট ৪৮ জন শিক্ষককে বরখাস্ত করা হয়েছে।
দীর্ঘদিন ধরে এসব শিক্ষক শ্রেণিকক্ষে অনুপস্থিত থাকায় বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থী-শিক্ষক অনুপাত ভয়াবহভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
মৌলভীবাজার জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে এই ৪৮ জন সহকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। শিক্ষকদের এ অনুপস্থিতির কারণে জেলার বিভিন্ন বিদ্যালয়ে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। অনেক বিদ্যালয় এখন শিক্ষক সংকটে ভুগছে।
জেলার একটি বিদ্যালয়ের শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, যারা স্কুল ছেড়ে পালিয়ে গেছেন বা ছুটি নিয়ে আর ফেরেননি, তাদের শূন্য পদ তৈরি হতে অনেক সময় লাগে। এর ফলে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
মামলার তথ্য: প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের তথ্য অনুযায়ী, গত দুই বছরে ১০৯টি মামলা দায়ের করা হয়। এর মধ্যে ৭৩টি নিষ্পত্তি হয়েছে, আর ৩৬টি মামলা এখনও চলমান রয়েছে।
মৌলভীবাজারের প্রাথমিক শিক্ষা খাতের চিত্র: মোট প্রাথমিক বিদ্যালয়: ১,৬১৮টি, সরকারি বিদ্যালয়: ১,০৫২টি, প্রধান শিক্ষক: ৭৭৬ জন (শূন্য পদ ২৭৪), মোট শিক্ষক: ৫,১৫৬ জন, সহকারী শিক্ষকের শূন্য পদ: ২২৩টি
এই শূন্যপদগুলোর সাথে বরখাস্ত হওয়া ৪৮ জন শিক্ষকের পদ যোগ হওয়ায় সংকট আরও তীব্র হয়েছে।
রাজনগর উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের বেরিগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শিমুল আহমেদ আব্দুল্লাহপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক বিমান সূত্রধর উত্তরভাগ ইউনিয়নের সুরিখাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক কনক লাল চন্দ্র তারা ছুটি নিয়ে অনুপস্থিত থেকে আর ফেরেননি বলে স্থানীয়রা জানান।
মৌলভীবাজার জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সফিউল আলম বলেন, জেলায় মোট ৪৮ জন প্রাথমিক শিক্ষককে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। ১০৯ মামলার মধ্যে ৭৩টির নিষ্পত্তি হয়েছে এবং ৩৬টি মামলা চলমান রয়েছে। শূন্য পদ পূরণ না হওয়ায় শিক্ষা কার্যক্রমে প্রভাব পড়ছে।
এ ঘটনার ফলে মৌলভীবাজার জেলায় শিক্ষার পরিবেশ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। শিক্ষক সংকট কাটাতে দ্রুত নতুন নিয়োগ ও প্রশাসনিক পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি হয়ে পড়েছে।