ভয়ংকর সাইবার বুলিংয়ের শিকার সিলেটে এক তরুণী। মামলা করেও রেহাই পাচ্ছেন না ওই ভুক্তভোগী নারী।
শনিবার (২৫ অক্টোবর) বিকাল ৩টায় সিলেট এক সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ করেন, সিলেটের দক্ষিণ সুরমা উপজেলার মোগলাবাজার খালের মুখের ডুংশ্রী গ্রামের মো. বাবুল মিয়ার যুবতী কন্যা মোছা. লিমা বেগম নুসরাত (২৬)।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ”বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রমোশনাল ভিডিওতে মডেল হিসেবে কাজ করি আমি। এসব কাজ করতে গিয়ে কয়েক বছর আগে পরিচয় হয় হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলার কামারগাঁও এলাকার দূর্গাপুর গ্রামের আবদুল মজিদের পূত্র জুবেলের (২৮) সঙ্গে।
কাজের স্বার্থে তার সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ করলেও এক পর্যায়ে আমাকে উত্ত্যক্ত করতে শুরু করেন তিনি এবং শেষ পর্যন্ত প্রেমের নামে কুপ্রস্তাব দিয়ে বসেন জুবেল।
কিন্তু আমি এতে রাজি না হওয়ায় দিন দিন তিনি বেপরোয়া হয়ে উঠেন এবং সাইবার বুলিং শুরু করেন। এ.আই-টেলিগ্রামসহ বিভিন্ন সফটওয়্যার ও অ্যাপস দিয়ে আমার ছবি বিভিন্নজনের সঙ্গে জুড়ে দিয়ে ফেসবুকসহ বিভিন্ন ভার্চুয়াল মাধ্যমে ছড়ানো, আমার অডিও ভয়েসকে কাটসাট করে প্রচারসহ বিভিন্ন অপকর্ম করতে থাকেন। এসবে অতিষ্ঠ হয়ে আমি গত বছর সিলেট সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করি। মামলাটি তদন্তের জন্য পিবিআইকে দায়িত্ব দেন আদালত। পিবিআই’র তদন্তে আমার অভিযোগের সত্যতা পায় এবং জুবেলকে অভিযুক্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করে। কিন্তু সাইবার ট্রাইব্যুনালে দায়েরকৃত সব মামলা বাতিল বলে সম্প্রতি আইন মন্ত্রণালয় আদেশ জারি করলে আমার মামলাটিও থমকে যায়। এই সুযোগে জুবেল মিয়ার অপতৎপরতা আরও বেড়ে গেছে।”
সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী তরুণী আরও বলেন, “জুবেল মিয়া আমার নামে ফেক ফেসবুক আইডি তৈরি করে আমার বিভিন্ন ছবি ও ভিডিও বিকৃত করে আপলোড করতে থাকেন। এমনকি আমার নিজ ভাইয়ের সঙ্গে ছবি সংযুক্ত করে অশ্লীল মন্তব্য করে ফেসবুকে ছেড়েছেন এই জুবেল মিয়া।
এছাড়া আমার ছবি ও মোবাইল নাম্বার দিয়ে বিভিন্ন পণ্যের বিজ্ঞাপন অনলাইনে প্রকাশ করেন। এ নিয়ে আমাকে প্রায়ই বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয়। তার রবিউল ফেরদৌস জীবন ও তায়েফ আহমদ নামের তার দুই বন্ধুও সম্প্রতি আমার ছবি দিয়ে ফেসবুকে অশ্লীল পোস্ট করছেন।
এই ৩ জনের দ্বারা আরও অনেক নারী সাইবার বুলিংয়ের শিকার হয়েছেন এবং হচ্ছেন। তাদের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগের ভিত্তিতে একাধিক মামলা রয়েছে। তারা সম্প্রতি দুটি ফেসবুক পেজ থেকে অবিরাম আমার ছবি ও ভিডিও এডিট করে অশ্লীলভাবে আপলোড করাচ্ছেন। এতে আমি চরম বিব্রতকর অবস্থায় দিন যাপন করছি এবং সমাজে আমার মান-সম্মান ক্ষুণ্ন হচ্ছে।”
লিমা বেগম নুসরাত জানান, বিচার পেতে ফের আদালতের দ্বারস্থ হচ্ছেন তিনি। পাশাপাশি জুবেল মিয়া ও তার দুই সহযোগী এবং গুজব ছড়ানোকারী অননুমোদিত দুটি ফেসবুক পেইজের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সকলের সুদৃষ্টি কামনা করেন লিমা।

প্রতিদিনের সিলেট ডেস্ক 



















