, রবিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৫, ২৬ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
আট দফা দাবিতে ১ নভেম্বর থেকে সিলেটে অনির্দিষ্টকালের জন্য রেল অবরোধ সিলেটে অধ্যাপক ফজলুর রহমানের ‘ধর্মনিরপেক্ষ মুসলমান’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন সিলেটে পুলিশের দক্ষতা ও সক্ষমতা বৃদ্ধি সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ কোর্সের উদ্বোধন বিশেষ কল্যাণ সভায় হাইওয়ে পুলিশের সেবার মানোন্নয়ন প্রত্যয়ে অঙ্গীকার সিলেটে গণমাধ্যম প্রতিনিধিদের নিয়ে টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন বিষয়ক পরামর্শ কর্মশালা ১৭ বছর বয়সে বিমানের পাইলট সিলেটের আহনাফ সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে জমি হস্তান্তর সিলেটে শিশু ধর্ষণের অভিযোগে যুবক কারাগারে গুমের ডকুমেন্টারির শ্যুটিংয়ের জন্যে সিলেটে বিএনপির সালাউদ্দিন বিশ্বনাথ উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হলেন ডাক্তার জহির

দুই মাসের মধ্যে চালু হবে সিলেটের ২৫০ শয্যার হাসপাতাল : জেলা প্রশাসক

নাগরিক সমাজের আপত্তি উপেক্ষা করে ঐতিহ্যবাহী আবু সিনা ছাত্রাবাস ভেঙে নির্মাণ করা হয়েছিলো ২৫০ শয্যার সিলেট জেলা হাসপাতাল। তবে নির্মাণ কাজ শেষেও প্রায় পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে এ হাসপাতালটি।

প্রায় ৮৫ কোটি টাকা ব্যয়ে এই হাসপাতালের নির্মাণকাজ ২০২৩ সালে শেষ হলেও এখন এর দায়িত্ব নিচ্ছে না কেউ। স্বাস্থ্য সংশ্লিস্টদের মতামত না নিয়ে স্থাপনা নির্মাণ করায় এই হাসপাতাল ভবনের দায়িত্ব নিতে নারাজ সংশ্লিস্টরা। ফলে হাসপাতাল কমপ্লেক্স বুঝিয়ে দেওয়ার মতো কর্তৃপক্ষ পাচ্ছে না গণপূর্ত বিভাগ। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, জেলা সিভিল সার্জন অফিসসহ কেউই এর দায়িত্ব নিতে রাজি হচ্ছে না। ফলে হাসপাতাল চালু করা নিয়ে দেখা দেয় অনিশ্চয়তা।

তবে সিলেটের জেলা প্রশাসক সারওয়ার আলম জানিয়েছেন, দুই মাসের মধ্যে এই হাসপাতাল চালু করা হবে।

বৃহস্পতিবার সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পরিদর্শনে গিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ তথ্য জানান।

এ প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসক বলেন, জটিলতা কাটিয়ে মাস দুয়েকের মধ্যে সিলেট জেলা হাসপাতালের কার্যক্রম চালু হবে। এটি চালু হলে ওসমানীতে রোগীর চাপ কমবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

চানা যায়, এই হাসপাতালের দায়িত্ব হস্তান্তরসহ অন্যান্য বিষয় নিয়ে মন্ত্রণালয় থেকে ৮ জন সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি দেওয়া হয়েছে। গত সপ্তাহে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে সিভিল সার্জন ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রকৌশলীসহ ৮ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি দেওয়া হয়েছে। নবনির্মিত এই হাসপাতাল সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, সিভিল সার্জন অফিস না-কি অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান, আসলে কে পরিচালনা করবে তা এখনোও নির্ধারণ করা হয় নি।

গণপূর্ত বিভাগ জানায়, ১৫ তলা হাসপাতাল ভবনে আনুমানিক ৮৩ কোটি টাকা ব্যয়ে আটতলা ভবন নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে। নির্মাণ কাজ শেষ হলেও এখন পরিচ্ছন্নতাসহ আনুষাঙ্গিক সামান্য কিছু কাজ বাকি রয়েছে। যে কাজগুলো মাসখানেকের ভেতরে শেষ করা হবে। এগুলো শেষ হলেই পুরোপুরিভাবে ভবনের সকল কাজ সম্পন্ন হয়ে যাবে।

গণপূর্ত জানায়, হাসপাতাল ভবনের বেজমেন্টে রয়েছে কারপার্কিং; প্রথম তলায় টিকিট কাউন্টার, ওয়েটিং রুম; দ্বিতীয় তলায় আউটডোর, রিপোর্ট ডেলিভারি ও কনসালট্যান্ট চেম্বার; তৃতীয় তলায় ডায়াগনস্টিক; চতুর্থ তলায় কার্ডিয়াক ও জেনারেল ওটি, আইসিসিইউ, সিসিইউ; পঞ্চম তলায় গাইনি বিভাগ, অপথালমোলজি, অর্থপেডিক্স ও ইএনটি বিভাগ এবং ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম তলায় ওয়ার্ড ও কেবিন। এর মধ্যে আইসিইউ বেড ১৯টি, সিসিইউ বেড ৯টি এবং ৪০টি কেবিন রয়েছে।

জেলা হাসপাতাল প্র্রসঙ্গে সিলেট গণপূর্ত বিভাগের বিভাগীয় নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবু জাফর বলেন,‘নির্মাণ কাজ শেষ হলেও এখন পরিচ্ছন্নতাসহ আনুষাঙ্গিক সামান্য কিছু কাজ বাকি রয়েছে। যে কাজগুলো মাসখানেকের ভেতরে শেষ করা হবে। এগুলো শেষ হলেই পুরোপুরিভাবে ভবনের সকল কাজ সম্পন্ন হয়ে যাবে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ভবন হস্তান্তর করে দেবে যে কোনো সময়। এখন সংশ্লিষ্টদের কাছে তুলে দিতে চাই; কিন্তু কেউ দায়িত্ব নিতে চাচ্ছে না। আমরা কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি দিয়েছি। তারা ৮ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করে দিয়েছে। এই কমিটি হাসপাতালের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। মন্ত্রণালয় থেকে যে নির্দেশনা দেবে, আমরা সেভাবেই কাজ করবো।’

সিলেট বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. মো. আনিসুর রহমান বলেন, মন্ত্রণালয় থেকে ৮ সদস্যের একটি কমিটি দেওয়া হয়েছে। কমিটি তাদের কাজ করে যাচ্ছে। কাজ সম্পূর্ণ হয়ে গেলে নব নির্মিত হাসপালকেই সিলেট শহীদ শামসুদ্দীন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে হস্তান্তর করা হতে পারে।

উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে ৬ দশমিক ৯৮ একর জমির ওপর হাসপাতালের নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। হাসপাতালটির অবকাঠামো নির্মাণের দায়িত্ব পায় পদ্মা অ্যাসোসিয়েশন অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং। পরে ২০২০ সালের জানুয়ারিতে কাজ শুরু হয়। এর আগে আবু সিনা ছাত্রাবাস প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন উল্লেখ করে হাসপাতাল নির্মাণের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামেন সিলেটের নাগরিক সমাজ।

জনপ্রিয়

আট দফা দাবিতে ১ নভেম্বর থেকে সিলেটে অনির্দিষ্টকালের জন্য রেল অবরোধ

দুই মাসের মধ্যে চালু হবে সিলেটের ২৫০ শয্যার হাসপাতাল : জেলা প্রশাসক

প্রকাশের সময় : ১০:৫৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ অক্টোবর ২০২৫

নাগরিক সমাজের আপত্তি উপেক্ষা করে ঐতিহ্যবাহী আবু সিনা ছাত্রাবাস ভেঙে নির্মাণ করা হয়েছিলো ২৫০ শয্যার সিলেট জেলা হাসপাতাল। তবে নির্মাণ কাজ শেষেও প্রায় পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে এ হাসপাতালটি।

প্রায় ৮৫ কোটি টাকা ব্যয়ে এই হাসপাতালের নির্মাণকাজ ২০২৩ সালে শেষ হলেও এখন এর দায়িত্ব নিচ্ছে না কেউ। স্বাস্থ্য সংশ্লিস্টদের মতামত না নিয়ে স্থাপনা নির্মাণ করায় এই হাসপাতাল ভবনের দায়িত্ব নিতে নারাজ সংশ্লিস্টরা। ফলে হাসপাতাল কমপ্লেক্স বুঝিয়ে দেওয়ার মতো কর্তৃপক্ষ পাচ্ছে না গণপূর্ত বিভাগ। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, জেলা সিভিল সার্জন অফিসসহ কেউই এর দায়িত্ব নিতে রাজি হচ্ছে না। ফলে হাসপাতাল চালু করা নিয়ে দেখা দেয় অনিশ্চয়তা।

তবে সিলেটের জেলা প্রশাসক সারওয়ার আলম জানিয়েছেন, দুই মাসের মধ্যে এই হাসপাতাল চালু করা হবে।

বৃহস্পতিবার সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পরিদর্শনে গিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ তথ্য জানান।

এ প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসক বলেন, জটিলতা কাটিয়ে মাস দুয়েকের মধ্যে সিলেট জেলা হাসপাতালের কার্যক্রম চালু হবে। এটি চালু হলে ওসমানীতে রোগীর চাপ কমবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

চানা যায়, এই হাসপাতালের দায়িত্ব হস্তান্তরসহ অন্যান্য বিষয় নিয়ে মন্ত্রণালয় থেকে ৮ জন সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি দেওয়া হয়েছে। গত সপ্তাহে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে সিভিল সার্জন ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রকৌশলীসহ ৮ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি দেওয়া হয়েছে। নবনির্মিত এই হাসপাতাল সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, সিভিল সার্জন অফিস না-কি অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান, আসলে কে পরিচালনা করবে তা এখনোও নির্ধারণ করা হয় নি।

গণপূর্ত বিভাগ জানায়, ১৫ তলা হাসপাতাল ভবনে আনুমানিক ৮৩ কোটি টাকা ব্যয়ে আটতলা ভবন নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে। নির্মাণ কাজ শেষ হলেও এখন পরিচ্ছন্নতাসহ আনুষাঙ্গিক সামান্য কিছু কাজ বাকি রয়েছে। যে কাজগুলো মাসখানেকের ভেতরে শেষ করা হবে। এগুলো শেষ হলেই পুরোপুরিভাবে ভবনের সকল কাজ সম্পন্ন হয়ে যাবে।

গণপূর্ত জানায়, হাসপাতাল ভবনের বেজমেন্টে রয়েছে কারপার্কিং; প্রথম তলায় টিকিট কাউন্টার, ওয়েটিং রুম; দ্বিতীয় তলায় আউটডোর, রিপোর্ট ডেলিভারি ও কনসালট্যান্ট চেম্বার; তৃতীয় তলায় ডায়াগনস্টিক; চতুর্থ তলায় কার্ডিয়াক ও জেনারেল ওটি, আইসিসিইউ, সিসিইউ; পঞ্চম তলায় গাইনি বিভাগ, অপথালমোলজি, অর্থপেডিক্স ও ইএনটি বিভাগ এবং ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম তলায় ওয়ার্ড ও কেবিন। এর মধ্যে আইসিইউ বেড ১৯টি, সিসিইউ বেড ৯টি এবং ৪০টি কেবিন রয়েছে।

জেলা হাসপাতাল প্র্রসঙ্গে সিলেট গণপূর্ত বিভাগের বিভাগীয় নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবু জাফর বলেন,‘নির্মাণ কাজ শেষ হলেও এখন পরিচ্ছন্নতাসহ আনুষাঙ্গিক সামান্য কিছু কাজ বাকি রয়েছে। যে কাজগুলো মাসখানেকের ভেতরে শেষ করা হবে। এগুলো শেষ হলেই পুরোপুরিভাবে ভবনের সকল কাজ সম্পন্ন হয়ে যাবে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ভবন হস্তান্তর করে দেবে যে কোনো সময়। এখন সংশ্লিষ্টদের কাছে তুলে দিতে চাই; কিন্তু কেউ দায়িত্ব নিতে চাচ্ছে না। আমরা কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি দিয়েছি। তারা ৮ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করে দিয়েছে। এই কমিটি হাসপাতালের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। মন্ত্রণালয় থেকে যে নির্দেশনা দেবে, আমরা সেভাবেই কাজ করবো।’

সিলেট বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. মো. আনিসুর রহমান বলেন, মন্ত্রণালয় থেকে ৮ সদস্যের একটি কমিটি দেওয়া হয়েছে। কমিটি তাদের কাজ করে যাচ্ছে। কাজ সম্পূর্ণ হয়ে গেলে নব নির্মিত হাসপালকেই সিলেট শহীদ শামসুদ্দীন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে হস্তান্তর করা হতে পারে।

উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে ৬ দশমিক ৯৮ একর জমির ওপর হাসপাতালের নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। হাসপাতালটির অবকাঠামো নির্মাণের দায়িত্ব পায় পদ্মা অ্যাসোসিয়েশন অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং। পরে ২০২০ সালের জানুয়ারিতে কাজ শুরু হয়। এর আগে আবু সিনা ছাত্রাবাস প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন উল্লেখ করে হাসপাতাল নির্মাণের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামেন সিলেটের নাগরিক সমাজ।