, বৃহস্পতিবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ৩ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
আমি নির্বাচিত হলে সাংবাদিক সমাজসহ সকলের কল্যাণে কাজ করবো: ইলিয়াসপত্নী লুনা বিশ্বনাথে ‘ডেভিল হান্ট ফেজ-২’ অভিযানে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নেতা গ্রেফতার দিরাইয়ে ‘ডেভিল হান্ট ফেজ-২’ অভিযানে ইউপি চেয়ারম্যানসহ গ্রেপ্তার ৩ দিরাইয়ে জলবায়ু পরিবর্তনে স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি নিয়ে ব্র্যাকের সমন্বয় সভা ইন শা আল্লাহ ২৫ ডিসেম্বর দেশে ফিরবো: তারেক রহমান সিলেটে পাঁচ পীরের মাজারে পাওয়া অজ্ঞাত মরদেহের পরিচয় শনাক্ত বিজয় দিবসে সিলেট ও হবিগঞ্জে দুর্ঘটনা ও অস্বাভাবিক মৃত্যু: একদিনে ঝরল অন্তত পাঁচ প্রাণ সিলেটে বিজয় দিবসের দিনে ডেভিল হান্ট অভিযানে আওয়ামী লীগের ৫ জন গ্রেপ্তার সিলেট বিভাগের সীমান্তজুড়ে বিজিবির অভিযান, সাড়ে পাঁচ কোটির বেশি টাকার চোরাচালানি জব্দ সিলেটে জুয়া ও অনলাইন জুয়ার বিরুদ্ধে পুলিশি অভিযান: ১১ জন আটক
৪০ শতাংশ বিল তুলে উধাও ঠিকাদার

বালাগঞ্জে ৮ কোটি টাকার ব্রিজে বাঁশের সাঁকো!

সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম গৌরীপুর ইউনিয়নের বাংলা বাজার বেত্রীকু নদীর উপর নির্মাণাধীন ব্রিজের কাজ প্রায় দুই বছরের অধিক সময় ধরে ফেলে রাখায় এলাকাবাসী চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। গ্রামবাসী সংশ্লিষ্টদের বারবার অবগত করলেও কারো টনক নড়েনি।

অন্যদিকে এলাকাবাসীর মতামত বা পরামর্শ উপেক্ষা করে অপরিকল্পিতভাবে ব্রিজ নির্মাণ ও এই ব্রিজ নির্মাণে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করে কাজ হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন গ্রামবাসী।

উপজেলা প্রকৌশলী সুত্রে জানা গেছে, উপজেলার পশ্চিম গৌরীপুর ইউনিয়নের বাংলা বাজারের পশ্চিম গৌরীপুর ইউনিয়নের বাংলাবাজার টু দনারাম সড়কের বেথরী নদীর উপর এলজিইডির এই ব্রিজ নির্মাণের জন্য গত ২৫.১০.২০২১ ইংরেজি ৭ কোটি ৭৮ লক্ষ ২০ হাজার ২৪৯ টাকা টেন্ডারের মাধ্যমে শেরপুর জেলার ধ্রুব মোশারফ (জেবি) নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ পায়।

৩০.০৮.২০২৪ সালের মধ্যে কাজ সমাপ্ত করার কথা থাকলেও সংশ্লিষ্টদের ম্যানেজ করে কাজ পাওয়ার পর কিছু অংশ কাজ করে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন সময়ে বরাদ্দেরব প্রায় ৪০ শতাংশ টাকা উত্তোলন করে নির্মাণ কাজ বন্ধ করে রাখেন।
বর্ষার সময় পানি আসার অজুহাত দেখিয়ে বিভিন্ন সময় কাজ বন্ধ করে রাখেন। এরপর এবারের শুকনো মৌসুম চলে গিয়ে আবার বর্ষার মৌসুম চলে আসলে কিছু কাজ শুরু করে ফেলে রেখে ঠিকাদার লাপাত্তা হয়ে যান।

ব্রিজটির নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হলে বাংলা বাজারের সাথে তেঘরীয়া,লোহামুড়া,আতাসন- দনারাম,মোল্লাপাড়া, সহ পাশ্ববর্তী কয়েকটি গ্রামের সাথের যোগাযোগ সহজতর হবে। বর্ষা মৌসুমে ওই গ্রামগুলোর ছাত্রছাত্রীরা স্কুলে যেতে নৌকা ও সাঁকো ব্যবহার করেন। এতে তাদের সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

বাংলা বাজারের বাসিন্দা হাবিবুর রহমান আনু,আব্দুস সামাদ,মুশাহিদ শিকদার, অঞ্জন দাস, সুবেন্দ্র দাস, ছাদিক মিয়া, প্রাণেষ দাস বলেন, ব্রিজটি আমাদের এলাকার একমাত্র চলাচলের মাধ্যম। শুকনো মৌসুমে সাঁকো আর বর্ষার দিনে নৌকা দিয়ে আমাদের চলাচল করতে হয়।

তারা বলেন, ঠিকাদার কাজ পাওয়ার পর থেকে উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার অফিসের সঠিক তদারকি ছাড়া ইচ্ছামতো নিজের খেয়াল খুশিমতো নিম্ন মানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করে কাজ করছেন। আমরা কাজটির মান ভালো করার জন্য সংশ্লিষ্টদের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করেছি কিন্তু আমাদের কথা ঠিকাদার শুনেনি। সংশ্লিষ্টদের প্রতি আমাদের জোর দাবি সঠিকভাবে কাজটি যেন সম্পন্ন করার ব্যবস্থা করা হয়।
ছাড়াও স্থানীয় উপকারভোগীরা জানান, ব্রিজটি নিচুু করে তৈরি করায় বর্ষা মৌসুমে সেতুর নিচ দিয়ে কৃষিপণ্যবাহী নৌকা, ট্রলার, বালুবাহী নৌকা ও মৎস্যজীবীদের নৌকা চলাচল করতে পারবে না। ফলে ব্রিজ সম্পন্ন হলে এলাকাবাসীর দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়াবে। এ নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের ক্ষোভের অন্ত নেই।

এ ব্যাপারে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিক ধ্রুব মোশারফ এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন দেশের পটপরিবর্তন ও বিভিন্ন কারণে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ।করা সম্ভব হয়নি, কাজের মেয়াদকাল বাড়ানোর জন্য চেষ্টা করছি মেয়াদ বাড়লে কাজ করবো।

পশ্চিম পৈলনপুর ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মুজেফর আলী বলেন, এই ব্রিজের কাজ ফেলে টিকাদার পালিয়ে গেছেন, এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে অনেক বার কথা বলেছি। ব্রিজটির কাজ দ্রুত শেষ না হওয়ায় এলাকার মানুষের দুর্ভোগ হচ্ছে।

বালাগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী মো: হাবিবুল্লাহ বলেন নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ না করার একাধিকবার যোগাযোগ করার পরেও কাজ না করায় চুক্তি বাতিলের জন্য উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট কাজ বাতিলের জন্য লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।

জনপ্রিয়

আমি নির্বাচিত হলে সাংবাদিক সমাজসহ সকলের কল্যাণে কাজ করবো: ইলিয়াসপত্নী লুনা

৪০ শতাংশ বিল তুলে উধাও ঠিকাদার

বালাগঞ্জে ৮ কোটি টাকার ব্রিজে বাঁশের সাঁকো!

প্রকাশের সময় : ০৫:৩৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই ২০২৫

সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম গৌরীপুর ইউনিয়নের বাংলা বাজার বেত্রীকু নদীর উপর নির্মাণাধীন ব্রিজের কাজ প্রায় দুই বছরের অধিক সময় ধরে ফেলে রাখায় এলাকাবাসী চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। গ্রামবাসী সংশ্লিষ্টদের বারবার অবগত করলেও কারো টনক নড়েনি।

অন্যদিকে এলাকাবাসীর মতামত বা পরামর্শ উপেক্ষা করে অপরিকল্পিতভাবে ব্রিজ নির্মাণ ও এই ব্রিজ নির্মাণে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করে কাজ হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন গ্রামবাসী।

উপজেলা প্রকৌশলী সুত্রে জানা গেছে, উপজেলার পশ্চিম গৌরীপুর ইউনিয়নের বাংলা বাজারের পশ্চিম গৌরীপুর ইউনিয়নের বাংলাবাজার টু দনারাম সড়কের বেথরী নদীর উপর এলজিইডির এই ব্রিজ নির্মাণের জন্য গত ২৫.১০.২০২১ ইংরেজি ৭ কোটি ৭৮ লক্ষ ২০ হাজার ২৪৯ টাকা টেন্ডারের মাধ্যমে শেরপুর জেলার ধ্রুব মোশারফ (জেবি) নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ পায়।

৩০.০৮.২০২৪ সালের মধ্যে কাজ সমাপ্ত করার কথা থাকলেও সংশ্লিষ্টদের ম্যানেজ করে কাজ পাওয়ার পর কিছু অংশ কাজ করে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন সময়ে বরাদ্দেরব প্রায় ৪০ শতাংশ টাকা উত্তোলন করে নির্মাণ কাজ বন্ধ করে রাখেন।
বর্ষার সময় পানি আসার অজুহাত দেখিয়ে বিভিন্ন সময় কাজ বন্ধ করে রাখেন। এরপর এবারের শুকনো মৌসুম চলে গিয়ে আবার বর্ষার মৌসুম চলে আসলে কিছু কাজ শুরু করে ফেলে রেখে ঠিকাদার লাপাত্তা হয়ে যান।

ব্রিজটির নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হলে বাংলা বাজারের সাথে তেঘরীয়া,লোহামুড়া,আতাসন- দনারাম,মোল্লাপাড়া, সহ পাশ্ববর্তী কয়েকটি গ্রামের সাথের যোগাযোগ সহজতর হবে। বর্ষা মৌসুমে ওই গ্রামগুলোর ছাত্রছাত্রীরা স্কুলে যেতে নৌকা ও সাঁকো ব্যবহার করেন। এতে তাদের সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

বাংলা বাজারের বাসিন্দা হাবিবুর রহমান আনু,আব্দুস সামাদ,মুশাহিদ শিকদার, অঞ্জন দাস, সুবেন্দ্র দাস, ছাদিক মিয়া, প্রাণেষ দাস বলেন, ব্রিজটি আমাদের এলাকার একমাত্র চলাচলের মাধ্যম। শুকনো মৌসুমে সাঁকো আর বর্ষার দিনে নৌকা দিয়ে আমাদের চলাচল করতে হয়।

তারা বলেন, ঠিকাদার কাজ পাওয়ার পর থেকে উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার অফিসের সঠিক তদারকি ছাড়া ইচ্ছামতো নিজের খেয়াল খুশিমতো নিম্ন মানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করে কাজ করছেন। আমরা কাজটির মান ভালো করার জন্য সংশ্লিষ্টদের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করেছি কিন্তু আমাদের কথা ঠিকাদার শুনেনি। সংশ্লিষ্টদের প্রতি আমাদের জোর দাবি সঠিকভাবে কাজটি যেন সম্পন্ন করার ব্যবস্থা করা হয়।
ছাড়াও স্থানীয় উপকারভোগীরা জানান, ব্রিজটি নিচুু করে তৈরি করায় বর্ষা মৌসুমে সেতুর নিচ দিয়ে কৃষিপণ্যবাহী নৌকা, ট্রলার, বালুবাহী নৌকা ও মৎস্যজীবীদের নৌকা চলাচল করতে পারবে না। ফলে ব্রিজ সম্পন্ন হলে এলাকাবাসীর দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়াবে। এ নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের ক্ষোভের অন্ত নেই।

এ ব্যাপারে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিক ধ্রুব মোশারফ এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন দেশের পটপরিবর্তন ও বিভিন্ন কারণে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ।করা সম্ভব হয়নি, কাজের মেয়াদকাল বাড়ানোর জন্য চেষ্টা করছি মেয়াদ বাড়লে কাজ করবো।

পশ্চিম পৈলনপুর ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মুজেফর আলী বলেন, এই ব্রিজের কাজ ফেলে টিকাদার পালিয়ে গেছেন, এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে অনেক বার কথা বলেছি। ব্রিজটির কাজ দ্রুত শেষ না হওয়ায় এলাকার মানুষের দুর্ভোগ হচ্ছে।

বালাগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী মো: হাবিবুল্লাহ বলেন নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ না করার একাধিকবার যোগাযোগ করার পরেও কাজ না করায় চুক্তি বাতিলের জন্য উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট কাজ বাতিলের জন্য লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।