সিলেটের নবাগত পুলিশ সুপার কাজী আখতার উল আলমের সঙ্গে জেলায় কর্মরত সাংবাদিকদের এক মতবিনিময় ও পরিচিত সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার সকালে জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের হলরুমে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
মতবিনিময় সভায় সিলেটের নতুন পুলিশ সুপার (এসপি) কাজী আখতার উল আলম বলেন, সাইবার অপরাধ ও কিশোর গ্যাংকে জেলা পুলিশের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।
পুলিশ সুপার এ প্রসঙ্গে বলেন, জেলা দুটি চ্যালেঞ্জ, একটি হলো- সাইবার অবরাধ বা সাইবার প্রতারণা, অনলাইনে এখন অনেক অপরাধ ও প্রতারণা হচ্ছে, বিকাশ বা নগদে আর্থিক লেনেদেনেও প্রতারণা হচ্ছে, এছাড়া অনলাইন জুয়া পুরো দেশেই ছড়িয়ে পড়েছে। আমরা অনলাইন জুয়া বন্ধ করতে চাই। আরেকটি হলো- কিশোর গ্যাং। কিশোর গ্যাংও সারাদেশে ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়েছে। আমি সিলেটে কিশোর গ্যাংয়রে দৌরাত্ম বন্ধ করতে চাই।
এসময় সাংবাদিকরাও সিলেটের বিভিন্ন ইস্যুতে নিজেদের মতামত দেন ও পুলিশ সুপারকে প্রশ্ন করেন।
সিলেটে প্রবাসীদের নিরাপত্তা প্রসঙ্গে এসময় পুলিশ সুপার বলেন, সিলেট প্রবাসীবহুল এলাকা। আমার প্রথম প্রায়োরিটিতেই থাকবে প্রবাসী যারা আছেন, তারা একটা নির্দিষ্ট সময় দেশে আসেন পরিবারের সাথে সময় ব্যয় করতে, তারা যাতে এই সময়টা নিরপেদে থাকতে পারেন এই বিষয়টা আমরা অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে দেখবো।সিলেটের সীমান্ত এলাকার বিভিন্ন অপরাধ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সিলেট সীমান্তবর্তী এলাকা। এখানে ভারতের সাথে ১৮০ থেকে ১৯০ কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে। সীমান্তে মাদক বা চোরাচালান হয় না এটা বললে ভুল বলা হবে। অবশ্যই এসব হয়। এ ব্যাপারে কার্যকরী ব্যবস্থা নিতে হবে। চোরাচালান ও মাদক দমাতে হবে। এ ব্যাপারে আমাদের জিরো টলারেন্স থাকবে।তিনি বলেন, সামনে নির্বাচন আছে। বাংলাদেশের ইতিহাসে্এবার বেটার নির্বাচন করার কথাি প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন। নির্বাচন যাতে অবাধ হতে পারে, জনগন যাতে আস্থাশীল থাকে, নির্বাচনের পরিবেশ ভালো তাকে এ ব্যাপারে সবার সহযোগিতায় আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।সড়ক দুর্ঘটনা প্রসঙ্গ তিনি বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় অকালেই অনেক প্রাণ ঝড়ে যায়। এ ব্যাপারে আমরা সচেতনামূলক কার্যক্রম চালাবো। চালকের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে। সচেতন হলে সড়ক দুর্ঘটপনা কমে যাবে।
তিনি বলেন, কোন সাংবাদিক যদি হয়রানি মামলার শিকার হন, তদন্তে তার অপরাধ প্রমাণ না পেলে তার নাম বাদ দেওয়া হবে।শীতকালে সিলেটে অপরাধ প্রবণতা বাড়ে, এক সাংবাদিকের এমন মন্তব্যের প্রেক্ষিতে আখতার উল আলম বলেন, শীতকালে অপরাধ প্রবণতা বাড়ে। ডাকাতি বেড়ে যায়। এ ব্যাপারে আমরা সচেষ্ট আছি। জেলায় চেকপোস্টের পরিমাণ বাড়ানো হয়ে। ৩০টি চেকপোস্ট রয়েছে। এছাড়া ৪৬টি মোবাইল টিম মহাসড়কের লিংক রোডে টহলে আছে।এসময় সীমান্ত হত্যা, সাংবাদিকদের নামে হয়রানিমূলক মামলা, নিরপরাধ ব্যক্তিদের পুলিশের হয়রানি, গত বছরের ৫ আগস্টের পর অনেকক্ষেত্রে পুলিশের ঘুষ বাণিজ্য বেড়ে যাওয়ার অভিযোগসহ বিভিন্ন বিষয়ে সাংবাদিকরা মতামত দেন।
সাংবাদিকদের উদ্যেশে পুলিশ সুপার বলেন, আপনারা গঠনমূলক সমালোচনা করেন। গুজব পরিহার করুন। যেকোনো প্রয়োজনে আমাদের সাথে সরাসরি যোগাযাযোগ করবেন।
এ সময় সিলেটের প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় জেলায় কর্মরত সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য,কাজী আখতার উল আলম গত শনিবার (২৯ নভেম্বর) দুপুরে সিলেট জেলায় নতুন পুলিশ সুপার (এসপি) হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে সিলেট জেলা পুলিশের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন।
এর আগে তিনি ময়মনসিংহ জেলার পুলিশ সুপার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)-এ দায়িত্ব পালনকালে তাঁর পেশাদারিত্ব, তদন্ত দক্ষতা এবং সুনাম ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়।
কাজী আখতার উল আলম ২৫তম বিসিএস (পুলিশ) ক্যাডারের একজন চৌকস ও মেধাবী কর্মকর্তা, যিনি দীর্ঘদিন ধরে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা, অপরাধ দমন এবং মানবিক পুলিশিংয়ের জন্য পরিচিতি লাভ করেন।

নিজস্ব প্রতিবেদক 



















