, রবিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
বিয়ে করে ফ্রান্সে নিয়ে জানতে পারেন স্ত্রী অন্যের সিলেটে র‌্যাবের অভিযানে অস্ত্রসহ বিস্ফোরক উদ্ধার সিলেটের গোলাপগঞ্জে পদায়নের আগেই হুমকির মুখে নতুন ইউএনও শাখী ছেপ বিশ্বনাথে জেন্ডার সচেতনা ও সহিংসতা প্রতিরোধ বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত দিরাইয়ে প্রশাসনের অভিযানে হকারমুক্ত ফুটপাত হাদীকে গুলি করা সন্ত্রাসীদের পালানো আটকাতে মৌলভীবাজার সীমান্তে বিজিবির কঠোর অবস্থান সিলেটে হাওরের ভূগর্ভস্থে পানির ভয়াবহ সংকট আইন অমান্য করে সিলেটে নির্বাচনী প্রচারে ব্যস্ত বিএনপির প্রার্থীরা প্রবাসীর স্ত্রীকে ধর্ষণচেষ্টা: গোয়াইনঘাটে কিশোর গ্যাং লিডারের বিরুদ্ধে মামলা শাবিপ্রবি সাস্ট এআইসিএইচই স্টুডেন্ট চ্যাপ্টারের নতুন কমিটি গঠন

সিলেটে চোর সন্দেহে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী যুবককে গাছে ঝুলিয়ে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন, গ্রেপ্তার ১

সিলেটের কোম্পানীগঞ্জে চোর সন্দেহে জালাল মিয়া (২৭) নামের এক দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী যুবককে মধ্যযুগীয় কায়দায় গাছে ঝুলিয়ে নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে আরফান মিয়া (৪৩) নামের এক ব্যক্তিকে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

জালালের একটি চোখে দৃষ্টিশক্তি নেই। তিনি দক্ষিণ বুড়দেও গ্রামের মৃত আলী আকবরের ছেলে। গ্রেপ্তার হওয়া আরফানও একই এলাকার বাসিন্দা।

গতকাল সকালে দক্ষিণ বুড়দেও গ্রামে জালালকে চুরির অপবাদ দিয়ে ধরে নিয়ে নির্যাতন করা হয়। এ ঘটনায় সন্ধ্যায় জালালের মা শিরিয়া বেগম একটি মামলা করেন। মামলায় আরফান মিয়া, তাঁর ভাই ইউনুছ আলীসহ তাঁদের পরিবারের ৬ সদস্যসহ মোট ১২ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় আরও ৫০–৬০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার এজাহার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ভোরে কয়েকজন জালালকে বাড়ি থেকে ধরে নদীর পাড়ের একটি নৌকায় নিয়ে যায়। সেখানে তাঁর হাত পিছমোড়া বেঁধে মারধর করা হয়। এরপর তাঁকে ইউনুছ আলীর বাড়ির সামনে নিয়ে গিয়ে গাছের ডালে রশি দিয়ে দুই হাত বেঁধে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়—যা প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষায় ‘মধ্যযুগীয় নির্যাতনের কায়দা’।

খবর পেয়ে জালালের মা ঘটনাস্থলে গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।

নির্যাতনের ৫৮ সেকেন্ডের একটি ভিডিও প্রথম আলোর প্রতিবেদকের হাতে এসেছে। এতে দেখা যায়, জালাল গাছ থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় চিৎকার করে মাটি ছোঁয়ার চেষ্টা করছেন। লাঠি হাতে কয়েকজন তাঁকে মারধরের প্রস্তুতি নিলেও আশপাশের কয়েকজন বাধা দেন। একপর্যায়ে বাঁধা হাতসহ তাঁকে নিচে নামানো হয়।

কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রতন শেখ বলেন, চুরির অভিযোগে একজনকে গাছে ঝুলিয়ে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের ঘটনায় প্রধান অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জালাল দৃষ্টি প্রতিবন্ধী হওয়ায় বিষয়টি অত্যন্ত সংবেদনশীল। কারা কী উদ্দেশ্যে তাকে নির্যাতন করেছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অন্যদেরও শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে।

জনপ্রিয়

বিয়ে করে ফ্রান্সে নিয়ে জানতে পারেন স্ত্রী অন্যের

সিলেটে চোর সন্দেহে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী যুবককে গাছে ঝুলিয়ে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন, গ্রেপ্তার ১

প্রকাশের সময় : ০৩:০৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৫ ডিসেম্বর ২০২৫

সিলেটের কোম্পানীগঞ্জে চোর সন্দেহে জালাল মিয়া (২৭) নামের এক দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী যুবককে মধ্যযুগীয় কায়দায় গাছে ঝুলিয়ে নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে আরফান মিয়া (৪৩) নামের এক ব্যক্তিকে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

জালালের একটি চোখে দৃষ্টিশক্তি নেই। তিনি দক্ষিণ বুড়দেও গ্রামের মৃত আলী আকবরের ছেলে। গ্রেপ্তার হওয়া আরফানও একই এলাকার বাসিন্দা।

গতকাল সকালে দক্ষিণ বুড়দেও গ্রামে জালালকে চুরির অপবাদ দিয়ে ধরে নিয়ে নির্যাতন করা হয়। এ ঘটনায় সন্ধ্যায় জালালের মা শিরিয়া বেগম একটি মামলা করেন। মামলায় আরফান মিয়া, তাঁর ভাই ইউনুছ আলীসহ তাঁদের পরিবারের ৬ সদস্যসহ মোট ১২ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় আরও ৫০–৬০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার এজাহার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ভোরে কয়েকজন জালালকে বাড়ি থেকে ধরে নদীর পাড়ের একটি নৌকায় নিয়ে যায়। সেখানে তাঁর হাত পিছমোড়া বেঁধে মারধর করা হয়। এরপর তাঁকে ইউনুছ আলীর বাড়ির সামনে নিয়ে গিয়ে গাছের ডালে রশি দিয়ে দুই হাত বেঁধে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়—যা প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষায় ‘মধ্যযুগীয় নির্যাতনের কায়দা’।

খবর পেয়ে জালালের মা ঘটনাস্থলে গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।

নির্যাতনের ৫৮ সেকেন্ডের একটি ভিডিও প্রথম আলোর প্রতিবেদকের হাতে এসেছে। এতে দেখা যায়, জালাল গাছ থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় চিৎকার করে মাটি ছোঁয়ার চেষ্টা করছেন। লাঠি হাতে কয়েকজন তাঁকে মারধরের প্রস্তুতি নিলেও আশপাশের কয়েকজন বাধা দেন। একপর্যায়ে বাঁধা হাতসহ তাঁকে নিচে নামানো হয়।

কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রতন শেখ বলেন, চুরির অভিযোগে একজনকে গাছে ঝুলিয়ে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের ঘটনায় প্রধান অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জালাল দৃষ্টি প্রতিবন্ধী হওয়ায় বিষয়টি অত্যন্ত সংবেদনশীল। কারা কী উদ্দেশ্যে তাকে নির্যাতন করেছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অন্যদেরও শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে।