সিলেটে এক যুবককে অপহরণ করে বিবস্ত্র অবস্থায় হাত-পা বেঁধে নির্মমভাবে নির্যাতনের পর ভিডিও কলে বিবস্ত্র দৃশ্য দেখিয়ে মুক্তিপণ দাবি করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর বড় ভাই মো. ইব্রাহীম কানাইঘাট থানার সোনারখেওড় গ্রাম থেকে সোমবার (১ ডিসেম্বর) সিলেট জেলা পুলিশ সুপার ও এয়ারপোর্ট থানায় পৃথক অভিযোগ দাখিল করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ইব্রাহীমের ছোট ভাই বুরহান উদ্দিন (৩০) রোববার (৩০ নভেম্বর) সকালে একটি নারী ও শিশু মামলার হাজিরা দিতে বাড়ি থেকে সিলেট আদালতে আসেন। এরপর থেকে তিনি নিখোঁজ ছিলেন এবং তার মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
রোববার সন্ধ্যা ৭টার দিকে বুরহান উদ্দিন নিজ নম্বর থেকে বড় ভাইকে ফোন করে কান্নাজড়িত কণ্ঠে জানান, কানাইঘাটের নারায়নপুর এলাকার করিম উদ্দিন (৩০) ও জকিগঞ্জের রনি (৪০)সহ ৫–৬ জন তাকে অপহরণ করে অজ্ঞাতস্থানে নিয়ে গেছে। সেখানে তাকে উলঙ্গ করে হাত-পা বেঁধে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হচ্ছে। অপহরণকারীরা ৮ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করছে।
অভিযোগে আরও বলা হয়, অপহরণকারীরা ভিডিও কলে বুরহান উদ্দিনকে নির্যাতনের দৃশ্য দেখিয়ে পরিবারকে বারবার অর্থ প্রদানের জন্য চাপ সৃষ্টি করে। নগদ তিন লাখ টাকা করিম উদ্দিনের বাড়িতে এবং বাকি পাঁচ লাখ টাকা বিকাশের মাধ্যমে পাঠাতে বলা হয়। বিকাশের তিনটি নম্বরও সরবরাহ করা হয়।
পরিবার জানায়, রাতে কতোয়ালী মডেল থানায় গেলে কর্মকর্তারা তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় অবস্থান তদারকি করে জানান, ঘটনাটি এয়ারপোর্ট থানার আওতাধীন। পরে এয়ারপোর্ট থানায় লিখিত অভিযোগ দাখিল করা হয়।
পরিবারের দাবি, রাতভর ভিডিও কলে নির্যাতনের দৃশ্য দেখিয়ে অপহরণকারীরা হুমকি দেয়, সোমবার সকাল ৭টার মধ্যে টাকা না দিলে বুরহানকে হত্যা করে লাশ গুম করে ফেলা হবে।
এমন আতঙ্কজনক পরিস্থিতিতে পরিবারের সদস্যরা জীবনরক্ষার আকুতি জানিয়ে পুলিশের সহায়তা চান।
আজ সোমবার বিকেলে এয়ারপোর্ট থানা পুলিশ জানায়, অভিযোগ পাওয়ার পরই ভিকটিম উদ্ধারে পুলিশের একাধিক টিম মাঠে নেমেছে।
এয়ারপোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ আনিসুর রহমান বলেন, অভিযোগের পরপরই এসআই বিধানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি র্যাব-৯ এর সহায়তা নেওয়া হয়েছে। র্যাব ও পুলিশ যৌথভাবে বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করছে।

নিজস্ব প্রতিবেদক 



















