দেশের সর্বোচ্চ ভূমিকম্প ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল সিজমিক জোন–৪ এর কেন্দ্রবিন্দু সিলেট মহানগরী। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেছেন—ডাউকি ফল্টে যেকোনো সময় বড় মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানতে পারে, আর তাতে ধসে যেতে পারে সিলেট নগরীর বিপুল সংখ্যক বহুতল ভবন।
বিশ্বখ্যাত ভূতত্ত্ববিদ ও সিসমোলজিস্ট ড. জেমস বার্গম্যান এবং ড. মাইকেল স্টার্ন জানিয়েছেন, ডাউকি ফল্ট হচ্ছে একটি বিশাল বিপরীত চ্যুতি, যা শিলং মালভূমিকে ক্রমাগত উপরে ঠেলে তুলছে। সিলেট এই ফল্ট লাইনের একেবারে নিকটবর্তী হওয়ায় ভূমিকম্পের তীব্রতা হবে মারাত্মক।
স্থানীয় বিশেষজ্ঞদের মতে, সিলেটে ৭ মাত্রার ভূমিকম্প হলে প্রায় সাড়ে ৪৫ হাজার বহুতল ভবন ধসে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। বর্তমানে সিসিকের পুরাতন ও নতুন উভয় সীমানায় বহুতল ভবনের সংখ্যা প্রায় ৭০ হাজার।
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় দেখা গেছে, নগরের ৬০–৬৫ শতাংশ ভবনই বিল্ডিং কোড না মেনে নির্মিত। ফলে বড় মাত্রার কম্পনে এসব ভবন মুহূর্তেই রূপ নিতে পারে ধ্বংসস্তূপে।
শাবির অধ্যাপক ড. মুশতাক আহমদ বলেন, নকশা ও নির্মাণে অবহেলার কারণে ভবনের শক্তিমত্তা দুই ধাপে কমে আসে, যা বড় দুর্যোগে সহনীয়তা হারানোর প্রধান কারণ।
এদিকে সিসিকের তালিকাভুক্ত ২৩টি অতি ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের মধ্যে মাত্র ৪টি ভাঙা হয়েছে, বাকি ভবনগুলো এখনও ব্যবহার হচ্ছে।
ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক শফিকুল ইসলাম জানান, সিলেট শহরের সরু সড়কগুলো বড় ধরনের দুর্ঘটনার সময় উদ্ধারকাজকে মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্ত করবে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এখনই উদ্যোগ না নিলে একটি বড় ভূমিকম্প সিলেট নগরীর জন্য ভয়াবহ বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।

নিজস্ব প্রতিবেদক 



















