সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার ২ নং পশ্চিম জাফলং ইউনিয়নের কৃষকরা তাদের ফসল উৎপাদনে যথাযথ পানি নিষ্কাশনের সুবিধার্তে বাধ নির্মাণ করেছেন। এতে এলাকার প্রায় ২০০ একর জমি চাষাবাদের আওতায় আসবে বলে কৃষকরা জানিয়েছেন। তারা স্হানীয় কৃষি ব্যবস্থার উন্নয়নে তারুখাল এলাকায় সুইচ গেইট নির্মানের দাবীতে পশ্চিম জাফলং ইউনিয়ন কৃষিজীবী সমিতির পক্ষ থেকে বিএডিসি সিলেট জোনের সহকারী প্রকৌশলী বরাবরে একটি আবেদন জানানো হয়েছে।
স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, জেলার গোয়াইনঘাট উপজেলার ২নং পশ্চিম জাফলং ইউনিয়নের অন্তর্গত ৩, ৪, ৫, ৮,৯,নং ওয়ার্ডের অধিভুক্ত তারুখাল, ঠাকুরবাড়ি, পন্নগ্রাম, কাইস্তগ্রাম, হাতিরখাল, জয়নগর গ্রামের প্রায় ২০০ একর ভূমিতে এক বর্ষা মৌসুমে শুধু মাত্রই ধানচাষে সীমাবদ্ধ থাকতো। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে গোয়াইনঘাটের পাথর কোয়ারি বন্ধ থাকার কারণে গ্রামের মানুষ কৃষি কাজে মনোনিবেশ করে।তারা জড়িয়ে পরে কৃষি কাজের সাথে। শুরু করে চাষাবাদ। এখানকার মানুষ ফসলের চাহিদা মিটিয়ে উদ্বৃত্ত ফসল দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিক্রি করছে । সিলেট শহর, এমনকি চট্টগ্রাম থেকে সরাসরি ব্যবসায়ীরা এসে তারুখাল এলাকা থেকে সবজি কিনে নেন। গোয়াইনঘাটের প্রধান কৃষি উৎপাদনশীল এলাকা পশ্চিম জাফলং ইউনিয়ন। এখানে সরকারী ব্যবস্থাপনায় তেমন কোন পদক্ষেপ পরিলক্ষিত হয় নি। তবে ক্রমাগত কৃষকদের সহযোগিতার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা জানান উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রায়হান পারভেজ।
পান্তূমাই মায়াবতী ঝর্ণা থেকে উৎপন্ন হয়ে মাতুরতল বাজার হয়ে ইউনিয়নের তারুখাল ও হাতিরখাল এর মধ্যবর্তী হয়ে মনরতল বাজার হয়ে প্রবাহিত হয়েছে আখলুভাংঙ্গা নামের ছোট নদীটি । সাম্প্ৰতিক এলাকার কৃষকরা সেচ্ছাশ্রেমে বাধঁ নির্মাণ করে পানি ধরে রাখার চেষ্টা করতেছেন তারা।
এলাকার কৃষকদের দাবি অতীতে নদীর পানি দিয়ে কোন রকম কৃষি কাজ করা সম্ভব হলেও বর্তমানে ফসলের চাহিদা অনুযায়ী কৃষি কাজে পানি ব্যবহার দূরুহ হয়ে উঠেছে। বিশাল ও বিস্তৃত এ কৃষি অঞ্চলে পানির অভাবে ফসল ফলনের সময় ঝরে ও মরে যায়। এমনকি পানির কারনে অনেক কৃষক কৃষিকাজ করতে পারেন না। বেলেদোয়াশ মাটিতে মাটিতে শাক সবজির অত্যন্ত ভালো মানের ফলন হয়, যা এলাকার চাহিদা মিটিয়ে দেশের অন্যত্রে সরবরাহ করা সম্ভব হয়। তাই উক্ত বিষয়গুলো বিবেচনা করে অবহেলিত এ জনপদের আখলুভাংঙ্গার সীমান্তবর্তী স্থানে একটি সুইচ গেইট স্থাপন করতে সিলেটের বিএডিসি (সেচ) বিভাগের সহকারী প্র-কৌশলীর বরাবরে একটি লিখিত আবেদন করেছেন কৃষকরা।
জানতে চাইলে আখলুভাংঙ্গায় সুইচ গেইট স্থাপনের মৌন সম্মতি জ্ঞাপন করেছেন সিলেট বিএডিসি জোনের সহকারী প্র-কৌশলী(সেচ) হাবিবুর রহমান।
ইতিমধ্যেই সরেজমিন পরিদর্শন করেছেন গোয়াইনঘাট সার্কেলের উপ সহকারী প্র-কৌশলী(সেচ) আব্দুল কুদ্দুস।
গোয়াইনঘাট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রায়হান পারভেজ রনি জানান ২ নং পশ্চিম জাফলং ইউনিয়ন পুরুটাই কৃষি উপযোগী এলাকা। আমরা প্রায় বিশটির অধিক প্রস্তাব ইতিমধ্যে পাটিয়েছি, কিন্তু নানান সীমাবদ্ধতায় তা সম্ভব হচ্ছে না। আখলুভাংঙ্গা সুইচ গেইট নির্মান এ এলাকার মানুষের দীর্ঘদিনের। এটি নির্মাণ হলে এই এলাকায় শীত মৌসুমে ব্যাপক হারে কৃষিকাজ সম্ভব বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। তবে একাধিক উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা কৃষকদের কল্যাণে কাজ করছেন বলে জানান তিনি।
কৃষিবিদ নুরে আলম শামীম জানান কম সময়ে সবচেয়ে লাভজনক পেশা হচ্ছে কৃষি আমাদের এলাকার মানুষ অনেক পরিশ্রমি সরকারী ভাবে এ ভাঙ্গায় সুইচ গেইট হলে আমরা উপকৃত হবো।
ব্যবসায়ী আব্দুর রহিম রাজা বলেন, আমাদের ছোট ছোট নদীগুলোতে যদি সুইচ গেইট স্থাপন হয় তাহলে এই ইউনিয়ন
কৃষিতে যুগান্তকারী ভূমিকা পালন করবে।
বিএডিসি সিলেট জোনের সহকারী প্রকৌশলী হাবিবুর রহমান বলেন, এখানে সুইচ গেইট নির্মানের বিষয়ে আমরা আগ্রহী। তবে সীমাবদ্ধতা থাকায় সব সময় চাইলে ও পারা যায় না। আমরা আবেদনের প্রেক্ষিতে সরেজমিন পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবো।

গোয়াইনঘাট প্রতিনিধি 



















