, সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
সিলেটের বিশ্বনাথে কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগে সৎ চাচা গ্রেপ্তার বর্ণাঢ্য আয়োজনে সিলেট প্রেসক্লাব মেম্বারস ফ্যামিলি ডে উদযাপন মৌলভীবাজারে বাছুরসহ গাভি চুরি, বিধবার চোখে নেই শান্তি সিলেটে ছাত্রলীগ ও শ্রমিক লীগের দুই নেতা গ্রেফতার সিলেটের ওসমানীনগরে সিএনজি চালককে হত্যা করে অটোরিকশা ছিনতাই বিয়ে করে ফ্রান্সে নিয়ে জানতে পারেন স্ত্রী অন্যের সিলেটে র‌্যাবের অভিযানে অস্ত্রসহ বিস্ফোরক উদ্ধার সিলেটের গোলাপগঞ্জে পদায়নের আগেই হুমকির মুখে নতুন ইউএনও শাখী ছেপ বিশ্বনাথে জেন্ডার সচেতনা ও সহিংসতা প্রতিরোধ বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত দিরাইয়ে প্রশাসনের অভিযানে হকারমুক্ত ফুটপাত

সিলেটে ভূমিকম্পে বিপর্যয়ের শঙ্কা: মৃত্যুঝুঁকি ঠেকাতে ২৩ ভবন গুঁড়িয়ে ফেলার সিদ্ধান্ত

বারবার ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠা সিলেট এখন বড় ধরনের দুর্যোগ ঝুঁকিতে রয়েছে। স্থানীয়ভাবে নিষ্ক্রিয় ফল্টগুলো সক্রিয় হয়ে ওঠায় ভূমিকম্পের হার দ্রুত বাড়ছে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। এই পরিস্থিতিতে নগরীর পুরনো ও নড়বড়ে ভবনগুলোকে ‘মরণফাঁদ’ হিসেবে বিবেচনা করে ২৩টি বিপজ্জনক ভবন চিহ্নিত করেছে প্রশাসন।

সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার আলম জানান, চিহ্নিত এসব ভবন যেকোনো বড় কম্পনে ধসে বিশাল প্রাণহানি ঘটাতে পারে। তাই নাগরিকদের সুরক্ষার স্বার্থে দ্রুততম সময়ের মধ্যে এগুলো ভেঙে ফেলতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, “আগামী সপ্তাহ থেকেই অপসারণ কাজ শুরু হবে। সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে মোট ২৩টি ভবন ভাঙা হবে।”

ফায়ার সার্ভিসের তথ্য অনুযায়ী, নগরীর অধিকাংশ পুরনো ভবনের নকশায় ভূমিকম্প প্রতিরোধী কাঠামো নেই। সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলোর মধ্যে রয়েছে বেশ কয়েকটি বাণিজ্যিক মার্কেট, আবাসিক ভবন ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। অনেক ভবনের দেয়ালে ফাটল, সিঁড়িতে নড়বড়ে অবস্থা এবং ঊর্ধ্বমুখী ঝুঁকে থাকা কাঠামো দেখা যাচ্ছে—যা যেকোনো সময় ধসে পড়ার আশঙ্কা তৈরি করেছে।

এরইমধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় সিলেটে তিন দফা ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে, যার মধ্যে দুটি মাত্র এক সেকেন্ডের ব্যবধানে ৩.৭ ও ৪.৩ মাত্রার ছিল। এর আগের দিন ৫.৭ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পে দুই শিশুসহ ১০ জনের মৃত্যু ও কয়েকশ মানুষের আহত হওয়ার ঘটনাও আতঙ্ক আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

প্রশাসন জানায়, উদ্ধারতৎপরতায় বড় বাধা সংকীর্ণ রাস্তা, যেখানে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি প্রবেশ করতে পারে না। এজন্য ভবন অপসারণের পাশাপাশি ভবিষ্যৎ জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় বেশ কয়েকটি ওয়ার্কশপও করা হয়েছে।

২০১৯ সালে সিসিকের তালিকাভুক্ত ২৪ ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের মধ্যে ১৮টি এখনো অপরিবর্তিত রয়ে গেছে। মধুবন মার্কেট, সুরমা মার্কেট, সমবায় ব্যাংক ভবনসহ বহু স্থাপনা এখনও একইভাবে ঝুঁকি বহন করছে। কিছু ভবন ইতোমধ্যে সংস্কার বা অপসারণ করা হলেও নতুন করে আরও ভবন ঝুঁকিপূর্ণ তালিকায় যুক্ত হয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেছেন, সিলেট ভূতাত্ত্বিকভাবে ‘ডেঞ্জার জোন’-এ অবস্থান করছে। তাই বড় ধরনের দুর্যোগ ঠেকাতে অবিলম্বে ঝুঁকিপূর্ণ ভবন অপসারণই একমাত্র কার্যকর পথ।

জনপ্রিয়

সিলেটের বিশ্বনাথে কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগে সৎ চাচা গ্রেপ্তার

সিলেটে ভূমিকম্পে বিপর্যয়ের শঙ্কা: মৃত্যুঝুঁকি ঠেকাতে ২৩ ভবন গুঁড়িয়ে ফেলার সিদ্ধান্ত

প্রকাশের সময় : ০৬:৩৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২২ নভেম্বর ২০২৫

বারবার ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠা সিলেট এখন বড় ধরনের দুর্যোগ ঝুঁকিতে রয়েছে। স্থানীয়ভাবে নিষ্ক্রিয় ফল্টগুলো সক্রিয় হয়ে ওঠায় ভূমিকম্পের হার দ্রুত বাড়ছে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। এই পরিস্থিতিতে নগরীর পুরনো ও নড়বড়ে ভবনগুলোকে ‘মরণফাঁদ’ হিসেবে বিবেচনা করে ২৩টি বিপজ্জনক ভবন চিহ্নিত করেছে প্রশাসন।

সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার আলম জানান, চিহ্নিত এসব ভবন যেকোনো বড় কম্পনে ধসে বিশাল প্রাণহানি ঘটাতে পারে। তাই নাগরিকদের সুরক্ষার স্বার্থে দ্রুততম সময়ের মধ্যে এগুলো ভেঙে ফেলতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, “আগামী সপ্তাহ থেকেই অপসারণ কাজ শুরু হবে। সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে মোট ২৩টি ভবন ভাঙা হবে।”

ফায়ার সার্ভিসের তথ্য অনুযায়ী, নগরীর অধিকাংশ পুরনো ভবনের নকশায় ভূমিকম্প প্রতিরোধী কাঠামো নেই। সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলোর মধ্যে রয়েছে বেশ কয়েকটি বাণিজ্যিক মার্কেট, আবাসিক ভবন ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। অনেক ভবনের দেয়ালে ফাটল, সিঁড়িতে নড়বড়ে অবস্থা এবং ঊর্ধ্বমুখী ঝুঁকে থাকা কাঠামো দেখা যাচ্ছে—যা যেকোনো সময় ধসে পড়ার আশঙ্কা তৈরি করেছে।

এরইমধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় সিলেটে তিন দফা ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে, যার মধ্যে দুটি মাত্র এক সেকেন্ডের ব্যবধানে ৩.৭ ও ৪.৩ মাত্রার ছিল। এর আগের দিন ৫.৭ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পে দুই শিশুসহ ১০ জনের মৃত্যু ও কয়েকশ মানুষের আহত হওয়ার ঘটনাও আতঙ্ক আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

প্রশাসন জানায়, উদ্ধারতৎপরতায় বড় বাধা সংকীর্ণ রাস্তা, যেখানে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি প্রবেশ করতে পারে না। এজন্য ভবন অপসারণের পাশাপাশি ভবিষ্যৎ জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় বেশ কয়েকটি ওয়ার্কশপও করা হয়েছে।

২০১৯ সালে সিসিকের তালিকাভুক্ত ২৪ ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের মধ্যে ১৮টি এখনো অপরিবর্তিত রয়ে গেছে। মধুবন মার্কেট, সুরমা মার্কেট, সমবায় ব্যাংক ভবনসহ বহু স্থাপনা এখনও একইভাবে ঝুঁকি বহন করছে। কিছু ভবন ইতোমধ্যে সংস্কার বা অপসারণ করা হলেও নতুন করে আরও ভবন ঝুঁকিপূর্ণ তালিকায় যুক্ত হয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেছেন, সিলেট ভূতাত্ত্বিকভাবে ‘ডেঞ্জার জোন’-এ অবস্থান করছে। তাই বড় ধরনের দুর্যোগ ঠেকাতে অবিলম্বে ঝুঁকিপূর্ণ ভবন অপসারণই একমাত্র কার্যকর পথ।