, বুধবার, ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ২১ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
ওসমানীনগরে দোকান থেকে জুয়েলার্স শ্রমিকের লাশ উদ্ধার মৌলভীবাজারে দেশীয় অস্ত্রসহ ৫ জন আটক জ্ঞান অর্জন করে শিক্ষার্থীদের প্রকৃত মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে হবে : লালাবাজারে জেলা প্রশাসক আগামীকাল বুধবার সিলেটে আসছেন জামায়াতের আমীর ডা. শফিকুর রহমান  মৌলভীবাজারে হাসপাতালে গৃহবধূর মরদেহ রেখে পালালেন স্বামী ও শাশুড়ি বুধবার সিলেটের বিভিন্ন এলাকায় টানা ৯ ঘণ্টা থাকবে না বিদ্যুৎ সিলেট-৪ আসনের প্রস্তাবে ‘না’, বিএনপির স্থায়ী কমিটির তলবে ঢাকায় আরিফ সিলেট-৫: জোট নাকি দলীয় প্রার্থী—দ্বিধায় বিএনপি এই তালিকাই চূড়ান্ত নয়, যেকোনো সময় পরিবর্তন হতে পারে : মির্জা ফখরুল অক্টোবর মাসে সিলেটে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২৮ জন

সিলেটে আ.লীগ নেতা খুন : পরিবার থেকে করা হয়নি মামলা, গ্রেপ্তার ছেলেকে রিমান্ড চায় পুলিশ 

সিলেটের দক্ষিণ সুরমায় আওয়ামী লীগের নেতা আবদুর রাজ্জাক হত্যার ঘটনায় তার ছেলে আসাদ আহমদকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আবদুর রাজ্জাক হত্যার ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে শনিবার সন্ধ্যা পৌনে ছয়টা পর্যন্ত মামলা না করায় পুলিশের পক্ষ থেকে হত্যা মামলা করা হয়। এই মামলায় আসাদকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

পুলিশ সূত্র জানায়, আবদুর রাজ্জাকের লাশ উদ্ধারের পর থেকে তাঁর ছেলে আসাদ আহমদকে নজরদারির মধ্যে রাখা হয়। শনিবার মামলার পর তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

বিকেলে দক্ষিণ সুরমা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আনোয়ারুল কামাল মামলাটি করেন। এতে কারও নাম উল্লেখ করা হয়নি। তবে পরিবারের কয়েকজন সদস্যের নাম মামলার বিবরণে ‘সন্দেহজনক’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (গণমাধ্যম) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম।

তিনি বলেন, হত্যা মামলায় নিহত ব্যক্তির ছেলেকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তাঁকে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করা হয়েছে। তবে রিমান্ড আবেদনের শুনানি হয়নি।

সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (গণমাধ্যম) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, নিহত ব্যক্তির পরিবার প্রথম থেকেই ঘটনাটিকে আত্মহত্যা বলে দাবি করে আসছে। তবে ঘটনাটি আত্মহত্যা নয়, এটি হত্যাকাণ্ড। যেভাবে নিহত ব্যক্তির শরীরে ছুরিকাঘাত করা হয়েছে, তাতে আত্মহত্যা মনে হয়নি। পরিবার মামলা না করায় পুলিশের পক্ষ থেকে মামলা করা হয়েছে।

পুলিশ জানায়, শনিবার দুপুরে নিহত ব্যক্তির মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা ছুরিটি ফরেনসিকের জন্য পাঠানো হয়েছে।

শুক্রবার সকালে সিলেটের দক্ষিণ সুরমার মোল্লারগাঁও ইউনিয়নের তেলিরাই গ্রামে নিজ বাসার ছাদের সিঁড়ির পাশে একটি কক্ষ থেকে আবদুর রাজ্জাকের রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তিনি দক্ষিণ সুরমা উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ছিলেন।

পরিবারের বরাতে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার ফজরের নামাজ শেষে আবদুর রাজ্জাক ছাদে হাঁটার জন্য উঠেছিলেন। এরপর সকাল ৯টার দিকে তাঁর রক্তাক্ত মরদেহ দেখার পর পুলিশকে জানানো হয়।

পুলিশ জানায়, আবদুর রাজ্জাকের পেট, বুক, পুরুষাঙ্গসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ছুরিকাঘাতের গভীর চিহ্ন পাওয়া গেছে। লাশের পাশ থেকে একটি ২২ ইঞ্চি লম্বা ছুরি উদ্ধার করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, গতকাল সকাল ৬টা থেকে ৯টার মধ্যে তাঁকে খুন করা হয়েছে।

বাড়ির সিসিটিভি ক্যামেরা দেখে পুলিশ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার ভোর থেকে লাশ উদ্ধারের আগপর্যন্ত নিহত ব্যক্তির বাড়িতে কাউকে ঢুকতে কিংবা বের হতে দেখা যায়নি। এর মধ্যে শুধু ওই বাড়ির গৃহকর্মী সকাল আটটার দিকে বাড়িতে ঢোকেন। তিনি বাড়িতে যাওয়ার পর আবদুর রাজ্জাককে তাঁর কক্ষে পাননি। একপর্যায়ে সিঁড়ির ঘরে লাশটি দেখতে পান পরিবারের সদস্যরা। এ সময় সিঁড়ির দরজা তালাবদ্ধ ছিল, সিঁড়ির চাবি আবদুর রাজ্জাকের কাছেই ছিল।

পারিবারিক সূত্র জানায়, নিহত আবদুর রাজ্জাকের এক ছেলে ও এক মেয়ে। দুজনেরই বিয়ে হয়ে গেছে। সন্তানদের মধ্যে প্রায় মাস দুয়েক আগে সম্পত্তি ভাগ–বাঁটোয়ারাও করে দিয়েছিলেন তিনি। শারীরিকভাবে অসুস্থ ছিলেন তিনি। চিকিৎসার জন্য ভারতেও গিয়েছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে গত বছরের ৫ আগস্ট–পরবর্তী সময়ে একটি মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছে পারিবারিক সূত্র। মামলা থাকলেও তিনি নিজ বাড়িতেই অবস্থান করতেন।

জনপ্রিয়

ওসমানীনগরে দোকান থেকে জুয়েলার্স শ্রমিকের লাশ উদ্ধার

সিলেটে আ.লীগ নেতা খুন : পরিবার থেকে করা হয়নি মামলা, গ্রেপ্তার ছেলেকে রিমান্ড চায় পুলিশ 

প্রকাশের সময় : ০৪:০৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ১ নভেম্বর ২০২৫

সিলেটের দক্ষিণ সুরমায় আওয়ামী লীগের নেতা আবদুর রাজ্জাক হত্যার ঘটনায় তার ছেলে আসাদ আহমদকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আবদুর রাজ্জাক হত্যার ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে শনিবার সন্ধ্যা পৌনে ছয়টা পর্যন্ত মামলা না করায় পুলিশের পক্ষ থেকে হত্যা মামলা করা হয়। এই মামলায় আসাদকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

পুলিশ সূত্র জানায়, আবদুর রাজ্জাকের লাশ উদ্ধারের পর থেকে তাঁর ছেলে আসাদ আহমদকে নজরদারির মধ্যে রাখা হয়। শনিবার মামলার পর তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

বিকেলে দক্ষিণ সুরমা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আনোয়ারুল কামাল মামলাটি করেন। এতে কারও নাম উল্লেখ করা হয়নি। তবে পরিবারের কয়েকজন সদস্যের নাম মামলার বিবরণে ‘সন্দেহজনক’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (গণমাধ্যম) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম।

তিনি বলেন, হত্যা মামলায় নিহত ব্যক্তির ছেলেকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তাঁকে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করা হয়েছে। তবে রিমান্ড আবেদনের শুনানি হয়নি।

সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (গণমাধ্যম) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, নিহত ব্যক্তির পরিবার প্রথম থেকেই ঘটনাটিকে আত্মহত্যা বলে দাবি করে আসছে। তবে ঘটনাটি আত্মহত্যা নয়, এটি হত্যাকাণ্ড। যেভাবে নিহত ব্যক্তির শরীরে ছুরিকাঘাত করা হয়েছে, তাতে আত্মহত্যা মনে হয়নি। পরিবার মামলা না করায় পুলিশের পক্ষ থেকে মামলা করা হয়েছে।

পুলিশ জানায়, শনিবার দুপুরে নিহত ব্যক্তির মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা ছুরিটি ফরেনসিকের জন্য পাঠানো হয়েছে।

শুক্রবার সকালে সিলেটের দক্ষিণ সুরমার মোল্লারগাঁও ইউনিয়নের তেলিরাই গ্রামে নিজ বাসার ছাদের সিঁড়ির পাশে একটি কক্ষ থেকে আবদুর রাজ্জাকের রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তিনি দক্ষিণ সুরমা উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ছিলেন।

পরিবারের বরাতে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার ফজরের নামাজ শেষে আবদুর রাজ্জাক ছাদে হাঁটার জন্য উঠেছিলেন। এরপর সকাল ৯টার দিকে তাঁর রক্তাক্ত মরদেহ দেখার পর পুলিশকে জানানো হয়।

পুলিশ জানায়, আবদুর রাজ্জাকের পেট, বুক, পুরুষাঙ্গসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ছুরিকাঘাতের গভীর চিহ্ন পাওয়া গেছে। লাশের পাশ থেকে একটি ২২ ইঞ্চি লম্বা ছুরি উদ্ধার করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, গতকাল সকাল ৬টা থেকে ৯টার মধ্যে তাঁকে খুন করা হয়েছে।

বাড়ির সিসিটিভি ক্যামেরা দেখে পুলিশ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার ভোর থেকে লাশ উদ্ধারের আগপর্যন্ত নিহত ব্যক্তির বাড়িতে কাউকে ঢুকতে কিংবা বের হতে দেখা যায়নি। এর মধ্যে শুধু ওই বাড়ির গৃহকর্মী সকাল আটটার দিকে বাড়িতে ঢোকেন। তিনি বাড়িতে যাওয়ার পর আবদুর রাজ্জাককে তাঁর কক্ষে পাননি। একপর্যায়ে সিঁড়ির ঘরে লাশটি দেখতে পান পরিবারের সদস্যরা। এ সময় সিঁড়ির দরজা তালাবদ্ধ ছিল, সিঁড়ির চাবি আবদুর রাজ্জাকের কাছেই ছিল।

পারিবারিক সূত্র জানায়, নিহত আবদুর রাজ্জাকের এক ছেলে ও এক মেয়ে। দুজনেরই বিয়ে হয়ে গেছে। সন্তানদের মধ্যে প্রায় মাস দুয়েক আগে সম্পত্তি ভাগ–বাঁটোয়ারাও করে দিয়েছিলেন তিনি। শারীরিকভাবে অসুস্থ ছিলেন তিনি। চিকিৎসার জন্য ভারতেও গিয়েছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে গত বছরের ৫ আগস্ট–পরবর্তী সময়ে একটি মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছে পারিবারিক সূত্র। মামলা থাকলেও তিনি নিজ বাড়িতেই অবস্থান করতেন।