সিলেটের সুরমা নদীতে ময়লা-আবর্জনা ফেলার ঘটনায় ৩ জন পরিচ্ছন্নতা কর্মীকে বরখাস্ত করেছে সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষ।
রোববার (০১ জুন) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে অভিযুক্তদের নগরের কিনব্রিজ সংলগ্ন সুরমা নদীর পাড়ের ওর্য়াকওয়েতে ময়লা-আবর্জনা ফেলতে দেখা যায়।
সিলেট সিটি কর্পোরেশনের একটি ময়লার ভ্যান থেকে সরাসরি নদীতে সিসিকের কর্মীদের ময়লা ফেলার দৃশ্য প্রকাশ্যে আসে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রকাশিত একটি ভিডিও চিত্রে। এ নিয়ে চারপাশে সমালোচনা শুরু হয়।পরিবেশ ও হাওর উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি কাশমির রেজাও রোববার দুপুর ১২টা ৫৪ মিনিটের দিকে নিজের ফেসবুক পেইজে ভিডিও চিত্রটি পোস্ট করেন।
ভিডিও চিত্রে দেখা যায়, সুরমা নদীর কিনব্রিজ এলাকায় গড়ে তোলা ওয়াকওয়ের রেলিংয়ের সঙ্গে লাগিয়ে দাঁড় করানো হয়েছে একটি গাঢ় নীল রঙের রিকশা ভ্যান। ভ্যানের গায়ে সাদা হরফে স্পষ্ট করে লেখা ‘সিলেট সিটি কর্পোরেশন’। উপরে বাঁ পাশে কোণায় ছোট করে লেখা ‘অফিস-০২’। ভ্যানের পাশে তিনজন দাঁড়িয়ে একজন ছাতা মাথায় রেইনকোট পড়া, যাতে নগর ভবনের নাম লেখা। বাকি দুইজনের একজনের কালো আরেকজনের গায়ে সাদা রেইনকোট। তার ওপরে সিটি কর্পোরেশনের টিয়া রঙের কটি চাপানো। এ দুইজন ভ্যান থেকে ময়লা তুলে সরাসরি নদীতে ফেলছেন আর ছাতা মাথার লোকটি ডান-বামে সতর্ক পাহারা দিচ্ছেন-কেউ দেখে ফেলছে কিনা।
এ বিষয়ে কাশমির রেজা বলেন, ‘রোববার সকাল ১১টার দিকে ভিডিওটি আরেকজন আমাকে পাঠিয়েছেন। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক, হতাশাজনক এবং ভয়ংকর। যারা দেখভাল করে রাখার কথা তারাই অপকর্মটা করছে। এদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা দেওয়া গেলে বাকিদের কাছে ম্যাসেজ যাবে যে এমন কাজ ঠিক নয়।’
বিষয়টি নিশ্চিত করে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের (সিসিক) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রেজাই রাফিন সরকার বলেন, ‘যেখানে সেখানে ময়লা-আবর্জনা না ফেলতে সিটি কর্পোরেশন যেখানে মানুষকে সচেতন করতে কাজ করছে। এ অবস্থায় খোদ আমাদের পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা যদি প্রকাশ্যে এসব কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকে তাহলে তো মূল কাজই বাস্তবায়ন প্রশ্নবিদ্ধ। এছাড়া তিনি বলেন, ‘বিষয়টি আমার নজরে আসার পর জড়িত তিনজনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।’
প্রতিবছরই ভারি বৃষ্টিপাতে সিলেট নগরজুড়ে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়ে নাগরিক দুর্ভোগ দেখা দেয়। দীর্ঘদিন ধরে সুরমা নদী খনন না করাসহ সাধারণ মানুষ, ব্যবসায়ী ও পরিচ্ছন্নকর্মীদের দ্বারা প্রকাশ্যে পলিথিন, ময়লা-আবর্জনা ফেলে নদীর দু’পার ভরাট করে ফেলেন।
এছাড়া সেইসব ময়লা-আবর্জনা ড্রেনে ফেলার কারণে ড্রেনেজ ব্যবস্থাও অকার্যকর হয়ে পড়ে। এতে নগরীতে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়। আর এ কারণে বর্ষা মৌসুমের শুরুতে খননের দাবি উঠে সুরমা নদী।