সম্প্রতি ইসরাইলে ছড়িয়ে পড়া ভয়াবহ দাবানলের সাথে এবার প্রচণ্ড বালুঝড়ের কবলেও পড়েছে দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় অঞ্চল। এতে ওই এলাকা বালুতে ছেঁয়ে যায়।
সম্প্রতি তুরস্কের বার্তা সংস্থা আনাদোলু এজেন্সির এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সম্প্রতি ইসরাইলের মধ্যঞ্চলীয় শহরে ভয়াবহ ধরনের দাবানল ছড়িয়ে পড়েছে। প্রবল বাতাসে এর তীব্রতা কয়েক গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এরই মধ্যে আবার দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় শহরে দেখা দেয় তীব্র বালির ঝড়। এতে ওই এলাকা যেন ধুলো-বালির অন্ধকারে ছেয়ে গেছে।
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রচারিত ভিডিওতে দেখা যায়, দক্ষিণ ইসরাইলের নেগেভ মরুভূমি থেকে বিশাল ধুলোর ঝড় প্রবল বেগে ধেয়ে আসছে। এতে ধীরে ধীরে পুরো শহর গভীর ধুলোয় ঢাকা পড়ে যাচ্ছে।
চ্যানেল ১২-এর সম্প্রচারে একটি সামরিক ঘাঁটির সামনে সৈন্যদের হিমশিম খেতে দেখা যায়। প্রচণ্ড বাতাসে তারা ঘাঁটির দরজা বন্ধ করতে যেন একরকম সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছিল।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘আজ বুধবার সন্ধ্যায় এক অস্বাভাবিক বালির ঝড়ের মধ্যে (নেগেভে অবস্থিত) শিবতা ঘাঁটির এমন চিত্র দেখা যায়।’ এতে আরো উল্লেখ করা হয়, বাতাস এতটাই তীব্র ছিল যে দরজা বন্ধ করাটাই কঠিন হয়ে পড়েছিল।
অপরদিকে জেরুসালেম ও তেল আবিবের মধ্যবর্তী অঞ্চলগুলোতে ছড়িয়ে পড়া দাবানল নিয়ন্ত্রণে আনতে দমকল বাহিনী জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। কিন্তু প্রবল বাতাস যেন দাবানলকে আরো কয়েকগুণ উসকে দিচ্ছে।
জেরুজালেম জেলার অগ্নিনির্বাপণ ও উদ্ধার বিভাগের প্রধান শমুলিক ফ্রিডম্যান ইসরাইলি আর্মি রেডিওকে জানান, ‘এই দাবানল সম্ভবত ইসরাইলের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় হতে চলেছে।’
প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরাইল কাটজ সকালে দেশব্যাপী জরুরি অবস্থা জারি করেন এবং জেরুজালেম পাহাড় এলাকায় অগ্নিনির্বাপক দলকে সহায়তা করতে সেনাবাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দেন।
চ্যানেল ১২ জানিয়েছে, দাবানলের ভয়াবহতা বিবেচনায় ইসরাইল পূর্বনির্ধারিত ‘স্বাধীনতা দিবসের’ সব ধরনের কার্যক্রম উদযাপন বাতিল করেছে।
উল্লেখ্য, ১৯৪৮ সালে ইসরাইল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হয়। এদিনকে ইসরাইলিরা স্বাধীনতা দিবস হিসেবে পালন করে থাকে। তবে ফিলিস্তিনিদের জন্য এই দিনটি নাকবা (চরম বিপর্যয়ের দিন) হিসেবে স্মরণীয়। এদিন ইহুদিবাদী বাহিনীর হাতে ফিলিস্তিনিরা গণহত্যার শিকার হয় এবং দেশছাড়া হতে বাধ্য হয়।
গত সপ্তাহে তাপমাত্রা বৃদ্ধির পাশাপাশি প্রবল বাতাসের কারণে মধ্য ইসরাইলের বিভিন্ন শহরে দাবানল ছড়িয়ে পড়ে। এতে প্রায় ১০ হাজার ডুনাম (২,৫০০ একর) এলাকা পুড়ে যায়। এতে অন্তত নয়জন আহত হন। উদ্ধার কর্তৃপক্ষ সেসব এলাকা থেকে বাসিন্দাদের সরিয়ে নিতে বাধ্য হয়।
সূত্র : আনাদোলু এজেন্সি