, সোমবার, ০৯ জুন ২০২৫, ২৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
সকল জেলায় সাংবাদিক নিয়োগ চলছে

যুক্তরাজ্যে স্ত্রী হত্যার দায় স্বীকার করলো সিলেটের হাবিবুর

যুক্তরাজ্যের ব্র্যাডফোর্ডে নিজের শিশু সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে খাবার কিনতে যাওয়ার সময় ছুরিকাঘাতে নিহত কুলসুমা আক্তার (২৭) হত্যার দায় স্বীকার করেছেন তার স্বামী হাবিবুর রহমান মাসুম (২৬)। ২০২৪ সালের ৬ এপ্রিল ব্র্যাডফোর্ডের ওয়েস্টগেট ও ড্রিউটন রোডের সংযোগস্থলে এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়।

বৃহস্পতিবার (৫ জুন) ব্র্যাডফোর্ড ক্রাউন কোর্টে হাজির হয়ে হাবিবুর রহমান মাসুম এই হত্যার দায় স্বীকার করেন। আদালতে তার বিরুদ্ধে আনা দুটি অভিযোগই মেনে নিয়েছেন তিনি। আদালত বিচার শুরু না হওয়া পর্যন্ত মাসুমকে জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। আগামী সোমবার (৯ জুন) এ ঘটনায় আনুষ্ঠানিকভাবে বিচার শুরু হবে তার।

আদালতে শুনানির সময় বাংলা দোভাষীর সহায়তা নেন মাসুম। এর আগে তিনি ‘হত্যার হুমকি’, ‘পিছু নেওয়া’ এবং দুটি হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছিলেন।

‘পিছু নেওয়ার’ অভিযোগে বলা হয়, ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে ২০২৪ সালের এপ্রিলের মধ্যে মাসুম তার স্ত্রী কুলসুমার গতিবিধি অনুসরণ করেন। নিরাপদ আশ্রয়ে থাকার পরও তিনি কুলসুমার অবস্থান খুঁজে বের করেন, তাকে মৃত্যুর হুমকি দিয়ে আপত্তিকর বার্তা পাঠান এবং তার বাসস্থানের আশপাশের ছবি ও ভিডিও পাঠান।

এছাড়াও অভিযোগ রয়েছে, তিনি তার স্ত্রীর অস্থায়ী বাসস্থানের কাছে ঘোরাঘুরি করতেন, যা কুলসুমার মনে চরম আতঙ্ক, মানসিক চাপ এবং সম্ভাব্য সহিংসতার ভয় তৈরি করেছিল।

হত্যাকাণ্ডের দিন ইফতারের আগে কুলসুমা তার শিশুপুত্রকে নিয়ে খাবার কিনতে বের হলে, আগে থেকেই ওঁৎ পেতে থাকা মাসুম ধারালো ছুরি দিয়ে একাধিকবার আঘাত করেন স্ত্র কুলসুমাকে। তাকে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া হলেও গুরুতর আঘাতের কারণে মারা যায় সে। পুলিশ নিশ্চিত করেছে, হামলার সময় অক্ষত ছিল শিশুটি।

হাবিবুর রহমান মাসুমের বাড়ি সিলেট জেলার বিশ্বনাথে। পুলিশ ও নিহতের পরিবারের সূত্র জানায়, মাসুম ও কুলসুমা দম্পতি হত্যা ঘটনার দুই বছর আগে সিলেটের বিশ্বনাথ থেকে যুক্তরাজ্যে আসেন। মাসুম আসেন শিক্ষার্থী ভিসায় এবং স্ত্রী কুলসুমা (ঘরোয়া নাম শিউলী) আসেন ডিপেন্ডেন্ড ( নির্ভরশীল) ভিসায়।

প্রথমে ওল্ডহাম এলাকায় বসবাস শুরু করেন তারা। পারিবারিক কলহের কারণে একপর্যায়ে বিষয়টি পুলিশের হস্তক্ষেপে গড়ায়। পরে পুলিশ কুলসুমাকে সামাজিক সেবামূলক সংস্থার সহায়তায় নিরাপদে ব্র্যাডফোর্ডে স্থানান্তর করে। কিন্তু পুলিশের নিষেধ সত্ত্বেও মাসুম গোপনে তার স্ত্রীর ওপর নজরদারি করতে থাকেন এবং শেষ পর্যন্ত ঘটান এই নির্মম হত্যাকাণ্ড।

জনপ্রিয়

যুক্তরাজ্যে স্ত্রী হত্যার দায় স্বীকার করলো সিলেটের হাবিবুর

প্রকাশের সময় : ০৮:৫০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৭ জুন ২০২৫

যুক্তরাজ্যের ব্র্যাডফোর্ডে নিজের শিশু সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে খাবার কিনতে যাওয়ার সময় ছুরিকাঘাতে নিহত কুলসুমা আক্তার (২৭) হত্যার দায় স্বীকার করেছেন তার স্বামী হাবিবুর রহমান মাসুম (২৬)। ২০২৪ সালের ৬ এপ্রিল ব্র্যাডফোর্ডের ওয়েস্টগেট ও ড্রিউটন রোডের সংযোগস্থলে এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়।

বৃহস্পতিবার (৫ জুন) ব্র্যাডফোর্ড ক্রাউন কোর্টে হাজির হয়ে হাবিবুর রহমান মাসুম এই হত্যার দায় স্বীকার করেন। আদালতে তার বিরুদ্ধে আনা দুটি অভিযোগই মেনে নিয়েছেন তিনি। আদালত বিচার শুরু না হওয়া পর্যন্ত মাসুমকে জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। আগামী সোমবার (৯ জুন) এ ঘটনায় আনুষ্ঠানিকভাবে বিচার শুরু হবে তার।

আদালতে শুনানির সময় বাংলা দোভাষীর সহায়তা নেন মাসুম। এর আগে তিনি ‘হত্যার হুমকি’, ‘পিছু নেওয়া’ এবং দুটি হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছিলেন।

‘পিছু নেওয়ার’ অভিযোগে বলা হয়, ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে ২০২৪ সালের এপ্রিলের মধ্যে মাসুম তার স্ত্রী কুলসুমার গতিবিধি অনুসরণ করেন। নিরাপদ আশ্রয়ে থাকার পরও তিনি কুলসুমার অবস্থান খুঁজে বের করেন, তাকে মৃত্যুর হুমকি দিয়ে আপত্তিকর বার্তা পাঠান এবং তার বাসস্থানের আশপাশের ছবি ও ভিডিও পাঠান।

এছাড়াও অভিযোগ রয়েছে, তিনি তার স্ত্রীর অস্থায়ী বাসস্থানের কাছে ঘোরাঘুরি করতেন, যা কুলসুমার মনে চরম আতঙ্ক, মানসিক চাপ এবং সম্ভাব্য সহিংসতার ভয় তৈরি করেছিল।

হত্যাকাণ্ডের দিন ইফতারের আগে কুলসুমা তার শিশুপুত্রকে নিয়ে খাবার কিনতে বের হলে, আগে থেকেই ওঁৎ পেতে থাকা মাসুম ধারালো ছুরি দিয়ে একাধিকবার আঘাত করেন স্ত্র কুলসুমাকে। তাকে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া হলেও গুরুতর আঘাতের কারণে মারা যায় সে। পুলিশ নিশ্চিত করেছে, হামলার সময় অক্ষত ছিল শিশুটি।

হাবিবুর রহমান মাসুমের বাড়ি সিলেট জেলার বিশ্বনাথে। পুলিশ ও নিহতের পরিবারের সূত্র জানায়, মাসুম ও কুলসুমা দম্পতি হত্যা ঘটনার দুই বছর আগে সিলেটের বিশ্বনাথ থেকে যুক্তরাজ্যে আসেন। মাসুম আসেন শিক্ষার্থী ভিসায় এবং স্ত্রী কুলসুমা (ঘরোয়া নাম শিউলী) আসেন ডিপেন্ডেন্ড ( নির্ভরশীল) ভিসায়।

প্রথমে ওল্ডহাম এলাকায় বসবাস শুরু করেন তারা। পারিবারিক কলহের কারণে একপর্যায়ে বিষয়টি পুলিশের হস্তক্ষেপে গড়ায়। পরে পুলিশ কুলসুমাকে সামাজিক সেবামূলক সংস্থার সহায়তায় নিরাপদে ব্র্যাডফোর্ডে স্থানান্তর করে। কিন্তু পুলিশের নিষেধ সত্ত্বেও মাসুম গোপনে তার স্ত্রীর ওপর নজরদারি করতে থাকেন এবং শেষ পর্যন্ত ঘটান এই নির্মম হত্যাকাণ্ড।