, বুধবার, ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ২১ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
ওসমানীনগরে দোকান থেকে জুয়েলার্স শ্রমিকের লাশ উদ্ধার মৌলভীবাজারে দেশীয় অস্ত্রসহ ৫ জন আটক জ্ঞান অর্জন করে শিক্ষার্থীদের প্রকৃত মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে হবে : লালাবাজারে জেলা প্রশাসক আগামীকাল বুধবার সিলেটে আসছেন জামায়াতের আমীর ডা. শফিকুর রহমান  মৌলভীবাজারে হাসপাতালে গৃহবধূর মরদেহ রেখে পালালেন স্বামী ও শাশুড়ি বুধবার সিলেটের বিভিন্ন এলাকায় টানা ৯ ঘণ্টা থাকবে না বিদ্যুৎ সিলেট-৪ আসনের প্রস্তাবে ‘না’, বিএনপির স্থায়ী কমিটির তলবে ঢাকায় আরিফ সিলেট-৫: জোট নাকি দলীয় প্রার্থী—দ্বিধায় বিএনপি এই তালিকাই চূড়ান্ত নয়, যেকোনো সময় পরিবর্তন হতে পারে : মির্জা ফখরুল অক্টোবর মাসে সিলেটে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২৮ জন

অকারণে জুমার নামাজে ছেড়ে দিলে ২ বছরের দণ্ড, মালয়েশিয়ার রাজ্যে নতুন আইন

অকারণে জুমার নামাজ ছেড়ে দিলে মুসলিম পুরুষদের জন্য সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ড বা মোটা অংকের জরিমানার ঘোষণা দিয়েছে মালয়েশিয়ার তেরেঙ্গানু রাজ্য সরকার।

রাজ্যটি বর্তমানে শাসন করছে দেশটির রক্ষণশীল প্যান-মালয়েশিয়ান ইসলামিক পার্টি (পাস)।

সোমবার রাজ্য কর্তৃপক্ষ জানায়, শরিয়াহ ফৌজদারি অপরাধ (তাকজির) আইন অনুযায়ী অপরাধীদের সর্বোচ্চ তিন হাজার রিঙ্গিত (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৮৬ হাজার টাকা) জরিমানা কিংবা সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ড, অথবা উভয় দণ্ড দেওয়া হবে।

তেরেঙ্গানু রাজ্য নির্বাহী কাউন্সিলের সদস্য মুহাম্মদ খালিল আবদুল হাদি সতর্ক করে বলেন, “এমনকি একবার জুমার নামাজ ছেড়ে দিলেও তা দণ্ডনীয় অপরাধ হবে।”

এর আগে টানা তিন সপ্তাহ জুমার নামাজে অনুপস্থিত থাকলে শাস্তির বিধান ছিল। তিনি আরও বলেন, “একটি বিষয় মনে করিয়ে দেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ যে, জুমার নামাজ শুধু ধর্মীয় প্রতীক নয়, বরং মুসলমানদের আনুগত্যের প্রকাশ। তাই দণ্ড দেওয়া হবে কেবল শেষ উপায় হিসেবে, যখন কেউ বারবার এই বিষয়টি উপেক্ষা করবে।”

রাজ্য সরকার জানিয়েছে, মানুষকে এ বাধ্যবাধকতার কথা মনে করিয়ে দিতে মসজিদগুলোতে ব্যানার টানানো হবে। সেইসঙ্গে অনুপস্থিতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে জনগণের অভিযোগ অথবা টহল দলের মাধ্যমে।

এটি রাজ্যের ক্ষমতাসীন পাস দলের বৃহত্তর উদ্যোগের অংশ, যারা মালয়েশিয়ায় শরিয়াহ আইনের কঠোর প্রয়োগ চায়। দলটি দেশের পার্লামেন্টে সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল এবং ১৩টি রাজ্যের মধ্যে চারটিতে শাসন করছে এটি। অতীতে দলটি হুদুদ আইন প্রবর্তনেরও চেষ্টা করেছে, যেখানে চুরির শাস্তি অঙ্গচ্ছেদ এবং ব্যভিচারের শাস্তি পাথর ছোড়ার মতো শাস্তির বিধান ছিল।

উল্লেখ্য, মালয়েশিয়ায় দ্বৈত আইনি কাঠামো রয়েছে- মুসলিমদের জন্য ব্যক্তিগত ও পারিবারিক বিষয়ে শরিয়াহ আইন, পাশাপাশি সিভিল আইনও কার্যকর। তিন কোটি ৩০ লাখ জনসংখ্যার এই দেশের দুই-তৃতীয়াংশ জাতিগত মালয় (যাদের আইনের দৃষ্টিতে সবাই মুসলিম), বাকি অংশে চীনা ও ভারতীয় সংখ্যালঘু রয়েছে।

গত নভেম্বরেও জোহর রাজ্যের শীর্ষ ইসলামি কর্মকর্তা জানিয়েছিলেন, রাজ্যে মুসলিম পুরুষদের জুমার নামাজে উপস্থিতি নিশ্চিত করতে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এছাড়া, গত বছর ফেব্রুয়ারিতে মালয়েশিয়ার সর্বোচ্চ আদালত এক ডজনেরও বেশি শরিয়াহভিত্তিক রাজ্য আইন বাতিল করে দেয়, যা ইসলামপন্থিদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। তারা আশঙ্কা প্রকাশ করেন, এতে দেশব্যাপী শরিয়াহ আদালতের কর্তৃত্ব দুর্বল হতে পারে।

সূত্র: মালয় মেইল, ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউকে, সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট

জনপ্রিয়

ওসমানীনগরে দোকান থেকে জুয়েলার্স শ্রমিকের লাশ উদ্ধার

অকারণে জুমার নামাজে ছেড়ে দিলে ২ বছরের দণ্ড, মালয়েশিয়ার রাজ্যে নতুন আইন

প্রকাশের সময় : ১০:১৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২০ আগস্ট ২০২৫

অকারণে জুমার নামাজ ছেড়ে দিলে মুসলিম পুরুষদের জন্য সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ড বা মোটা অংকের জরিমানার ঘোষণা দিয়েছে মালয়েশিয়ার তেরেঙ্গানু রাজ্য সরকার।

রাজ্যটি বর্তমানে শাসন করছে দেশটির রক্ষণশীল প্যান-মালয়েশিয়ান ইসলামিক পার্টি (পাস)।

সোমবার রাজ্য কর্তৃপক্ষ জানায়, শরিয়াহ ফৌজদারি অপরাধ (তাকজির) আইন অনুযায়ী অপরাধীদের সর্বোচ্চ তিন হাজার রিঙ্গিত (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৮৬ হাজার টাকা) জরিমানা কিংবা সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ড, অথবা উভয় দণ্ড দেওয়া হবে।

তেরেঙ্গানু রাজ্য নির্বাহী কাউন্সিলের সদস্য মুহাম্মদ খালিল আবদুল হাদি সতর্ক করে বলেন, “এমনকি একবার জুমার নামাজ ছেড়ে দিলেও তা দণ্ডনীয় অপরাধ হবে।”

এর আগে টানা তিন সপ্তাহ জুমার নামাজে অনুপস্থিত থাকলে শাস্তির বিধান ছিল। তিনি আরও বলেন, “একটি বিষয় মনে করিয়ে দেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ যে, জুমার নামাজ শুধু ধর্মীয় প্রতীক নয়, বরং মুসলমানদের আনুগত্যের প্রকাশ। তাই দণ্ড দেওয়া হবে কেবল শেষ উপায় হিসেবে, যখন কেউ বারবার এই বিষয়টি উপেক্ষা করবে।”

রাজ্য সরকার জানিয়েছে, মানুষকে এ বাধ্যবাধকতার কথা মনে করিয়ে দিতে মসজিদগুলোতে ব্যানার টানানো হবে। সেইসঙ্গে অনুপস্থিতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে জনগণের অভিযোগ অথবা টহল দলের মাধ্যমে।

এটি রাজ্যের ক্ষমতাসীন পাস দলের বৃহত্তর উদ্যোগের অংশ, যারা মালয়েশিয়ায় শরিয়াহ আইনের কঠোর প্রয়োগ চায়। দলটি দেশের পার্লামেন্টে সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল এবং ১৩টি রাজ্যের মধ্যে চারটিতে শাসন করছে এটি। অতীতে দলটি হুদুদ আইন প্রবর্তনেরও চেষ্টা করেছে, যেখানে চুরির শাস্তি অঙ্গচ্ছেদ এবং ব্যভিচারের শাস্তি পাথর ছোড়ার মতো শাস্তির বিধান ছিল।

উল্লেখ্য, মালয়েশিয়ায় দ্বৈত আইনি কাঠামো রয়েছে- মুসলিমদের জন্য ব্যক্তিগত ও পারিবারিক বিষয়ে শরিয়াহ আইন, পাশাপাশি সিভিল আইনও কার্যকর। তিন কোটি ৩০ লাখ জনসংখ্যার এই দেশের দুই-তৃতীয়াংশ জাতিগত মালয় (যাদের আইনের দৃষ্টিতে সবাই মুসলিম), বাকি অংশে চীনা ও ভারতীয় সংখ্যালঘু রয়েছে।

গত নভেম্বরেও জোহর রাজ্যের শীর্ষ ইসলামি কর্মকর্তা জানিয়েছিলেন, রাজ্যে মুসলিম পুরুষদের জুমার নামাজে উপস্থিতি নিশ্চিত করতে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এছাড়া, গত বছর ফেব্রুয়ারিতে মালয়েশিয়ার সর্বোচ্চ আদালত এক ডজনেরও বেশি শরিয়াহভিত্তিক রাজ্য আইন বাতিল করে দেয়, যা ইসলামপন্থিদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। তারা আশঙ্কা প্রকাশ করেন, এতে দেশব্যাপী শরিয়াহ আদালতের কর্তৃত্ব দুর্বল হতে পারে।

সূত্র: মালয় মেইল, ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউকে, সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট