, বুধবার, ১৮ জুন ২০২৫, ৪ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
সিলেটে দুই উপদেষ্টার গাড়ি আটকে রেখে বিক্ষোভের ঘটনায় গ্রেপ্তার ৩ সুনামগঞ্জে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে যুবদল নেতাকে হত্যা জকিগঞ্জে নদী ভাঙনের আশু সমাধানের দাবিতে উপজেলা প্রশাসক এর সাথে সাক্ষাৎ এবং স্মারকলিপি প্রদান যুবকদের মনুষ্যত্ববোধকে লালন করে মানবতার সেবা করে যেতে হবে : মেজর জেনারেল (অব.) অধ্যাপক ডা. মো. আজিজুল ইসলাম সিলেটের দুই যুবলীগ নেতাকে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার তারুণ্যের শক্তি আগামীর অভিভাবক – তারেক রহমান সিলেটে করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত : আক্রান্ত দুইজন ‘সাংবাদিকতার নাম ভাঙ্গিয়ে অপরাধ করে কেউ পার পাবে না’ সাংবাদিকদের কল্যাণে ‘বিশ্বনাথ প্রেসক্লাব ওয়েল ফেয়ার ফান্ড’ গঠনের উদ্যোগ গোয়াইনঘাট প্রবাসী সমাজ কল্যাণ পরিষদের ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠিত
বিজ্ঞাপন :
সকল জেলায় সাংবাদিক নিয়োগ চলছে

ঈদকে কেন্দ্র করে সিলেটের পর্যটন স্পটগুলোতে দর্শনার্থীদের ভিড়

ঈদুল ফিতরে টানা নয়দিনের সরকারি ছুটি কাটাতে সিলেটের পর্যটন ও বিনোদনকেন্দ্রগুলোতে পর্যটকের ঢল নেমেছে। জেলার সবগুলো পর্যটনকেন্দ্রই এখন লোকে লোকারণ্য। পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে নেই ঠাঁই। প্রকৃতিকন্যা জাফলং, ভোলাগঞ্জের সাদা আর বিছানাকান্দি অথবা চা-বাগান যে দিকেই চোখ যায় সেখানেই ভ্রমণপিপাসুদের ভিড়।

পর্যটকদের ঢল নামায় খুশি পর্যটকনির্ভর পেশার মানুষেরা। হোটেল-মোটেল ব্যবসায়ী, ট্যুর গাইড, আলোকচিত্র শিল্পীরা বলছেন, কিছুদিন বিরতি দিয়ে হলেও প্রাণ ফিরেছে সিলেটের পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে।

প্রকৃতির টানে ছুটে আসা পর্যটকদের বাঁধভাঙা আনন্দ-উচ্ছ্বাসে সিলেটের পর্যটনকেন্দ্রলোতে অন্যরকম এক আবহের সৃষ্টি হয়েছে। ঈদের ছুটির দ্বিতীয় দিনে মুখরিত পর্যটনকেন্দ্রসমূহ। ঈদের দিন বিকেলে এখানকার চা-বাগানগুলোতে পর্যটকদের ভিড় দেখা গেছে সবচেয়ে বেশি। জল, পাহাড়-টিলা, নদী আর পাথর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর গোয়াইনঘাটের জাফলং, বিছানাকান্দি, জৈন্তাপুরের সারি নদী, কোম্পানিগঞ্জের সাদাপাথর, উৎমাছড়া এবং মিঠাপানির একমাত্র জলারবন রাতারগুলের সবুজের সমারোহে পর্যটকের ভিড়।

এছাড়া সিলেট নগরের এডভেঞ্চার ওয়ার্ল্ড, শহরতলির ড্রিমল্যান্ড, এমএজি ওসমানী শিশুপার্ক, চা-বাগানের ছড়ায় স্থাপিত ওয়াকওয়েতেও শিশু থেকে শুরু করে নানা বয়সী লোকজনের ভিড়। সিলেট শহরতলির প্রতিটি পর্যটনকেন্দ্রও পর্যটকদের ভিড় ছিল দেখার মতো।

দরগাহে হযরত শাহজালাল (রহ.) ও হযরত শাহপরাণ (রহ.)-এর মাজারের পাশাপাশি সিলেট নগরের বিভিন্ন পার্কগুলোতে দল বেঁধে গাড়ি নিয়ে ছুটে আসছেন পর্যটকরা। সিলেটের সবকটি হোটেল-মোটেলেও রুম খালি নেই। সবই বুকড হয়ে গেছে।

নারায়নগঞ্জ থেকে সিলেটে ঘুরতে আসা তানজিলা পারভীন নামের এক পর্যটক বলেন, ভারতের মেঘালয় পাহাড় ঘেঁষা প্রকৃতির অপরূপ লীলাভূমি প্রকৃতিকন্যা জাফলং, পান্তুমাই-মায়াবি ঝর্ণা, জল-পাথরের স্বচ্ছ-সফেদ পানি আর মিঠাপানির একমাত্র সোয়াম্প ফরেস্ট রাতারগুলের অপরূপ সবুজ দৃশ্য হাতছানি দিয়ে যেন আমাকে ডাকে। তাই এবার পরিবার নিয়ে সিলেটের পর্যটনস্পটগুলো ঘুরে দেখতে এসেছি।

তানজিলা আরও বলেন, সিলেটের পর্যটনকেন্দ্রগুলো দেশের অন্য যে কোনো পর্যটন এলাকা থেকে একটু আলাদা। তাই লম্বা ছুটি পেলেই এখানে ঘুরতে আসি।

চট্টগ্রাম থেকে বন্ধুদের সাথে ঘুরতে আসা নাজিম উদ্দিন বলেন, প্রতি ঈদের ছুটিতেই আমরা বন্ধুরা মিলে কোথাও না কোথাও ঘুরতে যাই। এবার ঈদে আমরা জাফলং, সাদাপাথর ও বিছানাকান্দি এসেছি। বন্ধুরা বাঁধভাঙা আনন্দ-উচ্ছ্বাস করছে।

সিলেটের মেঘালয়ের কুলঘেঁষা ভোলাগঞ্জের সাদাপারের শীতল পানিতে শরীর জুড়াতে এসেছেন জামালপুরের যুবক দ্বীন ইসলাম।

এ ব্যাপারে আলাপকালে তিনি বলেন, সিলেটের বিভিন্ন স্থান আগেও এসেছি, কিন্তু সাদাপাথর এ প্রথম এসেছি। এখানে স্বচ্ছ পানির নিচে জমে থাকা সাদাপাথর দেখে ভালোই লাগছে। ভারত থেকে নেমে আসা হিমশীতল পানিতে ঘা-ভাসিয়ে দিলে এ গরমে অনেক রোমাঞ্চকর অনুভূতি অনুভব করা যায়।

পাহাড়, টিলা আর দিগন্ত বিস্তৃত চা-বাগান যেন সিলেটকে ঢেকে রেখেছে সবুজ চাঁদরে। যেখানে পর্যটকরা মুগ্ধ হন, প্রেমে পড়েন শীতল প্রকৃতির এ লীলাভূমিতে। সিলেটকে বলা হয় দু’টি পাতা একটি কুঁড়ির দেশ। সিলেটের চা-বাগানগুলোতে পর্যটকদের উপচেপড়া ভিড় ছিল। স্থানীয় পর্যটকসহ ঈদের দিনে হাজার হাজার পর্যটকদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মত।
মঙ্গলবার (১লা এপ্রিল) বিকেলে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাজার হাজার পর্যটক সিলেটের তারাপুর, লাক্কাতুরা, মালনীছড়াসহ বিভিন্ন চা-বাগান দেখতে ছুটে এসেছেন।

অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশ (আটাব)-এর সাবেক সভাপতি ও সিলেট চেম্বারের সাবেক সভাপতি খন্দকার সিপার আহমদ বলেন, “সিলেটের পর্যটন খাত ছিল লোকসানের মুখে। এবার সেই ক্ষতি পুষিয়ে নেয়ার চেষ্টা চলছে। এবার দীর্ঘ ছুটি হওয়ার কারণে পর্যটক উপস্থিতিও বাড়বে কয়েকগুণ। এই সময়টাতে ডাকাতি-ছিনতাই প্রতিরোধে পুলিশকে সতর্ক থাকতে হবে। অন্তত ১০ লাখ পর্যটক উপস্থিতির সম্ভাবনা রয়েছে এবার।”

সিলেটের পর্যটন কেন্দ্রগুলোর মধ্যে জাফলং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সেখানকার গ্রিন রিসোর্টের স্বত্বাধিকারী বাবলু বখত বলেন, ঈদুল ফিতরে সাধারণত ঢল নামে পর্যটক দর্শনার্থীদের। এরই লক্ষ্যে আমাদের কাস্টমারদের কথা বিবেচনা করে আমরা বাড়তি ব্যবস্থা নিয়েছি।

হোটেল ব্যবসায়ী আবুল কালাম জানান, ভ্রমণে আসা পর্যটক দর্শনার্থীদের নির্ভেজাল খাবার পরিবেশন করে থাকি। আমরা বহু লোকসান গুনেছি, এবার অন্তত লাভ দেখব বলে আশা করি।

সিলেট হোটেল অ্যান্ড গেস্ট হাউস ওনার্স গ্রুপের সাবেক সভাপতি সুমাত নূরী চৌধুরী জুয়েল জানান, এবার বিভিন্ন হোটেলে ব্যাপক হারে বুকিং হয়েছে। এরজন্য তারা ব্যবসা নিয়ে আশাবাদী। তিনি বলেন, একসময় পদ্মা সেতু উদ্বোধনের প্রভাব পড়েছিল সিলেটে। আমরা মনে করি, মানুষ আবার সিলেটমুখী হয়েছে। এর সুফল পাবেন সিলেটের ব্যবসায়ীরা।

দি সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) ফয়েজ হাসান ফেরদৌস জানান, এই ঈদে পর্যটন খাত থেকে শত কোটি টাকার ব্যবসার আশা করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, আমরা মনে করি প্রবাসী অধ্যুসিত সিলেটে পর্যটন শিল্পের বিকাশ ঘটলে আমাদের প্রবাসী বর্তমান প্রজন্মকে সিলেটমুখি করা যাবে। এরজন্য রাস্তাঘাটের উন্নয়ন জরুরি।

সিলেট জেলা পুলিশের মিডিয়া ফোকাল পয়েন্ট কর্মকর্তা মো. সম্রাট তালুকদার জানান, পর্যটকদের নিরাপত্তায় প্রতিটি স্পটে থাকছে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা। টুরিস্ট পুলিশের সাথে সমন্বয় করে কাজ করা হবে। পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পোশাকধারী পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকে পুলিশ সদস্য মোতায়ন করা হয়েছে।

সিলেটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ বলেন, সিলেটের পর্যটন স্পটসমূহে পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তা বিধানে এবং তাদের ভ্রমণ নির্বিঘ্নকরণে সংশ্লিষ্ট উপজেলা প্রশাসন পদক্ষেপ নিয়েছে। আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীও কাজ করছে। সকল মৌসুমে সিলেটের পর্যটন কেন্দ্রগুলো সজাগ থাকে। এবারো পর্যটকরা সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে পারবেন।

জনপ্রিয়

সিলেটে দুই উপদেষ্টার গাড়ি আটকে রেখে বিক্ষোভের ঘটনায় গ্রেপ্তার ৩

ঈদকে কেন্দ্র করে সিলেটের পর্যটন স্পটগুলোতে দর্শনার্থীদের ভিড়

প্রকাশের সময় : ০২:৪৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ এপ্রিল ২০২৫

ঈদুল ফিতরে টানা নয়দিনের সরকারি ছুটি কাটাতে সিলেটের পর্যটন ও বিনোদনকেন্দ্রগুলোতে পর্যটকের ঢল নেমেছে। জেলার সবগুলো পর্যটনকেন্দ্রই এখন লোকে লোকারণ্য। পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে নেই ঠাঁই। প্রকৃতিকন্যা জাফলং, ভোলাগঞ্জের সাদা আর বিছানাকান্দি অথবা চা-বাগান যে দিকেই চোখ যায় সেখানেই ভ্রমণপিপাসুদের ভিড়।

পর্যটকদের ঢল নামায় খুশি পর্যটকনির্ভর পেশার মানুষেরা। হোটেল-মোটেল ব্যবসায়ী, ট্যুর গাইড, আলোকচিত্র শিল্পীরা বলছেন, কিছুদিন বিরতি দিয়ে হলেও প্রাণ ফিরেছে সিলেটের পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে।

প্রকৃতির টানে ছুটে আসা পর্যটকদের বাঁধভাঙা আনন্দ-উচ্ছ্বাসে সিলেটের পর্যটনকেন্দ্রলোতে অন্যরকম এক আবহের সৃষ্টি হয়েছে। ঈদের ছুটির দ্বিতীয় দিনে মুখরিত পর্যটনকেন্দ্রসমূহ। ঈদের দিন বিকেলে এখানকার চা-বাগানগুলোতে পর্যটকদের ভিড় দেখা গেছে সবচেয়ে বেশি। জল, পাহাড়-টিলা, নদী আর পাথর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর গোয়াইনঘাটের জাফলং, বিছানাকান্দি, জৈন্তাপুরের সারি নদী, কোম্পানিগঞ্জের সাদাপাথর, উৎমাছড়া এবং মিঠাপানির একমাত্র জলারবন রাতারগুলের সবুজের সমারোহে পর্যটকের ভিড়।

এছাড়া সিলেট নগরের এডভেঞ্চার ওয়ার্ল্ড, শহরতলির ড্রিমল্যান্ড, এমএজি ওসমানী শিশুপার্ক, চা-বাগানের ছড়ায় স্থাপিত ওয়াকওয়েতেও শিশু থেকে শুরু করে নানা বয়সী লোকজনের ভিড়। সিলেট শহরতলির প্রতিটি পর্যটনকেন্দ্রও পর্যটকদের ভিড় ছিল দেখার মতো।

দরগাহে হযরত শাহজালাল (রহ.) ও হযরত শাহপরাণ (রহ.)-এর মাজারের পাশাপাশি সিলেট নগরের বিভিন্ন পার্কগুলোতে দল বেঁধে গাড়ি নিয়ে ছুটে আসছেন পর্যটকরা। সিলেটের সবকটি হোটেল-মোটেলেও রুম খালি নেই। সবই বুকড হয়ে গেছে।

নারায়নগঞ্জ থেকে সিলেটে ঘুরতে আসা তানজিলা পারভীন নামের এক পর্যটক বলেন, ভারতের মেঘালয় পাহাড় ঘেঁষা প্রকৃতির অপরূপ লীলাভূমি প্রকৃতিকন্যা জাফলং, পান্তুমাই-মায়াবি ঝর্ণা, জল-পাথরের স্বচ্ছ-সফেদ পানি আর মিঠাপানির একমাত্র সোয়াম্প ফরেস্ট রাতারগুলের অপরূপ সবুজ দৃশ্য হাতছানি দিয়ে যেন আমাকে ডাকে। তাই এবার পরিবার নিয়ে সিলেটের পর্যটনস্পটগুলো ঘুরে দেখতে এসেছি।

তানজিলা আরও বলেন, সিলেটের পর্যটনকেন্দ্রগুলো দেশের অন্য যে কোনো পর্যটন এলাকা থেকে একটু আলাদা। তাই লম্বা ছুটি পেলেই এখানে ঘুরতে আসি।

চট্টগ্রাম থেকে বন্ধুদের সাথে ঘুরতে আসা নাজিম উদ্দিন বলেন, প্রতি ঈদের ছুটিতেই আমরা বন্ধুরা মিলে কোথাও না কোথাও ঘুরতে যাই। এবার ঈদে আমরা জাফলং, সাদাপাথর ও বিছানাকান্দি এসেছি। বন্ধুরা বাঁধভাঙা আনন্দ-উচ্ছ্বাস করছে।

সিলেটের মেঘালয়ের কুলঘেঁষা ভোলাগঞ্জের সাদাপারের শীতল পানিতে শরীর জুড়াতে এসেছেন জামালপুরের যুবক দ্বীন ইসলাম।

এ ব্যাপারে আলাপকালে তিনি বলেন, সিলেটের বিভিন্ন স্থান আগেও এসেছি, কিন্তু সাদাপাথর এ প্রথম এসেছি। এখানে স্বচ্ছ পানির নিচে জমে থাকা সাদাপাথর দেখে ভালোই লাগছে। ভারত থেকে নেমে আসা হিমশীতল পানিতে ঘা-ভাসিয়ে দিলে এ গরমে অনেক রোমাঞ্চকর অনুভূতি অনুভব করা যায়।

পাহাড়, টিলা আর দিগন্ত বিস্তৃত চা-বাগান যেন সিলেটকে ঢেকে রেখেছে সবুজ চাঁদরে। যেখানে পর্যটকরা মুগ্ধ হন, প্রেমে পড়েন শীতল প্রকৃতির এ লীলাভূমিতে। সিলেটকে বলা হয় দু’টি পাতা একটি কুঁড়ির দেশ। সিলেটের চা-বাগানগুলোতে পর্যটকদের উপচেপড়া ভিড় ছিল। স্থানীয় পর্যটকসহ ঈদের দিনে হাজার হাজার পর্যটকদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মত।
মঙ্গলবার (১লা এপ্রিল) বিকেলে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাজার হাজার পর্যটক সিলেটের তারাপুর, লাক্কাতুরা, মালনীছড়াসহ বিভিন্ন চা-বাগান দেখতে ছুটে এসেছেন।

অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশ (আটাব)-এর সাবেক সভাপতি ও সিলেট চেম্বারের সাবেক সভাপতি খন্দকার সিপার আহমদ বলেন, “সিলেটের পর্যটন খাত ছিল লোকসানের মুখে। এবার সেই ক্ষতি পুষিয়ে নেয়ার চেষ্টা চলছে। এবার দীর্ঘ ছুটি হওয়ার কারণে পর্যটক উপস্থিতিও বাড়বে কয়েকগুণ। এই সময়টাতে ডাকাতি-ছিনতাই প্রতিরোধে পুলিশকে সতর্ক থাকতে হবে। অন্তত ১০ লাখ পর্যটক উপস্থিতির সম্ভাবনা রয়েছে এবার।”

সিলেটের পর্যটন কেন্দ্রগুলোর মধ্যে জাফলং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সেখানকার গ্রিন রিসোর্টের স্বত্বাধিকারী বাবলু বখত বলেন, ঈদুল ফিতরে সাধারণত ঢল নামে পর্যটক দর্শনার্থীদের। এরই লক্ষ্যে আমাদের কাস্টমারদের কথা বিবেচনা করে আমরা বাড়তি ব্যবস্থা নিয়েছি।

হোটেল ব্যবসায়ী আবুল কালাম জানান, ভ্রমণে আসা পর্যটক দর্শনার্থীদের নির্ভেজাল খাবার পরিবেশন করে থাকি। আমরা বহু লোকসান গুনেছি, এবার অন্তত লাভ দেখব বলে আশা করি।

সিলেট হোটেল অ্যান্ড গেস্ট হাউস ওনার্স গ্রুপের সাবেক সভাপতি সুমাত নূরী চৌধুরী জুয়েল জানান, এবার বিভিন্ন হোটেলে ব্যাপক হারে বুকিং হয়েছে। এরজন্য তারা ব্যবসা নিয়ে আশাবাদী। তিনি বলেন, একসময় পদ্মা সেতু উদ্বোধনের প্রভাব পড়েছিল সিলেটে। আমরা মনে করি, মানুষ আবার সিলেটমুখী হয়েছে। এর সুফল পাবেন সিলেটের ব্যবসায়ীরা।

দি সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) ফয়েজ হাসান ফেরদৌস জানান, এই ঈদে পর্যটন খাত থেকে শত কোটি টাকার ব্যবসার আশা করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, আমরা মনে করি প্রবাসী অধ্যুসিত সিলেটে পর্যটন শিল্পের বিকাশ ঘটলে আমাদের প্রবাসী বর্তমান প্রজন্মকে সিলেটমুখি করা যাবে। এরজন্য রাস্তাঘাটের উন্নয়ন জরুরি।

সিলেট জেলা পুলিশের মিডিয়া ফোকাল পয়েন্ট কর্মকর্তা মো. সম্রাট তালুকদার জানান, পর্যটকদের নিরাপত্তায় প্রতিটি স্পটে থাকছে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা। টুরিস্ট পুলিশের সাথে সমন্বয় করে কাজ করা হবে। পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পোশাকধারী পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকে পুলিশ সদস্য মোতায়ন করা হয়েছে।

সিলেটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ বলেন, সিলেটের পর্যটন স্পটসমূহে পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তা বিধানে এবং তাদের ভ্রমণ নির্বিঘ্নকরণে সংশ্লিষ্ট উপজেলা প্রশাসন পদক্ষেপ নিয়েছে। আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীও কাজ করছে। সকল মৌসুমে সিলেটের পর্যটন কেন্দ্রগুলো সজাগ থাকে। এবারো পর্যটকরা সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে পারবেন।