সিলেটের জৈন্তাপুরের শ্রীপুরে অভিযান চালিয়ে প্রায় নিক ২০ হাজার ঘনফুট পাথর উদ্ধার করেছে উপজেলা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সমন্বিত টাস্কফোর্স।
উদ্বার পাথর প্রতিস্থাপন করা হয়েছে রাংপানিতে। আর রাংপানির নিরাপত্তার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে বিজিবি’ কে।
মঙ্গলবার সকালে উপজেলার রাংপানি থেকে লুটের পাথর প্রতিস্থাপন করা হয়। এসময় জব্দকৃত প্রায় ২৮ হাজার ঘনফুট বালু উন্মুক্ত নিলামে বিক্রি করা হয়।
জৈন্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জর্জ মিত্র চাকমার নেতৃত্বে অভিযানে উপস্থিত ছিলেন, সহকারী কমিশনার (এসিল্যান্ড) ফারজানা আক্তার লাবনী, জৈন্তাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জৈন্তাপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল বাসার মোহাম্মদ বদরুজ্জামান ছাড়াও পুলিশ ও বিজিবি সদস্যরা।
প্রশাসন জানায়, বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের নো ম্যান্স ল্যান্ড এলাকা থেকে চোরাকারবারিরা এসব পাথর ও বালু নিয়ে আসে। এতে জড়িতদের বিরুদ্ধে তদন্ত পূর্বক মামলা দায়ের করবে পুলিশ।একইসাথে সীমান্তে চোরাচালান রোধে বিজিবিকে কঠোর নজরদারি বাড়ানোর অনুরোধ জানায় প্রশাসন।
উল্লেখ্য,গত বছরের ৫ আগষ্টের পর থেকে সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার শ্রীপুর এলাকায় অবস্থিত রাংপানি পর্যটন স্পটও পাথর ডাকাতের কবলে পড়ে। কয়েক মাস ধরে রাজনৈতিক ও চিহ্নিত কিছু গোষ্ঠী নদী ও পাহাড় থেকে পাথর কেটে লুটপাট চালায়। এর ফলে পর্যটন এলাকার ট্রেডমার্ক পাথরগুলো এখন নি:শেষ।রাংপানি নদীর উৎস মেঘালয়ের জৈন্তা পাহাড়ের রংহংকং জলপ্রপাত থেকে। স্থানীয়দের ভাষায়, রাংপানি নদীর পাথর খনন ক্ষেত্র হিসেবে পরিচিত এই এলাকা নানা প্রজন্মের পর্যটক ও পরিবেশ প্রেমীদের কাছে আকর্ষণীয়।নদীর তীরের খাসিয়া সম্প্রদায়ের গ্রাম মোকামপুঞ্জি, যাকে স্থানীয়রা শুধু ‘পুঞ্জি’ নামে ডাকে, এ এলাকার ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির সাক্ষী। পুঞ্জিতে গেলে দেখা মেলে খাসিয়াদের ইতিহাস ও ঐতিহ্য।রাংপানি পর্যটন এলাকা সিনেমা শুটিংয়ের ক্ষেত্রেও পরিচিত। আশি ও নব্বইয়ের দশকে ঢাকাই চলচ্চিত্রের একাধিক দৃশ্য শ্রীপুরে ধারণ করা হয়েছে। বিশেষ করে শাবনাজ-নাঈম জুটির প্রথম ছবি ‘চাঁদনী’-র কিছু দৃশ্য শ্রীপুরের বিভিন্ন স্থানে চিত্রায়িত হয়েছিল। এই চলচ্চিত্রগুলোর মাধ্যমে এলাকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেশের দর্শকদের কাছে পরিচিত হয়েছে। তবে পাথর লুটেরাদের কবলে পড়ে সেই সৌন্দর্য আজ ম্লান।
এ বিষয়ে সিলেট ব্যাটালিয়নের (৪৮ বিজিবি) অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. নাজমুল বলেন, রাংপানি সীমান্তে নজরদারি আরও বাড়ানো হয়েছে। মূলত রাংপানি বাংলাদেশ সীমান্তে এখন নেই কোনো পাথর। যখন এখানে কোয়ারি ছিল তখনই সে জায়গার সব পাথর তুলে ফেলা হয়েছিল। বর্তমানে রাংপানি বাংলাদেশ সাইডে শুধুই পানি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরেই রাংপানিতে সীমান্ত এলাকা থেকে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন ও পাচার চলছিল। তবে টাস্কফোর্সের অভিযান ও বিজিবির সরাসরি নিয়ন্ত্রণে যাওয়ায় এখন ওই এলাকায় বন্ধ হয়েছে পাথর লুট ।