সিলেটে আড়াই মাসের মধ্যে একই পরিবারের পর পর দু’টি মোটরসাইকেল চুরি গেছে। দু’টি চুরির ঘটনায়-ই থানায় অভিযোগ পেশ করা হয়েছে। অভিযোগের কপি গ্রহণ করলে অজ্ঞাত কারণে পুলিশ তা মামলা হিসেবে রেকর্ড করছে না। আবার ঘটনার কোন হদিসও বের করতে পারছে না। চুরির শিকার পরিবারটি এ ব্যাপারে পুলিশ প্রশাসনের নির্লিপ্ততাকে দায়ী করেছেন। এ কারণে দুর্ভোগকবলিত পরিবারের সদস্যরা ক্ষুব্দ প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করেছেন। ঘটনা দু’টি ঘটেছে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ (এসএমপি)’র দক্ষিণ সুরমা থানায়।
সিলেটে নগরীর ২৯নং ওয়ার্ডের লালবাগ আবাসিক এলাকা প্রকাশ ধোপাঘাটের বাসিন্দা আজম আলীর ছেলে মোঃ ইবরাহিম রহমান মাহিন (২৩) কর্তৃক থানায় পেশকৃত অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে, তাঁর মালিকানাধীন কালো রঙের মোটরসাইকেলটি (রেজিস্ট্রেশন নং-সিলেট মেট্রো-ল-১২-২৭৯১, চেসিস নং-PS637AE71N6H81656, ইঞ্জিন নং-CE7BN2400434) গত ৩০ মে শুক্রবার রাত ১১টায় প্রতিদিনের মতো যথাযথ প্রক্রিয়ায় সাবধানতা অবলম্বন করে ফ্ল্যাক্সিবল গেইটের ভিতরে রেখে ঘুমোতে যান। পরদিন ৩১ মে শনিবার সকাল ৮টায় ঘুম থেকে উঠে গাড়িটি যথাস্থানে পাননি। পরে সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে রাত অনুমান ৩টার দিকে অন্ধকার অবস্থায় ৩/৪ জন অজ্ঞাতনামা চোর গেইটের তালা এবং মোটরসাইকেলের প্রত্যেকটি তালা ভেঙ্গে এটি চুরি করে নিয়ে যায়। সিসিটিভি ফুটেজসহ শনিবার তিনি দক্ষিণ সুরমা থানায় একটি অভিযোগ দাখিল করেছেন। পুলিশ অভিযোগপত্র গ্রহণ করলে অনুলিপিতে কোন প্রকারের রিসিভ সিল ব্যবহার করেনি।
একইভাবে গত ২৩ মার্চ সন্ধ্যা অনুমান ৭টার দিকে বাড়ির গেইটের বাইরে সতর্কতার সাথে মোঃ ইবরাহিম রহমান মাহিনের পিতা আজম আলীর (৬৬) (রেজিস্ট্রেশন নং-সিলেট হ-১৪-৪৬৮৮, চেসিস নং-BRME3GDBXDG050447, ইঞ্জিন নং-147EMF16B88447) ৮০ সিসির লাল রঙের DAYUN মোটরসাইকেলটি চুরি যায়। অনেক খোঁজাখুজির পর মোটরসাইকেলটি না পেয়ে দক্ষিণ সুরমা থানায় এসে তিনি অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অনুরূপ একটি অভিযোগ পেশ করেন। কিন্তু কার্যত আড়াই মাস গত হলেও পুলিশ অদ্যাবধি এর কোন হদিস বের করতে পারেনি।
এ ব্যাপারে দক্ষিণ সুরমা থানার অফিসার ইনচার্জের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি মোটরসাইকেল চুরির অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, গত কয়েকদিনে আমরা দক্ষিণ সুরমা ও গোলাপগঞ্জ থেকে দু’জন মোটরসাইকেল চোর আটক করেছি। ওদের সঙ্গী আরেকজন কুখ্যাত মটরসাইকেল চোর বালাগঞ্জের দিকের পালিয়ে যাওয়ায় তাকে আর গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। তবে ওই মোটরসাইকেল চোরচক্রকে গ্রেফতারে পুলিশের জোর প্রচেষ্ঠা অব্যাহত আছে।
উল্লেখ্য, গত ২৭ মে মঙ্গলবার সিলেটের দক্ষিণ সুরমা উপজেলার আইন-শৃংখলা কমিটির নিয়মিত সভায় এসএমপি’র দক্ষিণ সুরমা ও মোগলাবাজার থানা এলাকায় ঘন ঘন মোটরসাইকেল চুরির বিষয়ে ব্যাপক আলোচনা হয়। পুলিশ প্রশাসনের প্রতিনিধিরা তখন তাদের জনবল সংকটের কথা উল্লেখ করে বলেন, তারপরও মোটরসাইকেল চোরদের গ্রেফতারে পুলিশী তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।