পরিবেশগত বিবেচনায় সারাদেশে ৫১টি পাথর কোয়ারীর মধ্যে সিলেটের ৬টিসহ মোট ১৭টি পাথর কোয়ারির ইজারা স্থগিত রাখার প্রতিবাদে আজ বুধবার (৩০ এপ্রিল) বিকেল সাড়ে ৫টায় সিলেট সদর পাথর ও বালি ব্যবসায়ী মালিক সমবায় সমিতি লিমিটেড (গভ:রেজি:নং-০৫৮৯/২৫) এর আয়োজনে সমিতির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সিলেট সদর পাথর ও বালি ব্যবসায়ী মালিক সমবায় সমিতির সভাপতি ও খাদিমনগর ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মন্তাজ আলী।
সংবাদ সম্মেলনে মন্তাজ আলী লিখিত বক্তব্যে বলেন, পরিবেশের দোহাই দিয়ে গত ২৭ এপ্রিল অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সারাদেশে ৫১টি পাথর কোয়ারীর মধ্যে সিলেটের ৬টিসহ মোট ১৭টি পাথর কোয়ারির ইজারা স্থগিত করে। পাথর কোয়ারি স্থগিত হওয়ায় পাথর ব্যবসায়ী, শ্রমিক ও পরিবহন শ্রমিকদের মধ্যে নেমে এসেছে অন্ধকার। দেশের বিভিন্ন জায়গা পাথর কোয়ারি খুললেও সিলেটে পরিবেশের নামে বৈষম্য করা হচ্ছে। সিলেটের ১৭টি পাথর কোয়ারি বন্ধের সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি
পতিত ফ্যাসিস্ট আওয়ামীলীগের অভ্যন্তরে ঘাপটি মেরে বসে থাকা দরবেশ বাবা এবং আরও ভয়ঙ্কর মাফিয়া সিন্ডিকেটের স্বার্থে ভারতের চক্রান্তে মূলতঃ পাথর কোয়ারী সমূহ বন্ধ রেখে আমাদের অর্থনীতির অপূরনীয় ক্ষতি সাধন করা হয়। আওয়ামীলীগের পতন এবং হাসিনা পলায়নের পর দেশে বিপ্লবী সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
এসময়ে আমরা আশায় বুক বেঁধে ছিলাম। যে হয়তো এই সময়ই লাখো মানুষের কর্মসংস্থান পাথর কোয়ারি খোলা হবে। আপনারা ইতিমধ্যে অবগত আছেন, সরকারের খনিজ মন্ত্রণালয়ের উচ্চতর কমিটির সুপারিশে দেশের বৃহত্তর স্বার্থে পাথর কোয়ারি সমূহ খোলে দেয়ার ব্যাপারে সুপারিশ ব্যক্ত করা হয়। যথাযথ ইজারা কার্যক্রমের মাধ্যমেই পাথর কোয়ারি খোলার সরকারি সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হলে; আমরা তথা এ অঞ্চলের লাখো মানুষ আশায় বুক বাঁধি। অন্তর্বর্তী সরকারের ভেতরে ঘাপটি মেরে বসে থাকা মাফিয়া সিন্ডিকেট এবং ভারতীয় এজেন্টদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদে সম্প্রতি উপদেষ্টা পরিষদ। পরিবেশের দোহাই দিয়ে পাথর কোয়ারীর ইজারা কার্যক্রম স্থগিত করেছে। উপদেষ্টা পরিষদের এই দেশবিরোধী হটকারী সিদ্ধান্ত আমাদেরকে কেবল হতবাকই করে নাই, এই সিদ্ধান্তে আমরা অত্যন্ত মর্মাহত এবং ব্যথিত হয়েছি।
সরকার প্রতিবছর কয়েকশ কোটি টাকার রাজস্ব প্রাপ্তি ছাড়াও পাথর আমদানি বন্ধ হলে সাশ্রয় হতো বিলিয়ন ডলারের রিজার্ভের টাকা। একটা অঞ্চলের মানুষকে তাদের ন্যায্য রোজগার থেকে বঞ্চিত রেখে কখনোই একটা দেশের উন্নয়ন আশা করা যায়না। আমাদের এ অঞ্চলের মানুষের একমাত্র উপার্জনের মাধ্যম পাথর আহরণ, আমরা সরকারের নিকট দাবি জানাচ্ছি – অবিলম্বে পাথর কোয়ারি খুলে দিয়ে লাখো মানুষকে বাঁচার সুযোগ দিন। অন্যতায় আমরা নিয়মতান্ত্রিক ভাবে পুনরায় আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলে সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, স্টোন ক্রাশার মালিক সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সামসুল আলম, পাথর ব্যবসায়ী ও খাদিমনগর ইউনিয়ন ৫নং ওয়ার্ড জামায়াতের সভাপতি মুহিবুর রহমান সুলেমান, পাথর ব্যবসায়ী শানুর আহমদ, পাথর ব্যবসায়ী ও খাদিমনগর ইউনিয়ন জামায়াত নেতা জয়নুল হক, পাথর ব্যবসায়ী আব্দুল হক, সিলেট সদর পাথর ও বালি ব্যবসায়ী মালিক সমিতি লিমিটেডের সাধারণ সম্পাদক মোজাম্মেল আলম সাদ্দাম, পাথর ব্যবসায়ী ও সিলেট জেলা যুবদলের সহসাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদ শাহীন, সিলেট সদর পাথর ও বালি ব্যবসায়ী মালিক সমিতি লিমিটেডের অর্থ সম্পাদক আজাদ মিয়া, পাথর ব্যবসায়ী ও সিলেট জেলা যুবদলের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক নুরুল ইসলাম, এয়ারপোর্ট থানা শ্রমিক দলের আহবায়ক ও পাথর ব্যবসায়ী আব্দুল মুমিম, সিলেট জেলা যুবদলের সহ বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক রেহান আহমদ কামরান, পাথর ব্যবসায়ী হাফিজুর রহমান, টি ইউ রাজা, আব্দুল আহাদ, মনসুর আলম, মাওলানা হারিছ উদ্দিন, মুন্না মিয়া, তুহিন মিয়া প্রমুখ।