মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গলে উপজেলায় চলমান খরার কারণে ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তর নেমে যাচ্ছে আশঙ্কাজনকভাবে। ফলে শহর ও আশপাশের গ্রামীণ এলাকায় বহু টিউবওয়েল ও নলকূপে পানি উঠছে না। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
চৈত্রের প্রচন্ড রোদ আর দীর্ঘ সময় ধরে বৃষ্টিহীন আবহাওয়ার কারণে মাটির নিচের পানির স্তর স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক নিচে নেমে গেছে। বিশেষ করে শ্রীমঙ্গল পৌরসভা এলাকা, শহরতলী, ভাড়াউড়া, সাতগাঁও, ভুনবীর, কালিঘাট ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। কলেজ রোড বিরাইমপুরের বাসীন্দা সুরাইয়া খানম জানান, “সকালে পানি তুলতে গিয়ে দেখি টেপে পানি নেই, দীর্ঘক্ষণ মটরে সুইস দিয়ে রাখলে দেখেন পানি উঠছেনা। একেবারেই শুকনা। পরে কল মেন্ত্রী আনলে জানতে পারেন পানির স্থর নেমে যাওয়ার কারণে পানি উঠছে না। শুধু ব্যক্তিগত নলকুপ বা টিউবওয়েল নয়, অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও মসজিদ-মাদ্রাসার নলকূপেও পানি সংকট দেখা দিয়েছে। ফলে বিশুদ্ধ পানির জন্য দূর-দূড়ান্ত থেকে পানি আনতে হচ্ছে অনেককে।
শ্রীমঙ্গল উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এই পরিস্থিতি যদি আরও দীর্ঘস্থায়ী হয়, তবে কৃষি কাজেও বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে। বিশেষ করে বোরো ধান ও গ্রীষ্মকালীন সবজির উৎপাদন হুমকিতে পড়বে।
শ্রীমঙ্গল জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী মো: সাইফুল ইসলাম জানান, শ্রীমঙ্গলে বিকল্প পানির উৎস না থাকায় ভূ-গর্ভস্থ পানির উপর সবাই নির্ভরশীল। তাই পানির স্তর প্রতিবছরই কিছুটা কমে, তবে এবার বৃষ্টিপাত একেবারেই না হওয়ায় পানির স্তরটা আরও নিচে নেমে গেছে। সরকারী ভাবে বরাদ্ধ দেওয়া গভীর নলকুপ কোন টা বন্ধ হয়নি বলে তিনি জানান, ব্যাক্তি পর্যায়ে বাসা বাড়ী, এবং কৃষি ক্ষেত্রে কিছু টা বন্ধ হওয়ার খবর পেয়েছেন।
তিনি আরো বলেন, শ্রীমঙ্গলে ভূ-গর্ভস্থ পানি ছোট এমনি ছোট। চা বাগান, কৃষিসহ বাসা-বাড়ী, অফিস আদালত সবই ভূ-গর্ভস্থ পানি ব্যবহার করছেন।
এছাড়াও শ্রীমঙ্গলে নতুন করে বেশ কিছু বড় শিল্প কারখানা স্থাপন করা হয়েছে এবং আরো হচ্ছে। তারাও ভূ-গর্ভস্থ পানির উপর নির্ভরশীল। এতে পানির স্তর আরো নেমে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। তিনি মানুষকে পানির অপচয় রোধ ও সচেতন ভাবে পানি ব্যবহারে অনুরোধ জানান।