সিলেটে উৎসবমুখর পরিবেশে ও যথাযথ মর্যাদায় পালিত হচ্ছে পবিত্র ঈদুল ফিতর। সকালে ঐতিহাসিক শাহী ঈদগাহ, আলিয়া মাদ্রাসা মাঠ, শাহজালাল দরগাহ ও কুদরত উল্লাহ জামে মসজিদ সহ বিভিন্ন মসজিদ ও খোলা ময়দানে অনুষ্ঠিত হয়েছে ঈদের জামায়াত।
সিলেটে ঈদ-উল-ফিতরের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে ৭শ’ বছরের ঐতিহ্যবাহী শাহী ঈদগাহ ময়দানে। সোমবার ঈদের দিন সকাল সাড়ে ৮টায় ধনী-গবীর ভেদাভেদ ভুলে এক কাতারে দাঁড়িয়ে মুসল্লিরা ঈদের নামাজে আদায় করেন।
নামাজে অংশ নিতে ফজরের নামাজের পর থেকে নগরের বিভিন্ন এলাকা থেকে শাহী ঈদগাহ ময়দানের মুসল্লিদের সমাগম ঘটে। সুগন্ধি গায়ে মেখে জায়নামাজ ও তাসবিহ হাতে নামাজের উদ্দেশে রওয়ানা দেন মুসল্লিরা।
নামাজে ইমামতি করেন সিলেট মহানগরের বন্দরবাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব মাওলানা মুশতাক আহমদ খাঁন। প্রখ্যাত আলেম শায়খুল হাদিস আল্লামা মুফতি রশীদুর রহমান ফারুক ঈদের নামাজ শেষে খুতবা পাঠ এবং মুনাজাত পরিচালনা করেন।
দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনায় মহান আল্লাহর কাছে দু’হাত তুলে প্রার্থনা করেন মুসল্লিরা। নামাজ শেষে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা কোলাকুলির পাশাপাশি ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
ঈদ-উল-ফিতরে মুসল্লিদের নিরাপত্তায় চার স্তরের নিরাপত্তার কথা জানিয়েছেন সিলেট মহানগর পুলিশ কমিশনার। শাহী ঈদগাহে ঈদের নামাজ আয়োজনকে কেন্দ্র করে নেওয়া হয় চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। স্থাপন করা হয় সিসি ক্যামেরা। আশপাশ এলাকায় সড়কে একাধিক চেকপোস্ট ছিল। নিয়মিত টহলের পাশাপাশি সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা দায়িত্ব পালন করেন। নিরাপত্তা তদারকিতে স্থাপন করা হয় দু’টি ওয়াচ টাওয়ার।
শাহী ঈদগাহে ঈদের নামাজের আগে মুসল্লিদের উদ্দেশে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন, সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রশাসক, সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার খান মো. রেজা-উন-নবী, সাবেক মেয়র ও বিএনপি’র চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আরিফুল হক চৌধুরী। এ সময় বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ সিদ্দিকী, জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা হাবিবুর রহমান, মহানগর আমির ফখরুল ইসলাম, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এমদাদ হোসেন চৌধুরী, জাতীয় নাগরিক পার্টির কেন্দ্রীয় সদস্য ব্যারিষ্টার নূরুল হুদা জুনেদ প্রমুখসহ প্রশাসন ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
আইনশৃংখলা বাহিনী জানিয়েছে, এবার সিলেট সিটি করপোরেশন এলাকায় ৩৯২টি স্থানে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। কোনো কোনো ঈদগাহ ও মসজিদে হয় একাধিক জামাত। নামাজে মুসল্লিদের নির্বিঘ্নে যাতায়াত ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর চার স্তরের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
ঐতিহ্যবাহী শাহী ঈদগাহ ছাড়াও সিলেটের বিভিন্ন স্থানে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। দরগাহে হযরত শাহজালাল (রহ.) মাজার জামে মসজিদে সকাল সাড়ে ৮টায় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এ ছাড়া কুদরত উল্লাহ জামে মসজিদে তিনটি জামাত অনুষ্ঠিত হয়। প্রথমটি সকাল সাড়ে ৭টায়, দ্বিতীয়টি সকাল সাড়ে ৮টায় এবং তৃতীয়টি সকাল সাড়ে ৯টায়। সরকারি আলীয়া মাদ্রাসা মাঠে আনজুমানে খেদমতে কুরআন সিলেটের উদ্যোগে সকাল ৮টায় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়।