সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলংয়ের ইসিএভুক্ত (প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা) এলাকায় বিভিন্ন স্থানে ভারী যন্ত্রপাতি (এক্সকেভেটর) ব্যবহার করে বালু ও পাথর উত্তোলনের দায়ে ৩১ জনকে আসামি করে মামলা করেছে পরিবেশ অধিদপ্তর সিলেট জেলা কার্যালয়। বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫ (সংশোধিত-২০১০)-এর ধারা পাঁচ অনুসারে মামলা করেন পরিবেশ অধিদপ্তর, সিলেট জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. বদরুল হুদা।
মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) স্পেশাল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের (পরিবেশ) সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-২, সিলেটে এই মামলা হয়।
সিলেট পরিবেশ অধিদপ্তর ও মামলার অভিযোগসূত্রে জানা যায়, জাফলংয়ের ইসিএভুক্ত এলাকায় নদীর পাড়, পাড়সংলগ্ন জমি, জুম পাড়ের বেড়িবাঁধে গর্ত করে বালু ও পাথর উত্তোলন করার কারণে জাফলং-ডাউকী নদীর ভূমি ও ভূমির প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য নষ্ট , বিরূপ পরিবর্তন ও প্রতিবেশব্যবস্থার ক্ষতিসাধন করায় মামলাটি করা হয়েছে।
আসামিরা রাতে ভারী যন্ত্রপাতি (এক্সকেভেটর) ব্যবহার করে বালু ও পাথর উত্তোলনের জন্য গর্ত করে রাখে। দিনে কয়েকশ শ্রমিক দিয়ে এসব গর্ত থেকে পাথর সংগ্রহ করা হয়।
গত সোমবার (২৪ মার্চ) সেখানে অভিযান পরিচালনার সময় দেখা যায়, কয়েকশ শ্রমিক পাথর উঠানোর কাজ করছেন।
আভিযানিক দল উপস্থিত হলে শ্রমিকেরা পালান। তবে সেদিন পাথর উত্তোলনে ব্যবহৃত ২০টি মেশিন, মেশিনের পাইপ ও বিভিন্ন যন্ত্রাংশ ধ্বংস করা হয়। কয়েকটি এক্সকাভেটরও অকেজো করা হয়।
এই মামলার প্রধান আসামি করা হয়েছে জেলা বিএনপির বহিষ্কৃত যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম ওরফে শাহপরানকে। দ্বিতীয় আসামি হলেন, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা বিএনপির বহিষ্কৃত কোষাধ্যক্ষ মো. শাহ আলম (স্বপন)। এ ছাড়া আসামির তালিকায় আছেন উপজেলার মোহাম্মদপুর গ্রামের ইয়াছিন মিয়া, জাফলং জমিদার বাড়ির শফিউল আলম সেলিম, পশ্চিম লাখের পাড়ের মজির উদ্দিন ও সাইদুর রহমান, মামার বাজারের আমজাদ বক্স, নলজুরির আবুল কাশেম, মো. হাসেম, মো. জামাল, মুন্না মিয়া প্রমুখ।
এ ব্যাপারে মামলার বাদী পরিবেশ অধিদপ্তর, সিলেট জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. বদরুল হুদা খবরের কাগজকে বলেন, ‘আসামিরা জাফলং এলাকার পাথর ব্যবসায়ী, স্টোন ক্রাশিং প্ল্যান্টের মালিক, ট্রাক শ্রমিক সংগঠনের নেতা, স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী , জমির মালিক ও দখলদার। আসামিদের অধিকাংশের বিরুদ্ধে আগেও পরিবেশ অধিদপ্তর একাধিক মামলা করেছে। এরপরও তারা বেআইনি কর্মকাণ্ড অব্যাহত রেখেছেন। ফলস্বরূপ, সংকটাপন্ন জাফলং এলাকা আরও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।’