মৌলভীবাজারের বড়লেখায় জাকিয়া জাহান (২০) নামে এক গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ। তবে নিহতের পরিবার দাবি করছে স্বামীর বাড়িতে হত্যা করে লাশ ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। শুক্রবার (২১ জানুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৪ টায় উপজেলার উত্তর শাহবাজপুর ইউনিয়নের বাদেপুকুরিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত জাকিয়া জাহান বিয়ানীবাজার উপজেলার পাহাড়িয়াবহর গ্রামের সাহিদ আহমেদ সাইদ এর মেয়ে। প্রায় ৮ মাস আগে বড়লেখা উপজেলার উত্তর শাহবাজপুর ইউনিয়নের বাদেপুকুরিয়া গ্রামের আইয়ুব আলীর ছেলে কাতার প্রবাসী মো. আবুল হাসানের সঙ্গে তার বিয়ে হয়।
নিহত জাকিয়া জাহানের বাবা সাহিদ আহমদ জানান, তার মেয়েকে হত্যা করে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। মেয়ের স্বামীর বাড়ির প্রতিবেশীর মাধ্যমে তার মেয়ের রহস্যময় মৃত্যুর খবর পান। পরে পুলিশকে খবর দিলে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।
শ্বশুর বাড়ির লোকজনের দাবি, জাকিয়া আত্মহত্যা করেছেন। তবে কী কারণে তিনি আত্মহত্যা করেছেন তা কেউই বলতে পারছেন না। পুলিশও প্রাথমিকভাবে এটিকে আত্মহত্যা বলে ধারণা করছে।
থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার (২১ মার্চ) সন্ধ্যার দিকে গৃহবধূ জাকিয়ার কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে শ্বশুর বাড়ির লোকজন ঘরের দরজা ভেঙে তাকে গলায় শাড়ি দিয়ে ফাস লাগানো অবস্থায় ঘরের ভীমের সাথে ঝুলে থাকতে দেখেন। পরে বিষয়টা পুলিশকে জানানো হয়। খবর পেয়ে পুলিশ রাত ১০টার দিকে ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করে। শনিবার ময়নাতদন্ত শেষে লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
স্থানীয়রা জানান, আত্মহত্যা না অন্যকিছু প্রাথমিকভাবে বলা যাচ্ছে না তবে যদি আত্মহত্যা হয় তাহলে কোনো কারণ ছাড়াই একজন মানুষ কখনো আত্মহত্যা করতে পারেনা। হয়তো তিনি কারও ওপর অভিমান করেছেন কিংবা ঝগড়া করে আত্মহত্যা করতে পারেন। পুলিশ বিষয়টা তদন্ত করলে সত্য বেরিয়ে আসবে।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান রফিক উদ্দিন বলেন, সাবেক ইউপি সদস্যর মাধ্যমে বাদেপুকুরিয়া গ্রামের জাকিয়া জাহান নামে এক গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যুর খবর পেয়েছি। ঘটনাস্থলে গিয়ে বিষয়টি থানা পুলিশকে জানিয়েছি। তবে তাদের পারিবারিক কলহ আছে কি না আমার জানা নেই।
বড়লেখা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবুল কাশেম সরকার বলেন, পারিবারিক কলহের জের ধরে এ ঘটনা ঘটতে পারে। তবে এটা হত্যা না আত্মহত্যা তা ময়নাতদন্তের পর জানা যাবে। মৃত্যুর রহস্য উদঘাটনে পুলিশ কাজ করছে।
বড়লেখা থানার এসআই মো. আব্দুর রাজ্জাক শনিবার বিকেলে বলেন, গলায় ফাস লাগানো অবস্থায় এক গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। মৃত্যুর কোনো কারণ জানা যায়নি। মৃত্যুর আগে ওই গৃহবধূ স্বামীর সাথে ফোনে কথা বলেছেন। লাশে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। লাশের ময়নাতদন্ত হয়েছে। প্রতিবেদন পাওয়া গেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।