, বৃহস্পতিবার, ০৭ আগস্ট ২০২৫, ২৩ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
সিলেটে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলা, আহত ১৪ বিশ্বনাথে নাগরিক সমাবেশ শুক্রবার, প্রধান অতিথি হুমায়ুন কবির নিয়োগে অনিয়ম সিকৃবির কর্মচারী অর্পনা কুমারী চাকরিচ্যুত সিলেটে অন্তঃস্বত্ত্বা প্রেমিকা, প্রেমিককে ধরতে পুলিশের শরণাপন্ন জুলাই গণভ্যূত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে দক্ষিণ সুরমা উপজেলা জামায়াতের গণমিছিল সিলেটে চোর সন্দেহে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে বিক্ষোভ, আটক ৩ হাজার হাজার নেতাকর্মীদের উপস্থিতিতে বিশ্বনাথে বিএনপির বিজয় মিছিল ৩৬ জুলাইয়ে সিলেটে শহীদদের স্মরণে ৩৬টি বৃক্ষরোপণ ভারী বৃষ্টিতে বাড়ছে নদীর পানি, সিলেট-সুনামগঞ্জে বন্যার শঙ্কা বিমানবন্দরে সংবর্ধিত ফ্যাসিবাদবিরোধী সাংবাদিক এমদাদ চৌধুরী দীপু
বিজ্ঞাপন :
সকল জেলায় সাংবাদিক নিয়োগ চলছে

সুনামগঞ্জে সমন্বয়ককে কোপানোর ঘটনায় ৯ জনের নামে মামলা

সুনামগঞ্জে পশুর হাটের ইজারা নিয়ে দ্বন্দ্বে ছাত্রদল নেতাদের হাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আবু সালেহ নাসিমকে কোপানোর ঘটনায় ছাত্রদলের নেতাসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

মঙ্গলবার দোয়ারাবাজার থানায় এই মামলাটি দায়ের করেছেন নাসিমের বন্ধু জনৈক আমিরুল ইসলাম। তিনি উপজেলার আলীপুর গ্রামের রুহুল আমিন দুলুর ছেলে।

মামলা দায়ের পর মঙ্গলবার সাদ্দাম হোসেন সুজন নামের এজাহারভুক্ত আসামি এক যুবদল নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

মামলার আসামিরা হলেন- ছাত্রদল নেতা জহিরুল হক সানি, নাজমুল হোসেন, যুবদল নেতা হানিফ মিয়া, শহিদ মিয়া, জামাল মিয়া, বুলু মিয়া, মোফাজ্জল হোসেন, রাকিব মিয়া ও সাদ্দাম হোসেন সুজন।

রবিবার রাত ৯ টায় স্থানীয় বোগলাবাজারে পশুর হাটের নিয়ে দ্বন্দ্বে ছাত্রদল নেতারা সমন্বয়ক আবু সালেহ নাসিম ও সংগঠনের জেলা কমিটির প্রথম যুগ্ম আহবায়ক ফয়সল মিয়া ওরফে ফয়সল জামানকে কোপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করেন। আহত ফয়সল বোগলাবাজার হাটের ইজারাদার। নাসিম ও ফয়সলের বাড়ি ওই এলাকায় এবং তারা সম্পর্কে মামা ভাগ্না।

দোয়ারাবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নাজমুল হক বলেন, বোগলাবাজারে হামলার ঘটনায় ৯ জনকে আসামি করে মামলা করেছেন ভিকটিমদের এক বন্ধু। পুলিশ এজাহারভুক্ত এক আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে। বাকিদের ধরতে অভিযান চলছে।

উল্লেখ্য, ভারতীয় চোরাই গরু নামার রুট হিসেবে পরিচিত পাওয়ার পর দোয়ারাবাজার উপজেলার সীমান্তবর্তী বোগলাবাজারের ইজারামূল্য কয়েকগুন বেড়ে যায়। স্থানীয় রাজনৈতিক প্রভাবশালীদের কাছে অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক খাতে পরিণত হয় এটি। পট পরিবর্তনের পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্রআন্দোলনের জেলা কমিটির প্রথম যুগ্ম আহবায়ক মো. ফয়সল মিয়া ওরফে ফয়সল জামান নিজ মালিকানাধীন ফয়সল এগ্রো ফার্মের নামে সাড়ে ৩ কোটি টাকা দিয়ে বাজারটি ইজারা নেন। পরে স্থানীয় প্রভাবশালীদের কাছে কিছু শেয়ার বিক্রি করে দেন তিনি৷ এদের মধ্যে বিগত আমলের চিহ্নিত সুবিধাভোগী ও চোরকারবারি হিসেবে পরিচিত রফিক খানও রয়েছেন৷ বাজারটি ইজারা পাইয়ে তাকে সহযোগিতা করেন তার মামা সমন্বয়ক আবু সালেহ নাসিম।

এদিকে, বাজারটি ইজারা নিতে চেয়েছিলেন স্থানীয় ছাত্রদলের কয়েকজন নেতা। ফয়সল বাজারের ইজারা পাওয়ার পর ইজারা-বঞ্চিত ছাত্রদলের ওইসব নেতারা নাসিম-ফয়সলের ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। এদের মধ্যে রয়েছেন উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য জহিরুল ইসলাম সানি, ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি নাজমুল হোসেন, ছাত্রদল নেতা মুহিত হাসান, হানিফ, বুলু প্রমুখ৷ এ নিয়ে নাসিম-ফয়সলের সঙ্গে বিরোধের জড়ান তারা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বাকবিতণ্ডা হয়।

এর জের ধরে রবিবার রাত ৯ টার দিকে নাসিম ও ফয়সল মোটরসাইকেলে করে সিলেট থেকে বোগলাবাজারে এসে বাজারের গলিতে দাঁড়িয়ে পরিচিতদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করছিলেন। এ সময় সানি-নাজমুলের নেতৃত্বে চার-পাঁচটি মোটরসাইকেলে করে এসে প্রায় ১০ জন যুবক নাসিম ও ফয়সালকে এলোপাতাড়ি ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপাতে ও লাঠি-হকিস্টিক দিয়ে পেটাতে থাকেন। এতে দুজনই গুরুতর আহত হন। পরে স্থানীয়দের বাধার মুখে পিছু হটেন হামলাকারীরা। আহত দুজনকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠান।

এদিকে, কুপের আঘাতে কেটে যাওয়ার সমন্বয়ক নাসিমের মাথায় ৫টি ও ফয়সলের মাথায় দুটি সেলাই করতে হয়েছে। তাদের দুজনের হাত ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা করেছেন চিকিৎসকরা।

জনপ্রিয়

সিলেটে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলা, আহত ১৪

সুনামগঞ্জে সমন্বয়ককে কোপানোর ঘটনায় ৯ জনের নামে মামলা

প্রকাশের সময় : ০১:০৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩ এপ্রিল ২০২৫

সুনামগঞ্জে পশুর হাটের ইজারা নিয়ে দ্বন্দ্বে ছাত্রদল নেতাদের হাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আবু সালেহ নাসিমকে কোপানোর ঘটনায় ছাত্রদলের নেতাসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

মঙ্গলবার দোয়ারাবাজার থানায় এই মামলাটি দায়ের করেছেন নাসিমের বন্ধু জনৈক আমিরুল ইসলাম। তিনি উপজেলার আলীপুর গ্রামের রুহুল আমিন দুলুর ছেলে।

মামলা দায়ের পর মঙ্গলবার সাদ্দাম হোসেন সুজন নামের এজাহারভুক্ত আসামি এক যুবদল নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

মামলার আসামিরা হলেন- ছাত্রদল নেতা জহিরুল হক সানি, নাজমুল হোসেন, যুবদল নেতা হানিফ মিয়া, শহিদ মিয়া, জামাল মিয়া, বুলু মিয়া, মোফাজ্জল হোসেন, রাকিব মিয়া ও সাদ্দাম হোসেন সুজন।

রবিবার রাত ৯ টায় স্থানীয় বোগলাবাজারে পশুর হাটের নিয়ে দ্বন্দ্বে ছাত্রদল নেতারা সমন্বয়ক আবু সালেহ নাসিম ও সংগঠনের জেলা কমিটির প্রথম যুগ্ম আহবায়ক ফয়সল মিয়া ওরফে ফয়সল জামানকে কোপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করেন। আহত ফয়সল বোগলাবাজার হাটের ইজারাদার। নাসিম ও ফয়সলের বাড়ি ওই এলাকায় এবং তারা সম্পর্কে মামা ভাগ্না।

দোয়ারাবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নাজমুল হক বলেন, বোগলাবাজারে হামলার ঘটনায় ৯ জনকে আসামি করে মামলা করেছেন ভিকটিমদের এক বন্ধু। পুলিশ এজাহারভুক্ত এক আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে। বাকিদের ধরতে অভিযান চলছে।

উল্লেখ্য, ভারতীয় চোরাই গরু নামার রুট হিসেবে পরিচিত পাওয়ার পর দোয়ারাবাজার উপজেলার সীমান্তবর্তী বোগলাবাজারের ইজারামূল্য কয়েকগুন বেড়ে যায়। স্থানীয় রাজনৈতিক প্রভাবশালীদের কাছে অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক খাতে পরিণত হয় এটি। পট পরিবর্তনের পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্রআন্দোলনের জেলা কমিটির প্রথম যুগ্ম আহবায়ক মো. ফয়সল মিয়া ওরফে ফয়সল জামান নিজ মালিকানাধীন ফয়সল এগ্রো ফার্মের নামে সাড়ে ৩ কোটি টাকা দিয়ে বাজারটি ইজারা নেন। পরে স্থানীয় প্রভাবশালীদের কাছে কিছু শেয়ার বিক্রি করে দেন তিনি৷ এদের মধ্যে বিগত আমলের চিহ্নিত সুবিধাভোগী ও চোরকারবারি হিসেবে পরিচিত রফিক খানও রয়েছেন৷ বাজারটি ইজারা পাইয়ে তাকে সহযোগিতা করেন তার মামা সমন্বয়ক আবু সালেহ নাসিম।

এদিকে, বাজারটি ইজারা নিতে চেয়েছিলেন স্থানীয় ছাত্রদলের কয়েকজন নেতা। ফয়সল বাজারের ইজারা পাওয়ার পর ইজারা-বঞ্চিত ছাত্রদলের ওইসব নেতারা নাসিম-ফয়সলের ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। এদের মধ্যে রয়েছেন উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য জহিরুল ইসলাম সানি, ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি নাজমুল হোসেন, ছাত্রদল নেতা মুহিত হাসান, হানিফ, বুলু প্রমুখ৷ এ নিয়ে নাসিম-ফয়সলের সঙ্গে বিরোধের জড়ান তারা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বাকবিতণ্ডা হয়।

এর জের ধরে রবিবার রাত ৯ টার দিকে নাসিম ও ফয়সল মোটরসাইকেলে করে সিলেট থেকে বোগলাবাজারে এসে বাজারের গলিতে দাঁড়িয়ে পরিচিতদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করছিলেন। এ সময় সানি-নাজমুলের নেতৃত্বে চার-পাঁচটি মোটরসাইকেলে করে এসে প্রায় ১০ জন যুবক নাসিম ও ফয়সালকে এলোপাতাড়ি ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপাতে ও লাঠি-হকিস্টিক দিয়ে পেটাতে থাকেন। এতে দুজনই গুরুতর আহত হন। পরে স্থানীয়দের বাধার মুখে পিছু হটেন হামলাকারীরা। আহত দুজনকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠান।

এদিকে, কুপের আঘাতে কেটে যাওয়ার সমন্বয়ক নাসিমের মাথায় ৫টি ও ফয়সলের মাথায় দুটি সেলাই করতে হয়েছে। তাদের দুজনের হাত ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা করেছেন চিকিৎসকরা।