সিলেট-২ আসনে জমিয়তের মনোনয়ন প্রত্যাশী প্রার্থীর পক্ষে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলা শাখার উদ্যোগে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। বৃহস্পতিবার বিকেলে পৌর শহরের জমিয়তের দলীয় কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন উপজেলা জমিয়তের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাওলানা ফখরুল ইসলাম।
তিনি লিখিত বক্তব্য বলেন, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম আমাদের পূর্বসূরী আকাবিরদের হাত ধরে ১৯১৯ সালে বৃটিশ বিরোধী আন্দোলনের প্লাটফর্ম হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করে। দীর্ঘ লড়াই-সংগ্রামের পর ভারতীয় উপমহাদেশে স্বাধীনতার সূর্যোদয়ে সংগঠন হিসেবে জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের অবদান ছিলো সবার শীর্ষে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় জমিয়ত সদা জাগ্রত ও তৎপর। ইসলাম বিরোধী সকল অপতৎপরতা মোকাবেলায় শক্তির সবটুকু দিয়ে লড়াই চালিয়ে যাওয়া সংগঠন জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম।
তিনি আরও বলেন, বিগত আওয়ামী শাসনামলে দেশের সার্বভৌমত্ত¡ব ও ইসলামী মূল্যবোধ রক্ষার আন্দোলনে জমিয়তের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় অসংখ্য নেতা-কর্মী জেল-জুলুমের শিকার হয়েছেন। জুলাই ও আগষ্টে হওয়া গণঅভ্যুত্থানে জমিয়ত অনন্য অবদান রেখেছে। জমিয়ত একটি নির্বাচনমুখি রাজনৈতিক দল। বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের ২৩নং নিবন্ধিত দল জমিয়তের প্রতিক খেজুর গাছ। জমিয়তের নেতা-কর্মীরা ইউপি সদস্য থেকে সংসদ সদস্য পর্যন্ত সকল স্থরে জনপ্রতিনিধি। নির্বাচিত হয়ে সততার সাথে দায়িত্ব পালন করছেন।
লিখিত বক্তব্য তিনি আরও বলেন, সিলেট-২ আসনে জমিয়তের নির্বাচনী ঐতিহ্য রয়েছে। ১৯৭০ এর নির্বাচনে এ আসন থেকে জমিয়ত মনোনীত প্রার্থী হিসেবে আল্লামা নূর উদ্দীন গওহরপুরী রাহ. মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক কর্ণেল এম. এ. জি ওমনানীর কাছে অল্প ভোটে হেরে নিকটতম প্রতিদ্বন্দী হন। এরপর ১৯৯১ সালে খেজুর গাছ প্রতিকে নির্বাচন করেন মাওলানা আবদুল মতিন ধনপুরী রাহ. ও ১৯৯৬ সালে খেজুর গাছ প্রতিকে নির্বাচন করে আলোড়ন সৃষ্টি করেন শায়খুল হাদীস আল্লামা আবদুশ শহীদ গলমুকাপনী রাহ.। ২০১৮ সালের নির্বাচনে সিলেট-২ আসনে বিশ্বনাথ-ওসমানীনগর জমিয়তের যৌথ প্রস্তাবনায় কেন্দ্রীয় জমিয়ত আলহাজ্ব হাফিজ হোসাইন আহমদকে সংসদ সদস্য পদে চুড়ান্ত প্রার্থী হিসেবে মনোনীত করে। পরবর্তিতে ঐকফ্রেন্ট জোটের সিদ্ধান্ত মেনে তিনি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান। আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমরা (বিশ্বনাথ উপজেলা জমিয়ত) আলহাজ্ব হাফিজ হোসাইন আহমদকে সিলেট-২ আসনে জমিয়ত মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রাথী হিসেবে মনোনিত করেছি। আলহাজ্ব হাফিজ হোসাইন আহমদ পিতা দেশের বরেণ্য আলেম ও কিংবদন্তি রাজনীতিবিদ ছিলেন। এ দেশে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম প্রতিষ্ঠা ও বিস্তৃতিতে আল্লামা শায়খ আশরাফ আলী বিশ্বনাথী রাহ.’র অনন্য অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ তাঁকে বাবায়ে জমিয়ত তথা জমিয়ত জনক বলা হয়। তিনি জমিয়তের কেন্দ্রীয় সভাপতি ছিলেন। প্রতিষ্ঠা করেছেন বিশ্বনাথবাসির গৌরব জামিয়া মাদানিয়া বিশ্বনাথ ও জামিয়া মাদানিয়া ক্বাওমিয়া মহিলা মাদ্রাসা। তিনি ছিলেন মাসিক আল-ফারুকের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক। ইসলামের বহুমুখি খিদমাতের কারণে দেশের মানুষের হৃদয়ে তিনি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার স্থানে আসীন হয়েছেন। হাফিজ হোসাইন আহমদ আজন্ম জমিয়তী। কৈশর থেকেই তিনি জমিয়তের সক্রীয় কর্মী। ইউরোপ ও ইউকে জমিয়তের সূচনাকাল থেকেই গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব তিনি পালন করে আসছেন। ছিলেন লন্ডন মহানগর জমিয়তের সভাপতি। বর্তমানে জমিয়তের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্যের পাশাপাশি ইউকে জমিয়তের সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। সংগঠনের সক্রীয় নেতা হাফিজ হোসাইন আহমদ দেশে জমিয়তের কার্যক্রম পরিচালনায় সদা তাঁর সহযোগীতার হাত প্রসারিত রেখেছেন। হাফিজ হোসাইন আহমদ একজন কর্মবীর, সমাজসেবক, শিক্ষানুরাগী ও দানবীর ব্যক্তিত্ব। তাঁর কর্ম দক্ষতার বহু নজির দেশবাসীর সামনে রয়েছে। ইসলামী শিক্ষার প্রসারে তিনি বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা, পরিচালনা ও পৃষ্ঠপোষকতা করে যাচ্ছেন। কোমল হৃদয় ও প্রসস্থ হাতের অধিকারী হাফিজ হোসাইন আহমদ বিশ্বনাথী সহায়তামূলক কাজের পাশাপাশি একজন মিডিয়া ব্যক্তিত্ব। অসাধারণ সম্মোহনী শক্তি ও সর্বমহলে গ্রহণযোগ্যতা ও সার্বিক দিক বিবেচনায় সিলেট-২ আসনে আমরা জননেতা হাফিজ হোসাইন আহমদকে জমিয়ত মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী হিসেবে দেখতে চাই।
সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠানে উপজেলা জমিয়তের সহ-সভাপতি মাওলানা কামরুল ইসলাম ছমীরের সভাপতিত্বে ও সিলেট জেলা দক্ষিণের জমিয়তের ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক হাসান বিন ফাহিম পরিচালনায় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন-কেন্দ্রীয় জমিয়তের সহ-প্রকাশনা সম্পাদক ও উপজেলা জমিয়তের সাধারণ সম্পাদক প্রিন্সিপাল মাওলানা শিব্বীর আহমদ, উপজেলা জমিয়তের সহ-সভাপতি মাওলানা রশিদ আহমদ, মাওলানা নূরুল ইসলাম, বিশ্বনাথ পৌর জমিয়তের আহ্বায়ক মাওলানা আবদুস সোবহান, উপজেলা জমিয়ত নেতা মুফতি শাহনূর আহমদ, মাওলানা আবদুল হক, মাওলানা শাহ মুসলেহ উদ্দিনন, কবির আহমদ, আবদুস সালাম, উপজেলা যুব জমিয়তের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা জকির চৌধুরী, উপজেলা ছাত্র জমিয়তের সভাপতি মিজানুর রহমান প্রমুখ।