, সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫, ২৮ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
রাষ্ট্র ও জনগণের যে কোন প্রয়োজনে পুলিশ পাশে থাকবে :  এসএমপি কমিশনার সিলেট-ঢাকা ৬ লাইন মহাসড়ক কাজের দ্রুত অগ্রগতির ব্যাপারে প্রশাসন অত্যন্ত আন্তরিক : ইউএনও ঊর্মি রায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে বাস খাদে পড়ে আহত ৩০ ইলিয়াস আলীকে কারা গুম করেছিল, ‘বের করা হয়েছে’ : ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউটরের ঘোষণা সিলেটে ঘর থেকে তুলে নিয়ে প্রাণে মারার হুমকি দিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, গ্রেপ্তার ১ আজ রোববার সিলেটে একঘন্টার জন্য বন্ধ থাকবে দোকানপাট, চলবে না যানবাহন উইমেন ফর উইমেন রাইটস’র মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত বিএনপি ক্ষমতায় গেলে কর্মহীন মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে : এডভোকেট জেবুন নাহার সেলিম সিলেটে সরকার নির্ধারিত মূল্যে ঔষধ বিক্রির দাবিতে সভা অনুষ্ঠিত আট দফা দাবিতে ১ নভেম্বর থেকে সিলেটে অনির্দিষ্টকালের জন্য রেল অবরোধ

সিলেটে সেতুর কাজ অসম্পূর্ণ রেখে ঠিকাদার উধাও

সিলেটের ওসমানীনগরের দৌলতপুর এলাকায় নদীর ওপর নির্মাণাধীন সেতুর কাজ রয়ে গেছে অসম্পূর্ণ রেখেই লাপাত্তা হয়ে পড়েছেন প্রকল্পের ঠিকাদার। এতে দুর্ভোগ বেড়েছে স্থানীয়দের।

উপজেলার পশ্চিম পৈলনপুর ইউনিয়নে বুড়ি নদীর ওপর এই সেতুটি নির্মাণ করা হচ্ছে। গত ৩০ জুন কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিলো। ইউনিয়নের দৌলতপুর গ্রামবাসীর বহুদিনের প্রত্যাশা ছিল ওই নদীর ওপর একটি সেতুর। গ্রামবাসীর এই প্রত্যাশিত প্রকল্পটি অসমাপ্ত রেখে উধাও হয়ে যান ঠিকাদার।

এদিকে মেয়াদ শেষে প্রকল্পের কাজ কত দূর হলো এবং সেটি বুঝে নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরও ঠিকাদারের কোনো খোঁজ পাচ্ছে না। ঠিকাদারের একাধিক মোবাইল নাম্বারের সবক’টি চালু থাকলেও কোনোটিই রিসিভ করছেন না তিনি। এমন অবস্থায় সেতুর কাজ কবে নাগাদ সম্পন্ন হবে সে নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।

জানা যায়, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন দপ্তরের অধীনে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বুড়ি নদীর ওপর সেতু নির্মাণ প্রকল্পটি অনুমোদিত হয়। ১ কোটি ১০ লাখ টাকায় প্রকল্পটি বাস্তবায়নের দায়িত্ব পায় আয়ান এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। গত বছর সেতুর পাইলিংয়ের কাজ করা হয়। চলতি বছর সেতুর মূল অংশ নির্মাণের লক্ষ্যে এর দুই পাশে কাঠামো তৈরির পর কাজ বন্ধ করে মালপত্র নিয়ে চলে যান ঠিকাদার। এর আগে কাজ শুরু করার পর মোট বরাদ্দের ৪০ শতাংশ টাকা তুলে নিয়েছেন ঠিকাদার। এর পর থেকে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী রাজিবের সঙ্গে কেউ যোগাযোগ করতে পারছেন না। এমনকি প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাও তাঁর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ। পরে বাধ্য হয়ে তারা বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করেছেন। এদিকে স্থানীয়দের অভিযোগ, একে তো কাজ শেষ হয়নি, তার মধ্যে ঠিকাদার যতটুকু কাজ করেছেন তাও নিম্নমানের।

বুড়ি নদীর ওপর প্রকল্পের সাইটে গিয়ে দেখা যায়, এখন পর্যন্ত ব্রিজটি দুই পাশের ধারক (অ্যাবাটামেন্ট) ছাড়া আর কোনো কাজ হয়নি।

দৌলতপুর গ্রামের বাসিন্দা মতিলাল দত্ত বলেন, সেতুটি তাদের দীর্ঘদিনের দাবির ফসল। ঠিকাদার কাজ পাওয়ার পর গত বছর সেতুর নকশা ও প্রকল্প সম্পৃক্ত নথিপত্রের কাজ সম্পন্ন করেন। চলতি বছর গার্ডার ওয়ালসহ দুই পাশের প্রাথমিক কাঠামো তৈরির পর মালপত্র নিয়ে চলে যায় প্রতিষ্ঠানটি। এরপর থেকে ঠিকাদারের আর কোনো খোঁজ নেই।

স্থানীয়রা জানান, দুই পাশে দেয়াল থাকায় বাঁশের সাঁকোও দেওয়া যাচ্ছে না। এতে করে নদী পারাপারে অস্থায়ী ব্যবস্থা করারও উপায় নেই। তার মধ্যে যে কাজ করা হয়েছে তা আবার নিম্নমানের। এ সময় কাজটি দ্রুত নিষ্পন্ন করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানান তারা।

পশ্চিম পৈলনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম রব্বানী চৌধুরী সুমন বলেন, দৌলতপুরে বুড়ি নদীতে সেতু নির্মাণের কাজ ত্বরান্বিত করতে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে অনেকবার কথা বলেছেন। সেতুটির কাজ সম্পন্ন না হওয়ায় এলাকার মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে। সেই সঙ্গে চোখের সামনে এত দিনের দাবির বাস্তবায়ন এভাবে থমকে যেতে দেখে হতাশ তারা।

এ ব্যাপারে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী রাজিবের মোবাইল ফোন নাম্বারে একাধিকবার কল করে ও সাড়া পাওয়া যায়নি।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আতাউর রহমান বলেন, ঠিকাদারকে কোনোভাবেই পাওয়া যাচ্ছে না। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করেছেন। আশা করা যাচ্ছে ব্রিজের কাজ সম্পন্ন করতে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

জনপ্রিয়

রাষ্ট্র ও জনগণের যে কোন প্রয়োজনে পুলিশ পাশে থাকবে :  এসএমপি কমিশনার

সিলেটে সেতুর কাজ অসম্পূর্ণ রেখে ঠিকাদার উধাও

প্রকাশের সময় : ০৩:২৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫

সিলেটের ওসমানীনগরের দৌলতপুর এলাকায় নদীর ওপর নির্মাণাধীন সেতুর কাজ রয়ে গেছে অসম্পূর্ণ রেখেই লাপাত্তা হয়ে পড়েছেন প্রকল্পের ঠিকাদার। এতে দুর্ভোগ বেড়েছে স্থানীয়দের।

উপজেলার পশ্চিম পৈলনপুর ইউনিয়নে বুড়ি নদীর ওপর এই সেতুটি নির্মাণ করা হচ্ছে। গত ৩০ জুন কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিলো। ইউনিয়নের দৌলতপুর গ্রামবাসীর বহুদিনের প্রত্যাশা ছিল ওই নদীর ওপর একটি সেতুর। গ্রামবাসীর এই প্রত্যাশিত প্রকল্পটি অসমাপ্ত রেখে উধাও হয়ে যান ঠিকাদার।

এদিকে মেয়াদ শেষে প্রকল্পের কাজ কত দূর হলো এবং সেটি বুঝে নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরও ঠিকাদারের কোনো খোঁজ পাচ্ছে না। ঠিকাদারের একাধিক মোবাইল নাম্বারের সবক’টি চালু থাকলেও কোনোটিই রিসিভ করছেন না তিনি। এমন অবস্থায় সেতুর কাজ কবে নাগাদ সম্পন্ন হবে সে নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।

জানা যায়, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন দপ্তরের অধীনে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বুড়ি নদীর ওপর সেতু নির্মাণ প্রকল্পটি অনুমোদিত হয়। ১ কোটি ১০ লাখ টাকায় প্রকল্পটি বাস্তবায়নের দায়িত্ব পায় আয়ান এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। গত বছর সেতুর পাইলিংয়ের কাজ করা হয়। চলতি বছর সেতুর মূল অংশ নির্মাণের লক্ষ্যে এর দুই পাশে কাঠামো তৈরির পর কাজ বন্ধ করে মালপত্র নিয়ে চলে যান ঠিকাদার। এর আগে কাজ শুরু করার পর মোট বরাদ্দের ৪০ শতাংশ টাকা তুলে নিয়েছেন ঠিকাদার। এর পর থেকে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী রাজিবের সঙ্গে কেউ যোগাযোগ করতে পারছেন না। এমনকি প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাও তাঁর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ। পরে বাধ্য হয়ে তারা বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করেছেন। এদিকে স্থানীয়দের অভিযোগ, একে তো কাজ শেষ হয়নি, তার মধ্যে ঠিকাদার যতটুকু কাজ করেছেন তাও নিম্নমানের।

বুড়ি নদীর ওপর প্রকল্পের সাইটে গিয়ে দেখা যায়, এখন পর্যন্ত ব্রিজটি দুই পাশের ধারক (অ্যাবাটামেন্ট) ছাড়া আর কোনো কাজ হয়নি।

দৌলতপুর গ্রামের বাসিন্দা মতিলাল দত্ত বলেন, সেতুটি তাদের দীর্ঘদিনের দাবির ফসল। ঠিকাদার কাজ পাওয়ার পর গত বছর সেতুর নকশা ও প্রকল্প সম্পৃক্ত নথিপত্রের কাজ সম্পন্ন করেন। চলতি বছর গার্ডার ওয়ালসহ দুই পাশের প্রাথমিক কাঠামো তৈরির পর মালপত্র নিয়ে চলে যায় প্রতিষ্ঠানটি। এরপর থেকে ঠিকাদারের আর কোনো খোঁজ নেই।

স্থানীয়রা জানান, দুই পাশে দেয়াল থাকায় বাঁশের সাঁকোও দেওয়া যাচ্ছে না। এতে করে নদী পারাপারে অস্থায়ী ব্যবস্থা করারও উপায় নেই। তার মধ্যে যে কাজ করা হয়েছে তা আবার নিম্নমানের। এ সময় কাজটি দ্রুত নিষ্পন্ন করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানান তারা।

পশ্চিম পৈলনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম রব্বানী চৌধুরী সুমন বলেন, দৌলতপুরে বুড়ি নদীতে সেতু নির্মাণের কাজ ত্বরান্বিত করতে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে অনেকবার কথা বলেছেন। সেতুটির কাজ সম্পন্ন না হওয়ায় এলাকার মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে। সেই সঙ্গে চোখের সামনে এত দিনের দাবির বাস্তবায়ন এভাবে থমকে যেতে দেখে হতাশ তারা।

এ ব্যাপারে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী রাজিবের মোবাইল ফোন নাম্বারে একাধিকবার কল করে ও সাড়া পাওয়া যায়নি।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আতাউর রহমান বলেন, ঠিকাদারকে কোনোভাবেই পাওয়া যাচ্ছে না। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করেছেন। আশা করা যাচ্ছে ব্রিজের কাজ সম্পন্ন করতে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।