, সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫, ২৮ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
ইলিয়াস আলীকে কারা গুম করেছিল, ‘বের করা হয়েছে’ : ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউটরের ঘোষণা সিলেটে ঘর থেকে তুলে নিয়ে প্রাণে মারার হুমকি দিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, গ্রেপ্তার ১ আজ রোববার সিলেটে একঘন্টার জন্য বন্ধ থাকবে দোকানপাট, চলবে না যানবাহন উইমেন ফর উইমেন রাইটস’র মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত বিএনপি ক্ষমতায় গেলে কর্মহীন মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে : এডভোকেট জেবুন নাহার সেলিম সিলেটে সরকার নির্ধারিত মূল্যে ঔষধ বিক্রির দাবিতে সভা অনুষ্ঠিত আট দফা দাবিতে ১ নভেম্বর থেকে সিলেটে অনির্দিষ্টকালের জন্য রেল অবরোধ সিলেটে অধ্যাপক ফজলুর রহমানের ‘ধর্মনিরপেক্ষ মুসলমান’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন সিলেটে পুলিশের দক্ষতা ও সক্ষমতা বৃদ্ধি সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ কোর্সের উদ্বোধন বিশেষ কল্যাণ সভায় হাইওয়ে পুলিশের সেবার মানোন্নয়ন প্রত্যয়ে অঙ্গীকার
১০ দিন ধরে বন্ধ কুমারগাঁও পাওয়ার স্টেশন

সিলেটে বিদ্যুৎবিহীন ৬ থেকে ৭ ঘণ্টায় ভোগান্তিতে নগরবাসী

তীব্র তাপদাহের সময়ে সিলেটে বিদ্যুৎ বিভ্রাট চরম আকার ধারণ করেছে। দিনে গড়ে প্রায় ৬ থেকে ৭ ঘণ্টা বিদ্যুৎবিহীন থাকতে হচ্ছে নগরবাসীদের। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন তারা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সিলেটের বিদ্যুৎ সরবরাহকারী কুমারগাঁও ১৩২/৩৩ কেভি গ্রিড উপকেন্দ্রের ২২৫ মেগাওয়াট পাওয়ার স্টেশন প্রায় ১০ দিন ধরে বন্ধ। তাই সিলেটে এখন শুধু গ্রিড থেকে পাওয়ার আনা হচ্ছে। সিলেট বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডে নিজস্ব জেনারেশন সিলেটে আর নেই। তার উপর চাহিদার তুলনায় কম বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে ন্যাশনাল লোড ডেসপ্যাচ সেন্টার (এনএলডিসি)। তাই সিলেটে বিদ্যুৎ বিভ্রাট চরম আকার ধারণ করেছে।

দ্রুত কুমারগাওয়ের ২২৫ মেগাওয়াট পাওয়ার স্টেশন চালু না করলে দীর্ঘস্থায়ী বিদ্যুৎ বিভ্রাটে পড়বে সিলেট নগরীর বাসিন্দারা।

এদিকে পাওয়ার স্টেশন বন্ধের কারণ ও চালু হওয়ার ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য জানেন না সিলেট বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিউবো) ও কুমারগাঁও গ্রিড উপকেন্দ্রের সংশ্লিষ্ট দায়িত্বরতরা।

একদিকে বিউবো কর্তৃপক্ষ বলছে, কুমারগাওয়ের ২৫ মেগাওয়াট পাওয়ার স্টেশন বন্ধ হয়েছে পাওয়ার স্টেশনের ট্রান্সফরমার পুড়ে যাওয়ার কারণে। অপরদিকে বন্ধ হওয়া পাওয়ার স্টেশনের প্রধান প্রকৌশলীও অবসরে চলে গেছেন।

তবে তার দায়িত্বে থাকা মিজানুর রহমান জানান, পাওয়ার স্টেশনের ট্রান্সফরমার পুড়ে যায়নি তবে সমস্যা হয়েছে। এটা ঠিক করতে কতদিন লাগবে তিনি জানেন না। এ ব্যাপারে সহকারী প্রধান প্রকৌশলী বিদ্যুৎ আচার্যের সঙ্গে কথা বলতে বলেন তিনি।

বিদ্যুৎ আচার্যের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, কুমারগাওয়ের ২৫ মেগাওয়াট পাওয়ার স্টেশন রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বন্ধ রাখা হয়েছে। পাওয়ার স্টেশনে ওইরকম কোনো সমস্যা নেই।

কবে এই পাওয়ার স্টেশন চালু হবে- এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এটাতো অন্য ডিপার্টমেন্টের, একটু জেনে জানাতে হবে। আজ (শুক্রবার) জানা যাবে না। কালকে জানা যাবে।’

বিউবো সূত্রে জানা যায়, সিলেট মহানগরীতে পাঁচটি ডিভিশনে ১৩টি সাবস্টেশন আছে। তাপমাত্রা বেশি থাকার কারণে বর্তমানে সমস্যা বেশি হচ্ছে। ফিউজ ছিঁড়ে যাওয়া, তার ছিঁড়ে পড়ে যাওয়া বৃদ্ধি পেয়েছে। তার উপর কুমারগাওয়ের ২৫ মেগাওয়াট পাওয়ার স্টেশন বন্ধ। এই পাওয়ার স্টেশনের ট্রান্সফরমার পুড়ে গেছে প্রায় ১০দিন। এর পর থেকেই সিলেটে লোডশেডিং বেড়ে গেছে এবং ভোল্টেজও কম হচ্ছে। পাশাপাশি চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে না সিলেটে।

বিউবো সিলেট বিতরণ বিভাগ-২-এর নির্বাহী প্রকৌশলী শামস-ই আরেফিন বলেন, ‘পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ না পাওয়ায় আমাদের কিছু এলাকায় লোডশেডিং করতে হয়। তার উপর আবার ঢাকা থেকে হঠাৎ বন্ধ করে দেওয়া হয় বিদ্যুৎ। পুরো সিস্টেমে ফিকুয়েন্সি ডাউন হয়ে গেলে ঢাকা থেকে বিদ্যুৎ বন্ধ করে দেয়। ইদানীং প্রায় প্রতিদিনই ঢাকা থেকে বিদ্যুৎ বন্ধ করে দেওয়া হয়। তাই মানুষজন বেশি ভোগান্তিতে পড়ছেন। অনেক গ্রাহক কল করে অকথ্য ভাষায় গালাগালও করেন। কিন্তু এই লোডশেডিংয়ে আমাদের কোনো হাত নেই। তারপরও গ্রাহকরা আমাদের উপরই ক্ষোভ ঝাড়েন।’

সিলেট বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলী আব্দুল কাদির বলেন, ‘সিলেটের বিদ্যুৎ সরবরাহ হয় কুমারগাও গ্রিড উপকেন্দ্র থেকে। এই কুমারগাওয়ের ২৫ মেগাওয়াট পাওয়ার স্টেশন বন্ধ। এই পাওয়ার স্টেশনের ট্রান্সফরমার পুড়ে গেছে প্রায় ১০দিন। এটা বন্ধ থাকার কারণে ভোল্টেজও কম হচ্ছে। এবং সিলেটের লোডশেডিংও বেড়ে গেছে। আমরা এখন গ্রিড থেকে পাওয়ার আনছি। আমাদের নিজস্ব জেনারেশন সিলেটে আর নেই। এটা চালু হলে সিলেটের লোডশেডিং কমবে। লো ভোল্টেজের সমস্যাও সমাধান হবে। ট্রান্সফরমার পুড়ে গেছে তাই বলা যাচ্ছে না কতদিনের ভেতর ঠিক হবে। কারণ এটার যন্ত্রপাতি বাইরে থেকে আনা হয়। তাছাড়া সিলেট চাহিদার তুলনায় কম বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে ন্যাশনাল লোড ডেসপ্যাচ সেন্টারের (এনএলডিসি)। বৃহস্পতিবারেও প্রায় ৩৩ শতাংশ লোডশেডিং ছিল সিলেটে। এই লোডশেডিং কমাতে হলে আমাদের পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ দিতে হবে এবং কুমারগাওয়ের ২৫ মেগাওয়াট পাওয়ার স্টেশন চাল করতে হবে। কিন্তু ওই পাওয়ার স্টেশন আমাদের আওতাধীন না। তাই সেটা কবে নাগাদ চালু হবে বলতে পারছি না।’

জনপ্রিয়

ইলিয়াস আলীকে কারা গুম করেছিল, ‘বের করা হয়েছে’ : ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউটরের ঘোষণা

১০ দিন ধরে বন্ধ কুমারগাঁও পাওয়ার স্টেশন

সিলেটে বিদ্যুৎবিহীন ৬ থেকে ৭ ঘণ্টায় ভোগান্তিতে নগরবাসী

প্রকাশের সময় : ১২:১৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৬ জুলাই ২০২৫

তীব্র তাপদাহের সময়ে সিলেটে বিদ্যুৎ বিভ্রাট চরম আকার ধারণ করেছে। দিনে গড়ে প্রায় ৬ থেকে ৭ ঘণ্টা বিদ্যুৎবিহীন থাকতে হচ্ছে নগরবাসীদের। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন তারা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সিলেটের বিদ্যুৎ সরবরাহকারী কুমারগাঁও ১৩২/৩৩ কেভি গ্রিড উপকেন্দ্রের ২২৫ মেগাওয়াট পাওয়ার স্টেশন প্রায় ১০ দিন ধরে বন্ধ। তাই সিলেটে এখন শুধু গ্রিড থেকে পাওয়ার আনা হচ্ছে। সিলেট বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডে নিজস্ব জেনারেশন সিলেটে আর নেই। তার উপর চাহিদার তুলনায় কম বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে ন্যাশনাল লোড ডেসপ্যাচ সেন্টার (এনএলডিসি)। তাই সিলেটে বিদ্যুৎ বিভ্রাট চরম আকার ধারণ করেছে।

দ্রুত কুমারগাওয়ের ২২৫ মেগাওয়াট পাওয়ার স্টেশন চালু না করলে দীর্ঘস্থায়ী বিদ্যুৎ বিভ্রাটে পড়বে সিলেট নগরীর বাসিন্দারা।

এদিকে পাওয়ার স্টেশন বন্ধের কারণ ও চালু হওয়ার ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য জানেন না সিলেট বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিউবো) ও কুমারগাঁও গ্রিড উপকেন্দ্রের সংশ্লিষ্ট দায়িত্বরতরা।

একদিকে বিউবো কর্তৃপক্ষ বলছে, কুমারগাওয়ের ২৫ মেগাওয়াট পাওয়ার স্টেশন বন্ধ হয়েছে পাওয়ার স্টেশনের ট্রান্সফরমার পুড়ে যাওয়ার কারণে। অপরদিকে বন্ধ হওয়া পাওয়ার স্টেশনের প্রধান প্রকৌশলীও অবসরে চলে গেছেন।

তবে তার দায়িত্বে থাকা মিজানুর রহমান জানান, পাওয়ার স্টেশনের ট্রান্সফরমার পুড়ে যায়নি তবে সমস্যা হয়েছে। এটা ঠিক করতে কতদিন লাগবে তিনি জানেন না। এ ব্যাপারে সহকারী প্রধান প্রকৌশলী বিদ্যুৎ আচার্যের সঙ্গে কথা বলতে বলেন তিনি।

বিদ্যুৎ আচার্যের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, কুমারগাওয়ের ২৫ মেগাওয়াট পাওয়ার স্টেশন রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বন্ধ রাখা হয়েছে। পাওয়ার স্টেশনে ওইরকম কোনো সমস্যা নেই।

কবে এই পাওয়ার স্টেশন চালু হবে- এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এটাতো অন্য ডিপার্টমেন্টের, একটু জেনে জানাতে হবে। আজ (শুক্রবার) জানা যাবে না। কালকে জানা যাবে।’

বিউবো সূত্রে জানা যায়, সিলেট মহানগরীতে পাঁচটি ডিভিশনে ১৩টি সাবস্টেশন আছে। তাপমাত্রা বেশি থাকার কারণে বর্তমানে সমস্যা বেশি হচ্ছে। ফিউজ ছিঁড়ে যাওয়া, তার ছিঁড়ে পড়ে যাওয়া বৃদ্ধি পেয়েছে। তার উপর কুমারগাওয়ের ২৫ মেগাওয়াট পাওয়ার স্টেশন বন্ধ। এই পাওয়ার স্টেশনের ট্রান্সফরমার পুড়ে গেছে প্রায় ১০দিন। এর পর থেকেই সিলেটে লোডশেডিং বেড়ে গেছে এবং ভোল্টেজও কম হচ্ছে। পাশাপাশি চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে না সিলেটে।

বিউবো সিলেট বিতরণ বিভাগ-২-এর নির্বাহী প্রকৌশলী শামস-ই আরেফিন বলেন, ‘পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ না পাওয়ায় আমাদের কিছু এলাকায় লোডশেডিং করতে হয়। তার উপর আবার ঢাকা থেকে হঠাৎ বন্ধ করে দেওয়া হয় বিদ্যুৎ। পুরো সিস্টেমে ফিকুয়েন্সি ডাউন হয়ে গেলে ঢাকা থেকে বিদ্যুৎ বন্ধ করে দেয়। ইদানীং প্রায় প্রতিদিনই ঢাকা থেকে বিদ্যুৎ বন্ধ করে দেওয়া হয়। তাই মানুষজন বেশি ভোগান্তিতে পড়ছেন। অনেক গ্রাহক কল করে অকথ্য ভাষায় গালাগালও করেন। কিন্তু এই লোডশেডিংয়ে আমাদের কোনো হাত নেই। তারপরও গ্রাহকরা আমাদের উপরই ক্ষোভ ঝাড়েন।’

সিলেট বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলী আব্দুল কাদির বলেন, ‘সিলেটের বিদ্যুৎ সরবরাহ হয় কুমারগাও গ্রিড উপকেন্দ্র থেকে। এই কুমারগাওয়ের ২৫ মেগাওয়াট পাওয়ার স্টেশন বন্ধ। এই পাওয়ার স্টেশনের ট্রান্সফরমার পুড়ে গেছে প্রায় ১০দিন। এটা বন্ধ থাকার কারণে ভোল্টেজও কম হচ্ছে। এবং সিলেটের লোডশেডিংও বেড়ে গেছে। আমরা এখন গ্রিড থেকে পাওয়ার আনছি। আমাদের নিজস্ব জেনারেশন সিলেটে আর নেই। এটা চালু হলে সিলেটের লোডশেডিং কমবে। লো ভোল্টেজের সমস্যাও সমাধান হবে। ট্রান্সফরমার পুড়ে গেছে তাই বলা যাচ্ছে না কতদিনের ভেতর ঠিক হবে। কারণ এটার যন্ত্রপাতি বাইরে থেকে আনা হয়। তাছাড়া সিলেট চাহিদার তুলনায় কম বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে ন্যাশনাল লোড ডেসপ্যাচ সেন্টারের (এনএলডিসি)। বৃহস্পতিবারেও প্রায় ৩৩ শতাংশ লোডশেডিং ছিল সিলেটে। এই লোডশেডিং কমাতে হলে আমাদের পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ দিতে হবে এবং কুমারগাওয়ের ২৫ মেগাওয়াট পাওয়ার স্টেশন চাল করতে হবে। কিন্তু ওই পাওয়ার স্টেশন আমাদের আওতাধীন না। তাই সেটা কবে নাগাদ চালু হবে বলতে পারছি না।’