, সোমবার, ১১ আগস্ট ২০২৫, ২৭ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
ওসমানীনগরের এস ও এস চিলড্রেন্স ভিলেজে কম্পিউটার ইন্সট্রাক্টর পদে জরুরি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি মৌলভীবাজারে বিএনপির ব্যানারের নিচে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেওয়ায় যুবক গ্রেপ্তার সিলেটে ফের বেদখলে ফুটপাত বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন নির্বাহী পরিচালক আমিনুল ইসলাম সিলেটে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে নারী-শিশুসহ দগ্ধ ৫ সিলেটে নিখোঁজের ২৩ ঘন্টা পর বিজিবি সদস্যের মরদেহ উদ্ধার সিলেটে নৌপথে চাঁদাবাজি : র‍্যাবের হাতে গ্রেফতার ৭ সিলেটে যুবদল কর্মী খুন, অভিযোগের তীর ছাত্রদল নেতার বিরুদ্ধে সিলেটে পক্ষকালব্যাপী বৃক্ষরোপণ অভিযান ও বৃক্ষমেলা শুরু ইলিয়াস আলী কে ফিরে পাওয়ার দাবীতে বিশ্বনাথে বিক্ষোভ মিছিল, বিভিন্ন স্লোগানে মুখরিত পৌরশহর
বিজ্ঞাপন :
সকল জেলায় সাংবাদিক নিয়োগ চলছে
ভেস্তে গেছে কোটি টাকা ব্যয়ের হকার পুর্নবাসন উদ্যোগ

সিলেটে ফের বেদখলে ফুটপাত

সিলেট নগরীর ফুটপাত ও সড়কজুড়ে রমরমা হকার ব্যবসা, যানজটে অতিষ্ঠ নগরবাসী। চার বছর না ঘুরতেই ভেস্তে গেছে কোটি টাকা ব্যয়ে নেওয়া হকার পুনর্বাসনের উদ্যোগ। শহরের প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে ফের বেদখলে ফুটপাত ও রাস্তার একাংশ। নজরদারির অভাবে দিনে দিনে জটিল আকার নিচ্ছে এ সংকট।

রোববার (১০ আগস্ট) নগরীর লালদীঘির পার থেকে নগর ভবন ও ডাকঘরের সামনের অংশে গিয়ে দেখা যায়, ফুটপাত ছাপিয়ে পুরো বন্দরবাজার-জিন্দাবাজার সড়কের বড় অংশ দখল করে বসে আছেন হকাররা। ফল, সবজি, মাছ, কাপড়, বাসনপত্রসহ নানা পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেছেন তারা। এতে করে রাস্তা সংকুচিত হয়ে সৃষ্টি হচ্ছে তীব্র যানজট। ভোগান্তিতে পড়ছেন স্কুলগামী শিক্ষার্থী, অফিসগামী মানুষসহ সাধারণ পথচারীরা।

অভিযোগ উঠেছে, একটি প্রভাবশালী মহল হকারদের রাস্তা দখলের অনুমতি দিয়ে চাঁদাবাজি চালাচ্ছে। ফলে সিসিকের (সিলেট সিটি করপোরেশন) ও পুলিশের সামগ্রিক তদারকি সত্ত্বেও কার্যকর পদক্ষেপের অভাব প্রকট।

২০২০ সালের শেষ দিকে সিলেট সিটি করপোরেশন ও সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের যৌথ উদ্যোগে প্রায় কোটি টাকা ব্যয়ে নগর ভবনের পেছনে লালদিঘিরপাড় মাঠে হকার পুনর্বাসন প্রকল্প শুরু হয়। সাড়ে চার একর জমিতে মাটি ভরাট, ইটের সলিং, শৌচাগার, বৈদ্যুতিক সংযোগসহ নানা অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়। প্রাথমিকভাবে ১৭০ জন হকারকে লটারির মাধ্যমে সেখানে পুনর্বাসন করা হয়।

প্রত্যেক হকারকে ৭ ফুট বাই ৩ ফুট জায়গা বরাদ্দ দেওয়া হয়, নির্মাণ করা হয় বাঁশ-টিনের অস্থায়ী দোকান। গ্রাহকবান্ধব পরিবেশ তৈরি করতে মাছ, সবজি, তৈজসপত্র, বিবিধ পণ্যের জন্য পৃথক লেনও নির্ধারণ করা হয়। নগরের প্রতিটি ফুটপাতে ‘মানুষের চলাচলের জন্য, হকারদের বসা নিষেধ’ লেখা সাইনবোর্ডও টাঙানো হয়।

শুরুতে কিছুটা সুফল মিললেও, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আগের অবস্থায় ফিরে যায় নগর। লালদিঘির মাঠ এখন প্রায় ফাঁকা। দোকান নেই বললেই চলে। নগরের ফুটপাতগুলো ফের বেদখল।

২০২৩ সালের সিটি করপোরেশন নির্বাচন ও রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর থমকে যায় স্মার্ট সিটি গঠন ও হকার পুনর্বাসনের ধারাবাহিকতা। নজরদারির অভাবে হকাররা আবারও দখলে নেয় নগরের প্রধান সড়ক ও ফুটপাত।

লালদিঘির মাঠে গিয়ে দেখা যায়, বেশিরভাগ দোকানই ফাঁকা। কোনো কোনো দোকান স্টক রাখার কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে, তবে বিক্রি হচ্ছে রাস্তায় বসে। হকার সেলিম মিয়া বলেন, “ভেতরে বসলে সমস্যা, কাস্টমার আসে না। তাই মাঠে মাল রেখে রাস্তায় যাই, ওখানে বিক্রি ভালো হয়।”

নগর ভবনের সামনে বসা হকার আবুল কালাম বলেন, ‘মাঠটা অনেক ভেতরে, কাস্টমার যেতে চান না। ৫ আগস্টের পর থেকেই সবাই ছেড়ে চলে আসছেন। আমিও তাই চলে এসেছি।’

সিলেট মহানগর হকার ঐক্য কল্যাণ পরিষদের সদস্য সচিব মো. শাহজাহান আহমেদ বলেন, ‘দাবি-দাওয়া পূরণ না হওয়ায় হকাররা মাঠে ফিরছে না। সমস্যা দ্রুত সমাধান করলে সবাই ফিরে যাবে।’

সিসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রেজাই রাফিন সরকার বলেন, ‘পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকের মাধ্যমে হকারদের নির্ধারিত স্থানে ফিরিয়ে নেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।’

সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘মানসিকতার পরিবর্তনের পাশাপাশি ক্রেতাদেরও মাঠে যাওয়ার অনুপ্রেরণা দিতে হবে। এ দায়িত্ব সিটি করপোরেশনের। বাস্তবায়ন হলে পুলিশ সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে।’

জনপ্রিয়

ওসমানীনগরের এস ও এস চিলড্রেন্স ভিলেজে কম্পিউটার ইন্সট্রাক্টর পদে জরুরি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি

ভেস্তে গেছে কোটি টাকা ব্যয়ের হকার পুর্নবাসন উদ্যোগ

সিলেটে ফের বেদখলে ফুটপাত

প্রকাশের সময় : ১২ ঘন্টা আগে

সিলেট নগরীর ফুটপাত ও সড়কজুড়ে রমরমা হকার ব্যবসা, যানজটে অতিষ্ঠ নগরবাসী। চার বছর না ঘুরতেই ভেস্তে গেছে কোটি টাকা ব্যয়ে নেওয়া হকার পুনর্বাসনের উদ্যোগ। শহরের প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে ফের বেদখলে ফুটপাত ও রাস্তার একাংশ। নজরদারির অভাবে দিনে দিনে জটিল আকার নিচ্ছে এ সংকট।

রোববার (১০ আগস্ট) নগরীর লালদীঘির পার থেকে নগর ভবন ও ডাকঘরের সামনের অংশে গিয়ে দেখা যায়, ফুটপাত ছাপিয়ে পুরো বন্দরবাজার-জিন্দাবাজার সড়কের বড় অংশ দখল করে বসে আছেন হকাররা। ফল, সবজি, মাছ, কাপড়, বাসনপত্রসহ নানা পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেছেন তারা। এতে করে রাস্তা সংকুচিত হয়ে সৃষ্টি হচ্ছে তীব্র যানজট। ভোগান্তিতে পড়ছেন স্কুলগামী শিক্ষার্থী, অফিসগামী মানুষসহ সাধারণ পথচারীরা।

অভিযোগ উঠেছে, একটি প্রভাবশালী মহল হকারদের রাস্তা দখলের অনুমতি দিয়ে চাঁদাবাজি চালাচ্ছে। ফলে সিসিকের (সিলেট সিটি করপোরেশন) ও পুলিশের সামগ্রিক তদারকি সত্ত্বেও কার্যকর পদক্ষেপের অভাব প্রকট।

২০২০ সালের শেষ দিকে সিলেট সিটি করপোরেশন ও সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের যৌথ উদ্যোগে প্রায় কোটি টাকা ব্যয়ে নগর ভবনের পেছনে লালদিঘিরপাড় মাঠে হকার পুনর্বাসন প্রকল্প শুরু হয়। সাড়ে চার একর জমিতে মাটি ভরাট, ইটের সলিং, শৌচাগার, বৈদ্যুতিক সংযোগসহ নানা অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়। প্রাথমিকভাবে ১৭০ জন হকারকে লটারির মাধ্যমে সেখানে পুনর্বাসন করা হয়।

প্রত্যেক হকারকে ৭ ফুট বাই ৩ ফুট জায়গা বরাদ্দ দেওয়া হয়, নির্মাণ করা হয় বাঁশ-টিনের অস্থায়ী দোকান। গ্রাহকবান্ধব পরিবেশ তৈরি করতে মাছ, সবজি, তৈজসপত্র, বিবিধ পণ্যের জন্য পৃথক লেনও নির্ধারণ করা হয়। নগরের প্রতিটি ফুটপাতে ‘মানুষের চলাচলের জন্য, হকারদের বসা নিষেধ’ লেখা সাইনবোর্ডও টাঙানো হয়।

শুরুতে কিছুটা সুফল মিললেও, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আগের অবস্থায় ফিরে যায় নগর। লালদিঘির মাঠ এখন প্রায় ফাঁকা। দোকান নেই বললেই চলে। নগরের ফুটপাতগুলো ফের বেদখল।

২০২৩ সালের সিটি করপোরেশন নির্বাচন ও রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর থমকে যায় স্মার্ট সিটি গঠন ও হকার পুনর্বাসনের ধারাবাহিকতা। নজরদারির অভাবে হকাররা আবারও দখলে নেয় নগরের প্রধান সড়ক ও ফুটপাত।

লালদিঘির মাঠে গিয়ে দেখা যায়, বেশিরভাগ দোকানই ফাঁকা। কোনো কোনো দোকান স্টক রাখার কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে, তবে বিক্রি হচ্ছে রাস্তায় বসে। হকার সেলিম মিয়া বলেন, “ভেতরে বসলে সমস্যা, কাস্টমার আসে না। তাই মাঠে মাল রেখে রাস্তায় যাই, ওখানে বিক্রি ভালো হয়।”

নগর ভবনের সামনে বসা হকার আবুল কালাম বলেন, ‘মাঠটা অনেক ভেতরে, কাস্টমার যেতে চান না। ৫ আগস্টের পর থেকেই সবাই ছেড়ে চলে আসছেন। আমিও তাই চলে এসেছি।’

সিলেট মহানগর হকার ঐক্য কল্যাণ পরিষদের সদস্য সচিব মো. শাহজাহান আহমেদ বলেন, ‘দাবি-দাওয়া পূরণ না হওয়ায় হকাররা মাঠে ফিরছে না। সমস্যা দ্রুত সমাধান করলে সবাই ফিরে যাবে।’

সিসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রেজাই রাফিন সরকার বলেন, ‘পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকের মাধ্যমে হকারদের নির্ধারিত স্থানে ফিরিয়ে নেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।’

সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘মানসিকতার পরিবর্তনের পাশাপাশি ক্রেতাদেরও মাঠে যাওয়ার অনুপ্রেরণা দিতে হবে। এ দায়িত্ব সিটি করপোরেশনের। বাস্তবায়ন হলে পুলিশ সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে।’