, বৃহস্পতিবার, ০৭ আগস্ট ২০২৫, ২৩ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
সিলেটে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলা, আহত ১৪ বিশ্বনাথে নাগরিক সমাবেশ শুক্রবার, প্রধান অতিথি হুমায়ুন কবির নিয়োগে অনিয়ম সিকৃবির কর্মচারী অর্পনা কুমারী চাকরিচ্যুত সিলেটে অন্তঃস্বত্ত্বা প্রেমিকা, প্রেমিককে ধরতে পুলিশের শরণাপন্ন জুলাই গণভ্যূত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে দক্ষিণ সুরমা উপজেলা জামায়াতের গণমিছিল সিলেটে চোর সন্দেহে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে বিক্ষোভ, আটক ৩ হাজার হাজার নেতাকর্মীদের উপস্থিতিতে বিশ্বনাথে বিএনপির বিজয় মিছিল ৩৬ জুলাইয়ে সিলেটে শহীদদের স্মরণে ৩৬টি বৃক্ষরোপণ ভারী বৃষ্টিতে বাড়ছে নদীর পানি, সিলেট-সুনামগঞ্জে বন্যার শঙ্কা বিমানবন্দরে সংবর্ধিত ফ্যাসিবাদবিরোধী সাংবাদিক এমদাদ চৌধুরী দীপু
বিজ্ঞাপন :
সকল জেলায় সাংবাদিক নিয়োগ চলছে

সিলেটের ব্যস্ততম সড়ক চন্ডিপুল পয়েন্টে অবৈধ স্ট্যান্ড, জনভোগান্তি

সিলেটের দক্ষিণ সুরমার ব্যস্ততম চন্ডিপুল এলাকায় ত্রিমুখী রাস্তার দুপাশ দখল করে গড়ে তোলা হয়েছে সিএনজিচালিত অটোরিকশার একাধিক অবৈধ স্ট্যান্ড। সড়কের দুই পাশের এসব স্ট্যান্ড থেকে বিভিন্ন উপজেলার উদ্দেশে ছেড়ে যায় অটোরিকশা। সড়কের ওপর দাঁড়িয়ে যাত্রী ওঠানামা করাসহ পার্কিং করে রাখা হয় যত্রতত্র। ফলে ওই এলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে শহরমুখী মানুষের ভোগান্তি বেড়েছে।

জানা যায়, গুরুত্বপূর্ণ ওই সড়কের দুপাশ দখল করে একাধিক অবৈধ সিএনজিচালিত অটোরিকশার স্ট্যান্ড বসিয়ে এক শ্রেণির অসাধু চক্র চাঁদা আদায় করছে। ফলে ব্যস্ত সড়কটি সংকীর্ণ হয়ে যানজটের তৈরি হচ্ছে। ভোগান্তিতে পড়ছেন যাত্রী, চালক ও পথচারীরা।

৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর ওই এলাকার কৃষকদলের এক নেতার শেল্টারে শ্রমিকদলের কয়েকজন প্রভাবশালী নেতা চলাচলের রাস্তা দখল করে নিজেদের খেয়ালখুশিমতো বসিয়েছেন সিএনজিচালিত অটোরিকশার স্ট্যান্ড। প্রতিটি স্ট্যান্ডে পার্কিং করা যানবাহনগুলো থেকে নেওয়া হচ্ছে দৈনিক ভিত্তিতে চাঁদা।
সরেজমিন দেখা যায়, সিলেট শহরের প্রবেশ পথ চন্ডিপুলে ত্রিমুখী রাস্তার দুপাশে গড়ে উঠেছে সিএনজিচালিত অটোরিকশার একাধিক অবৈধ স্ট্যান্ড। কুশিয়ারা কনভেনশন হলের সম্মুখের সড়ক থেকে দক্ষিণ সুরমা ডিগ্রী কলেজ পর্যন্ত রাস্তার দুপাশে সিএনজিচালিত অটোরিকশার অবৈধ স্ট্যান্ড গড়ে উঠেছে। সড়কের ঠিক বিপরীতে সিএনজিপাম্পের সামনের সড়ক থেকে নর্থইস্ট মেডিকেল কলেজ পর্যন্ত চলাচলের রাস্তা দখল করে নিজেদের খেয়ালখুশিমতো যাত্রী উঠানামা করছেন চালকেরা। এতে ব্যস্ততম ওই সড়কে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। ভোগান্তি পোহাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। এ ছাড়া দক্ষিণ সুরমা ডিগ্রী কলেজের সামনে গাড়ি দাঁড় করিয়ে যাত্রী ওঠানামা করানো হয়। অটোরিকশা ও অন্যান্য গাড়ির কারণে রাস্তার দুই পাশে মনে হয় এখানে গাড়ির হাট বসেছে। এসব স্ট্যান্ডে প্রতিটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা থেকে ২০ থেকে ৪০ টাকা করে চাঁদা আদায় করা হয়।

জানা গেছে, শহর থেকে বিভিন্ন আঞ্চলিক সড়কে ৬-৭ হাজারের অধিক সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলাচল করে। এসব অটোরিকশা থেকে প্রতিদিন কয়েক লাখ টাকা চাঁদা আদায় করা হয়। কোনো চালক চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে তার সিরিয়াল বাতিল করা হয়। কেউ প্রতিবাদ করলে তাকে মারধর করাসহ ট্রাফিক পুলিশ দিয়ে মামলায় জড়িয়ে হয়রানি করা হয়। চাঁদা আদায়কারী কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করলে তারা কেউ কথা বলতে রাজি হননি।

সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালকেরা জানান, প্রতিবার যাত্রী নিয়ে যাওয়া-আসার সময় শ্রমিক সংগঠনের নির্দেশে তাদের নিয়োজিত লোকজন ২০ টাকা শ্রমিক সংগঠনের নামে চাঁদা নিয়ে যায়।

কাসেম নামে এক চালক বলেন, ‘প্রতিটি স্টান্ডে দুজন করে দায়িত্বে থেকে চাঁদা আদায়সহ গাড়ির সিরিয়াল ঠিক করে। চাঁদা না দিলে হয়রানি করা হয়।’

এ বিষয়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশা শ্রমিক ইউনিয়নের সিলেট জেলা শাখার সভাপতি মো. জাকারিয়া আহমেদ বলেন, ‘সিলেটে ৪০-৫০ বছর ধরে অটোরিকশার ২৭টি স্ট্যান্ড রয়েছে। এগুলো অনুমোদিত না হলেও অনেকটা অনুমোদিতই বলা যায়। এখানে আগে স্ট্যান্ডের আলাদা সাইনবোর্ড ছিল, সেটা দুই বছর আগে ট্রাফিক বিভাগ তুলে নিয়েছে স্থায়ীভাবে করে দেওয়ার জন্য। সিটি করপোরেশন ও ট্রাফিক বিভাগে বারবার আবেদন করেও কোনো সুরাহা মিলছে না। স্থায়ীভাবে কোনো ব্যবস্থা করে দিলে যত্রতত্র এ রকম স্ট্যান্ড থাকবে না।’

সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মতিউর রহমান খান বলেন, ‘অটোরিকশার স্ট্যান্ড করার বিষয়ে সিটি করপোরেশন থেকে এখনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। আমরা শিগগিরই অবৈধ স্ট্যান্ড উচ্ছেদে অভিযানে নামব।’

সিলেট মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (ডিসি-ট্রাফিক) মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘সিলেট নগরে কোনো বৈধ স্ট্যান্ড নেই। তবে অনেক আগে থেকেই অবৈধভাবে কিছু স্ট্যান্ড স্থাপন করা হয়েছে। যত্রতত্র অবৈধ স্ট্যান্ড গড়ে ওঠায় শহরে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। এসব স্ট্যান্ড উচ্ছেদে সিটি করপোরেশন উদ্যোগ নিলে আমরা সহযোগিতা করব।’

জনপ্রিয়

সিলেটে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলা, আহত ১৪

সিলেটের ব্যস্ততম সড়ক চন্ডিপুল পয়েন্টে অবৈধ স্ট্যান্ড, জনভোগান্তি

প্রকাশের সময় : ০৪:৫২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫

সিলেটের দক্ষিণ সুরমার ব্যস্ততম চন্ডিপুল এলাকায় ত্রিমুখী রাস্তার দুপাশ দখল করে গড়ে তোলা হয়েছে সিএনজিচালিত অটোরিকশার একাধিক অবৈধ স্ট্যান্ড। সড়কের দুই পাশের এসব স্ট্যান্ড থেকে বিভিন্ন উপজেলার উদ্দেশে ছেড়ে যায় অটোরিকশা। সড়কের ওপর দাঁড়িয়ে যাত্রী ওঠানামা করাসহ পার্কিং করে রাখা হয় যত্রতত্র। ফলে ওই এলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে শহরমুখী মানুষের ভোগান্তি বেড়েছে।

জানা যায়, গুরুত্বপূর্ণ ওই সড়কের দুপাশ দখল করে একাধিক অবৈধ সিএনজিচালিত অটোরিকশার স্ট্যান্ড বসিয়ে এক শ্রেণির অসাধু চক্র চাঁদা আদায় করছে। ফলে ব্যস্ত সড়কটি সংকীর্ণ হয়ে যানজটের তৈরি হচ্ছে। ভোগান্তিতে পড়ছেন যাত্রী, চালক ও পথচারীরা।

৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর ওই এলাকার কৃষকদলের এক নেতার শেল্টারে শ্রমিকদলের কয়েকজন প্রভাবশালী নেতা চলাচলের রাস্তা দখল করে নিজেদের খেয়ালখুশিমতো বসিয়েছেন সিএনজিচালিত অটোরিকশার স্ট্যান্ড। প্রতিটি স্ট্যান্ডে পার্কিং করা যানবাহনগুলো থেকে নেওয়া হচ্ছে দৈনিক ভিত্তিতে চাঁদা।
সরেজমিন দেখা যায়, সিলেট শহরের প্রবেশ পথ চন্ডিপুলে ত্রিমুখী রাস্তার দুপাশে গড়ে উঠেছে সিএনজিচালিত অটোরিকশার একাধিক অবৈধ স্ট্যান্ড। কুশিয়ারা কনভেনশন হলের সম্মুখের সড়ক থেকে দক্ষিণ সুরমা ডিগ্রী কলেজ পর্যন্ত রাস্তার দুপাশে সিএনজিচালিত অটোরিকশার অবৈধ স্ট্যান্ড গড়ে উঠেছে। সড়কের ঠিক বিপরীতে সিএনজিপাম্পের সামনের সড়ক থেকে নর্থইস্ট মেডিকেল কলেজ পর্যন্ত চলাচলের রাস্তা দখল করে নিজেদের খেয়ালখুশিমতো যাত্রী উঠানামা করছেন চালকেরা। এতে ব্যস্ততম ওই সড়কে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। ভোগান্তি পোহাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। এ ছাড়া দক্ষিণ সুরমা ডিগ্রী কলেজের সামনে গাড়ি দাঁড় করিয়ে যাত্রী ওঠানামা করানো হয়। অটোরিকশা ও অন্যান্য গাড়ির কারণে রাস্তার দুই পাশে মনে হয় এখানে গাড়ির হাট বসেছে। এসব স্ট্যান্ডে প্রতিটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা থেকে ২০ থেকে ৪০ টাকা করে চাঁদা আদায় করা হয়।

জানা গেছে, শহর থেকে বিভিন্ন আঞ্চলিক সড়কে ৬-৭ হাজারের অধিক সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলাচল করে। এসব অটোরিকশা থেকে প্রতিদিন কয়েক লাখ টাকা চাঁদা আদায় করা হয়। কোনো চালক চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে তার সিরিয়াল বাতিল করা হয়। কেউ প্রতিবাদ করলে তাকে মারধর করাসহ ট্রাফিক পুলিশ দিয়ে মামলায় জড়িয়ে হয়রানি করা হয়। চাঁদা আদায়কারী কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করলে তারা কেউ কথা বলতে রাজি হননি।

সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালকেরা জানান, প্রতিবার যাত্রী নিয়ে যাওয়া-আসার সময় শ্রমিক সংগঠনের নির্দেশে তাদের নিয়োজিত লোকজন ২০ টাকা শ্রমিক সংগঠনের নামে চাঁদা নিয়ে যায়।

কাসেম নামে এক চালক বলেন, ‘প্রতিটি স্টান্ডে দুজন করে দায়িত্বে থেকে চাঁদা আদায়সহ গাড়ির সিরিয়াল ঠিক করে। চাঁদা না দিলে হয়রানি করা হয়।’

এ বিষয়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশা শ্রমিক ইউনিয়নের সিলেট জেলা শাখার সভাপতি মো. জাকারিয়া আহমেদ বলেন, ‘সিলেটে ৪০-৫০ বছর ধরে অটোরিকশার ২৭টি স্ট্যান্ড রয়েছে। এগুলো অনুমোদিত না হলেও অনেকটা অনুমোদিতই বলা যায়। এখানে আগে স্ট্যান্ডের আলাদা সাইনবোর্ড ছিল, সেটা দুই বছর আগে ট্রাফিক বিভাগ তুলে নিয়েছে স্থায়ীভাবে করে দেওয়ার জন্য। সিটি করপোরেশন ও ট্রাফিক বিভাগে বারবার আবেদন করেও কোনো সুরাহা মিলছে না। স্থায়ীভাবে কোনো ব্যবস্থা করে দিলে যত্রতত্র এ রকম স্ট্যান্ড থাকবে না।’

সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মতিউর রহমান খান বলেন, ‘অটোরিকশার স্ট্যান্ড করার বিষয়ে সিটি করপোরেশন থেকে এখনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। আমরা শিগগিরই অবৈধ স্ট্যান্ড উচ্ছেদে অভিযানে নামব।’

সিলেট মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (ডিসি-ট্রাফিক) মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘সিলেট নগরে কোনো বৈধ স্ট্যান্ড নেই। তবে অনেক আগে থেকেই অবৈধভাবে কিছু স্ট্যান্ড স্থাপন করা হয়েছে। যত্রতত্র অবৈধ স্ট্যান্ড গড়ে ওঠায় শহরে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। এসব স্ট্যান্ড উচ্ছেদে সিটি করপোরেশন উদ্যোগ নিলে আমরা সহযোগিতা করব।’