সিলেট বিভাগের রেলপথ উন্নয়ন ও অবকাঠামোগত সংস্কারসহ আট দফা দাবিতে আগামী ১ নভেম্বর থেকে রেলপথ অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন স্থানীয় আন্দোলনকারীরা। শুক্রবার (১০ অক্টোবর) রাতে কুলাউড়ায় এক জরুরি বৈঠক শেষে এ কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়।
সিলেট রেল স্টেশন বৈঠকে আন্দোলনের সমন্বয়ক সাংবাদিক আজিজুল ইসলাম ও আতিকুর রহমান আখই বলেন, রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে আমরা শুধু আশ্বাসই পেয়েছি, বাস্তব কোনো পদক্ষেপ দেখা যায়নি। তাই এসব আশ্বাস আমরা প্রত্যাখ্যান করছি।
যদি ৩১ অক্টোবরের মধ্যে দাবি পূরণ না হয়, তবে ১ নভেম্বর থেকে সিলেট বিভাগের সব রেলপথে অনির্দিষ্টকালের জন্য অবরোধ শুরু হবে।”
তারা সাধারণ জনগণকেও ১ নভেম্বর থেকে ট্রেন ভ্রমণ থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান।
আট দফা দাবিগুলো হলো:
সিলেট-ঢাকা ও সিলেট-কক্সবাজার রেলপথে দুটি স্পেশাল ট্রেন চালু করা।
আখাউড়া-সিলেট রেলপথ সংস্কার ও ডাবল লাইন করা।
আখাউড়া-সিলেট সেকশনে অন্তত একটি লোকাল ট্রেন চালু করা।
আখাউড়া-সিলেট সেকশনের সব বন্ধ স্টেশন পুনরায় চালু করা।
কুলাউড়া জংশন স্টেশনে বরাদ্দকৃত আসনসংখ্যা বৃদ্ধি করা।
সিলেট-ঢাকাগামী আন্তঃনগর কালনী ও পারাবত ট্রেনের যাত্রাবিরতি প্রত্যাহার করা।
ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় রোধে ত্রুটিমুক্ত ইঞ্জিন ব্যবহার করা।
যাত্রী অনুপাতে প্রতিটি ট্রেনে অতিরিক্ত বগি সংযোজন করা।
শুক্রবার বিকেলে কুলাউড়া জংশন স্টেশনের ভিআইপি ওয়েটিং রুমে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে রেলওয়ের ঢাকা অঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক (ডিআরএম) মো. মহিউদ্দিন আরিফ এর নেতৃত্বে বৈঠক হয়। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন রেলওয়ের ডিসিও ঢাকা মো. মহব্বতজান চৌধুরী, সিলেট স্টেশন ম্যানেজার নুরুল ইসলাম, কুলাউড়ার টিআই (টি) শাহাজান পাঠওয়ারী সাজুসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা।
আন্দোলনকারীদের পক্ষে ছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট নওয়াব আলী আব্বাস খান, উপজেলা বিএনপির সভাপতি জয়নাল আবেদিন বাচ্চু, সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জামান সজল, উপজেলা জামায়াতের নায়েবে আমির মো. জাকির হোসেন, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মওলানা ফজলুল হক খান সাহেদ, এবং আন্দোলনের সমন্বয়ক আজিজুল ইসলাম ও আতিকুর রহমান আখই।
বৈঠকে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ আন্দোলনকারীদের দাবিগুলো বাস্তবায়নের আশ্বাস দিলেও তারা তা প্রত্যাখ্যান করেন। বৈঠক শেষে আন্দোলনকারীরা কুলাউড়া রেলস্টেশনে বিক্ষোভ মিছিলও করেন।
এর আগে ২৭ সেপ্টেম্বর কুলাউড়া রেলস্টেশনে অবস্থান ধর্মঘট চলাকালে আন্দোলনকারীরা একাধিক ট্রেন আটকে দেন। তখন রেলওয়ের ডিআরএম ১৫ দিনের মধ্যে আলোচনা করে সমাধানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তবে নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলেও বাস্তব পদক্ষেপ না নেওয়ায় নতুন করে কর্মসূচি ঘোষণা করা হলো।